নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরে ওএমএসের (খোলাবাজার) চাল বিতরণ আজ বৃহস্পতিবার থেকে এক মাসের জন্য বন্ধ থাকবে বলে ডিলারদের কাছে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে জেলা খাদ্য বিভাগ। গ্রাহকদের কার্ড পদ্ধতি চালুর পর জুলাই মাস থেকে পুনরায় চাল বিক্রি শুরু করবে খাদ্য বিভাগ। তবে এই এক মাস দরিদ্রদের জন্য বাড়তি ব্যয়ের বোঝা চাপবে।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, যশোর পৌর এলাকার ৯টি ওয়ার্ডে ১৪ জন ডিলারের মাধ্যমে সপ্তাহে ৫ দিন (সরকারি ছুটির দিন বাদে) ওএমএসের চার ও আটা বিতরণ করা হয়। প্রতিজন ৩ কেজি করে সপ্তাহে একবার করে চাল-আটা ক্রয়ের সুযোগ পাচ্ছে। একজন ডিলার ৭৫৫ কেজি করে এই চাল-আটা সরকারের পক্ষ থেকে বরাদ্দ পেয়ে থাকেন। তারা ১৭১ জন স্বল্প আয়ের মানুষের মধ্যে বিতরণ করেন। চাল ৩০ টাকা ও আটা ২৪ টাকা কেজি দরে ক্রেতারা কেনার সুযোগ পান।
ওএমএস’র পণ্য কেনেন বৃদ্ধা রোকেয়া বেগম বলেন, স্বামী মারা গেছেন অনেক আগেই। ছেলের সংসারে থাকি। তার আয় স্বল্প, একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কর্মচারি হিসেবে কর্মরত। যে আয় করে তা দিয়ে সংসার চলে না। একারণে অল্প দামে চাল-আটা কেনার জন্য ওএমএসের লাইনে দাঁড়ায়। কিন্তু শুনছি আজ থেকে এক মাস চাল দিবে না। এতে আমাদের চাপে পড়তে হবে।
পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ওএমএস ডিলার গোলাম মোস্তফা জানান, সপ্তাহে ৫ দিন আমরা চাল-আটা বিতরণ করে থাকি ১৭১ জনের মধ্যে। কিন্তু লাইনে দাঁড়ান প্রায় তিন থেকে সাড়ে তিনশ মানুষ। যাদেরকে দেয়া সম্ভব হয় না, তাদেরকে পরের দিন অগ্রাধিকার দেয়া হয়। মোট কথা যে পরিমাণ আমাদেরকে চাল-আটা বরাদ্দ দেয়া হয় তা অপ্রতুল। প্রতিদিন ওএমএস’র চাল-আটা কিনতে লাইনে মানুষের ভিড় বাড়ছে। ইতিমধ্যে খাদ্য বিভাগ থেকে আমাদেরকে চিঠি দিয়ে আজ বৃহস্পতিবার থেকে চাল একমাসের জন্য বন্ধ রাখা হবে বলে জানিয়েছে। যেকারণে আমরাও আগামী একমাস চাল বিক্রি করবো না। তবে আটা বিক্রি অব্যাহত থাকবে।
বাজারে প্রতি কেজি মোটা চালের দাম ৫০ থেকে ৫২ টাকা এবং আটা ৬০ থেকে ৬৫ টাকা। সেই হিসাবে একজন ক্রেতার ওএমএসের চাল-আটায় সাশ্রয় হয় গড়ে ৩০০ টাকা।
এব্যাপারে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক নিত্যা নন্দ কুন্ডু জানান, আমরা ১৪ জন ডিলারকে প্রতিদিন ৯ টন করে চাল বরাদ্দ দিয়ে থাকি। ওএমএস’র চাল-আটা বিতরণ কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য সরকার গ্রাহকদেরকে পরিচয়পত্র দিবে। আমরা ডিলারদের কাছ থেকে গ্রাহকদের জাতীয় পরিচয়পত্র ও ছবি সংগ্রহ করবো। যারা নিয়মিত চাল-আটা সংগ্রহ করেন তাদেরকে বেছে নেয়া হবে। আজ থেকে শহরে মাইকিং করা হবে। তারপর আশা করছি আগামী জুলাই মাস থেকে ফের চাল বিতরণ শুরু করতে পরব। তবে এই একমাস আটা বিক্রি অব্যাহত থাকবে।