নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরে পিকনিকে খাওয়া নিয়ে বিরোধের জেরে দেড় বছর ধরে পরিকল্পনার পর কুপিয়ে খুন করা হয় রাজিম খানকে। সাড়ে ছয় মাস পরে এই হত্যাকাণ্ডে পাঁচজনের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি তদন্তে উঠে এসেছে। অভিযুক্ত পাঁচজনের মধ্যে দুইজন কিশোর রয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) একেএম শফিকুল আলম চৌধুরী আদালতে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন।
অভিযুক্তরা হলো, যশোর শহরের পূর্ব বারান্দী মোল্যাপাড়া রইজ শেখের ছেলে আব্দুল কাদের রায়হান (২১), বারান্দী মোল্যাপাড়া তালতলার রুস্তুম আলী গাজীর ছেলে শিমুল গাজী (২৬), বারান্দীপাড়া বাঁশতলার ইয়াছিন আলী বিশ্বাসের ছেলে আজহার আলী পায়েল (১৯)।
দুই কিশোর আসামি হলো বারান্দী মোল্যাপাড়ার খায়রুল পারভেজ বিপ্লবের ছেলে ইয়ামি পারভেজ (১৫) ও শহরতলীর ঝুমঝুমপুরস্থ চান্দের মোড়ের আবু বক্কার সিদ্দিকীর ছেলে রায়েব সিদ্দিক (১৭)।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, যশোর শহরতলীর ঝুমঝুমপুরস্থ বাদল খানের ছেলে রাজিম খান ওরফে সাজেদ (১৭) এলাকার টেকনিক্যাল স্কুলে দশম শ্রেণিতে লেখাপড়ার পাশাপাশি যশোর শহরের বড় বাজার চুড়িপট্টির মেসার্স ভাই ভাই হোসিয়ারি নামক একটি দোকানে কর্মচারি হিসেবে কাজ করতো। এই মামলার আসামিরা এবং রাজিম বন্ধুত্ব সম্পর্কে একই সাথে চলাফেরা করতো। বছর দেড়েক আগে তারা কয়েকজনে বারান্দীপাড়া বুড়ি ভৈরব নদীর পাড়ে পিকনিক স্পটে খাওয়া-দাওয়া করে। খাওয়া নিয়ে সেখানে রাজিমের সাথে ওই আসামিদের বিরোধ বাধে এবং তাকে খুন করার হুমকি দেয়া হয়। এরপর থেকে রাজিমকে খুনের জন্য দেনদরবার ও সুযোগ খুঁজতে থাকে। ২০২৩ সালের ৯ নভেম্বর রাত ৮টার দিকে চুড়িপট্টির অমিতের দোকানে থাকা রাজিমকে ডেকে নেয় আসামিরা। দেড়শ’ গজ দুরে জাহিদের দোকানের সামনে নিয়ে রাজিমকে এলোপাতাড়ি ভাবে ছুরিকাঘাত করে রাস্তায় ফেলে তারা পালিয়ে যায়। আশপাশের লোকজন উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাজিমকে মৃত ঘোষণা করে।
এই ঘটনায় রাজিমের পিতার দায়ের করা মামলায় আসামি পায়েল, শিমুল গাজী, রায়হান ও রায়েব সিদ্দিককে আটক করে পুলিশ। কিন্তু বারান্দীপাড়া এলাকার শক্তির শ্যালক এই মামলার আরেক আসামি আজহার আলী পায়েল ঘটনার পর থেকেই পালিয়ে চলে যায়। পরবর্তীতে মামলাটি তদন্তকালে পর্যায়ক্রমে সব আসামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আসামিদের দেয়া তথ্যে এবং সরেজমিন ও গোপনে তদন্ত উঠে আসে যে ঘটনার দেড় বছর আগে পিকনিকে খাওয়া-দাওয়া নিয়ে বিরোধে রাজিমকে হত্যার হুমকি দিয়েছিল ওই আসামিরা। আর তারই জের ধরে পূর্ব পরিকল্পনা করে রাজিমকে হত্যা করে ওই পাঁচ আসামি। কিন্তু এরমধ্যে দুইজন অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র এবং অপর তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) একেএম শফিুকুল আলম চৌধুরী।