নিজস্ব প্রতিবেদক
সারা দেশের মতো যশোরেও পোস্ট গ্রাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন ও ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা চার দফা দাবিতে কর্মবিরতি পালন করেছেন। রোববার যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় শেষে হাসপাতাল চত্বরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা। ।
কর্মবিরতি পালনরত চিকিৎসকরা বলেন, আমাদের দুই ঈদের বকেয়াসহ সবকিছু শিগগিরই পরিশোধ করতে হবে। যাদের বেতন হঠাৎ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, সেটা চালু করতে হবে পুনরায়। চিকিৎসকদের সুরক্ষা আইন করতে হবে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ বিষয়ে আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, তিনি আমাদের দাবির বিষয়টি নিয়ে মিটিং করবেন এবং আমাদের আজ আপডেট জানাবেন। কিন্তু দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আমাদের অবস্থান থেকে সরবো না। আমাদের ন্যায্য দাবি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে মেনে নিতেই হবে।
তারা বলেন, বর্তমানে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে একজন ইন্টার্ন চিকিৎসকের পক্ষে ১৫ হাজার টাকা বেতনে চলা সম্ভব নয়। তাই ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ভাতা ৩০ হাজার টাকা করতে হবে। পোস্টগ্রাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি চিকিৎসকদের বকেয়া বেতন ছয় মাসে পরিশোধের কথা ছিল, কিন্তু ৯ মাসেও তা দেওয়া হয়নি। অনতিবিলম্বে ভাতা দিতে হবে। ট্রেইনি চিকিৎসকদের বেতন ২৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা করতে হবে।
আন্দোলনরত চিকিৎসকরা বলেন, ইতোমধ্যে বাংলাদেশে যত মেডিকেলে ইন্টার্ন চিকিৎসক রয়েছেন, তারা সবাই আমাদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেছেন। আমাদের এই দাবির স্বপক্ষে মানববন্ধন করেছে প্রতিটি মেডিকেল কলেজ। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আমাদের অবস্থান কর্মসূচি ও কর্মবিরতি চলমান রাখবো। সারা দেশের সব মেডিকেল কলেজে এই কর্মবিরতি চলবে।
তাদের দাবিগুলো হলো, পোস্ট গ্রাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি চিকিৎকদের মাসিক ভাতা ৫০ হাজার এবং ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মাসিক ভাতা ৩০ হাজারে উন্নতকরণ এবং নিয়মিত করা; এফসিপিএস, রেসিডেন্ট, নন রেসিডেন্ট চিকিৎসকদের বকেয়া ভাতা পরিশোধ করা; বিএসএমএমইউর অধীনে ১২টি প্রাইভেট ইনস্টিটিউটের রেসিডেন্ট, নন রেসিডেন্ট চিকিৎসকদের ভাতা পুনরায় চালু এবং চিকিৎসক সুরক্ষা আইন ও চিকিৎসকদের নিরাপদ কর্মস্থল নিশ্চিত করতে হবে।
যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ডা. পার্থ প্রতিম চক্রবর্ত্তী জানান, হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতির কারণে চিকিৎসা সেবায় কোন প্রভাব পড়বে না। তবে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন অতি দ্রুত এটার সমাধান হয়ে যাবে।
ইসিপের সাধারণ সম্পাদক বিশ^জিৎ সরকার জানান, কর্মবিরতি চলাকালীন তাদের পক্ষ থেকে একটি মেডিকেল টিম তৈরি করার চেষ্টা চলছে যেন জরুরি রোগী আসলে তাদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করা যায়। তাদের কর্মবিরতিতে চিকিৎসা সেবা নিতে সাধারণ রোগীদের সাময়িক যে অসুবিধা হচ্ছে সিনিয়র চিকিৎসকেরা চিকিৎসা সেবা দিলে এটার সাময়িক সমাধান হবে বলে তারা জানিয়েছেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইসিপের সভাপতি ডা. সরদার রাব্বি হাসান, পোস্ট গ্রাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের ডা. সিরাজুম মনিরা রহিম, ডা. দেবাশিষ সরকার, ডা. হাফিজা আক্তার, ডা. ইসমত আরা, ডা. মুহিদ প্রমুখ।
