নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরে কাঁচা মরিচের দাম কেজিতে সাড়ে তিন শ’ টাকা পর্যন্ত কমেছে। একদিন আগে ৬০০ টাকা কেজি বিক্রি হলেও সোমবার বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৪০ টাকা। বিক্রেতারা বলছেন, বেনাপোল ও ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের মরিচ বাংলাদেশের বাজারে প্রবেশ করায় মরিচের দাম কমে গেছে।
সরেজমিনে যশোর বড়বাজার, রেল বাজার ও চুয়াডাঙ্গা স্ট্যান্ড কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, সোমবার সকালে প্রতিকেজি কাঁচা মরিচ খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৪০ টাকা কেজি। গতকাল রোববার রাত থেকে যশোরের বাজারে ভারতীয় মরিচ প্রবেশ করাতে মরিচের দাম কমেছে কেজি প্রতি সাড়ে ৩০০ টাকার উপরে। গতকাল রবিবার যশোরে বিক্রি হয়েছে সাড়ে পাঁচ শ’ টাকা থেকে ছয় শ’ টাকা পর্যন্ত। তার আগের দিন শনিবার বিক্রি হয়েছিলো ছয় শ’ থেকে সাত শ’ টাকা পর্যন্ত। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ‘তীব্র তাপাদাহে সারাদেশে মরিচের উৎপাদন কম। চাহিদার তুলনায় মরিচের উৎপাদন কম হওয়াতে দাম হু হু করে বাড়ে। ফরিদপুরের মধুখালি ও পঞ্চগড়ের মরিচ দিয়ে দেশের বাজারের চাহিদা পূরণের টেষ্টা করছিলেন। রেকর্ড মরিচের দাম বৃদ্ধির মধ্যে রোববার রাতে ভারতের মরিচ যশোরের বাজারে প্রবেশ করায় দেশি মরিচের দাম কমে গেছে।
বড় বাজারের মরিচ ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম বলেন, বাজারে এখন প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৪০ টাকা। কেজিতে কমেছে সাড়ে তিন শ’ টাকা। ভারতের মরিচ আসাতে দাম কমেছে। মূলত তাপদাহ আর বর্ষার কারণে মরিচের সরবরাহ কম। এতে দাম বেড়েছিল। এখন দাম কমতে শুরু করেছে; প্রতিনিয়ত কমবে মরিচের দাম।
বিষ্ণু নামে আরেক খুচরা ব্যবসায়ী বলেন, লোকসান করে ঝাল বিক্রি করছি। গতকাল রবিবার পাইকারি তিন শ’ টাকা প্রতি কেজি ঝাল কিনেছি। আজ সেই মরিচ খুচরা ২২০ টাকা থেকে ২৪০ টাকাতে বিক্রি করতে হচ্ছে।কেজি প্রতি আমার ৮০ টাকা লস হচ্ছে।
বড় বাজারের নিতাই গৌরি ভান্ডারের বাগান চন্দ্র সাহা বলেন, মরিচের দাম আরও কমে আসতে পারে। আজ বাজারে ভারতীয় মরিচ সরবারহ বেড়েছে। পাইকারি ২০০ টাকা করে মরিচ বিক্রি করেছি। অন্যান্য খরচ মিলে খুচরা বাজারে দাম পড়েছে ২২০ টাকা। মরিচের আমদানি শুল্ক কমালে কম দামে বাজারে সরবরাহ করা যাবে।
কাঁচা মরিচ কিনতে আসা গৃহবধূ তহমিনা খাতুন বলেন, কাঁচা মরিচ এখন গলার কাঁটা হয়ে গিয়েছে। এই দামে কাঁচা মরিচ কিনতে গেলে সংসারের বাকি জিনিস কিনব কীভাবে? দাম কমেছে, তবে আরো কমানো উচিত। পেঁয়াজ কিনতে গেলে মরিচ কেনা যায় না, মরিচ কিনতে গেলে পেঁয়াজ কেনা যায় না।
প্রসঙ্গত, যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ৫৬ টাকা কেজি দরে ভারত থেকে ৪০ মেট্রিক টন কাঁচা মরিচ আমদানি করা হয়েছে। রোববার দুইটি চালানের মাধ্যমে চারটি ট্রাকে করে এই কাঁচা মরিচ আমদানি হয়। শুল্কায়ন শেষে রাতে যশোরসহ খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জেলায় প্রবেশ করে এই মরিচ। আমদানি আরও বাড়তে পারে বলে স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।