নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরে গৃহবধূ পপি রানী কুন্ডু হত্যা মামলার চার্জশিট আদালতে দাখিল করেছে পিবিআই। স্বামী সুবল কুন্ডুকে অভিযুক্ত করে আদালতে এই চার্জশিট দাখিল করেন পিবিআই’র এসআই স্নেহাশিস দাশ। অভিযুক্ত সুবল কুন্ডু সদর উপজেলার বসুন্দিয়া ইউনিয়নের গাইদগাছি কুন্ডুপাড়ার বিমল কুন্ডুর ছেলে।
পিবিআই সূত্র জানায়, সুবল কুন্ডুর সাথে ২১ বছর আগে মাগুরার শালিখা উপজেলার শরশুনা গ্রামের সুশান্ত কুন্ডুর মেয়ে পপি রানী কুন্ডুর বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে তাদের ২টি মেয়ে ও ১টি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। ২০২০ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর রাতে মেয়ের দেবরের স্ত্রী রতœা কুন্ডু মোবাইল ফোন করে সুশান্ত কুন্ডুকে জানান যে, তার মেয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েছেন। তারা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছেন। এ খবর পেয়ে পরদিন সকাল ৯টার দিকে সুশান্ত কুন্ডু যশোর ২৫ শয্যার জেনারেল হাসপাতাল মর্গে গিয়ে তার মেয়ের মৃতদেহ দেখতে পান। পরে তিনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জানতে পারেন, ১৯ সেপ্টেম্বর রাত ১১টার দিকে পপি রানী কুন্ডুকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিলো। এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের হয়। পরবর্তীতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দেওয়া ময়নাতদন্তের রিপোর্টে সুশান্ত কুন্ডু জানতে পারেন, বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নয়। তার মেয়েকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। এই রিপোর্ট পাওয়ার পর তিনি কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। প্রথমে মামলা তদন্ত করেন থানার ইনসপেক্টর (অপারেশনস) সুমন ভক্ত। পরে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই। পিবিআই থেকে তাদের এসআই ¯েœহাশিস দাশকে মামলা তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তদন্তে উঠে আসে, পপি রানী কুন্ডুকে তার স্বামী সুবল কুন্ডু হত্যা করেছেন। স্বামী সুবল কুন্ডু দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ থাকায় স্ত্রীর সাথে তার মাঝে মধ্যে গোলাযোগ হতো। ঘটনার দিন রাতে রান্নাঘরে কাজ করার সময় সাংসারিক বিষয় দিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। এ সময় পপি রানী কুন্ডু স্বামীর সংসার আর করবে না রাগ করে এ বলে রান্নাঘর থেকে বের হয়ে যান। তার পিছু নিয়ে সুবল কুন্ডু রান্নাঘর থেকে বের হয়ে একটি লাঠি দিয়ে পপি রানী কুন্ডুর মাথায় আঘাত করেন। তখন পপি রানী কুন্ডু চিৎকার করে মাটিতে পড়ে যান। এ সময় সুবল কুন্ডু শ্বাসরোধে স্ত্রীকে হত্যা করেন। পরে ঘটনাটি ভিন্নখাতে নিতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে পপি রানী কুন্ডু মারা গেছেন বলে প্রচার চালান সুবল কুন্ডু। তদন্তকালে সুবল কুন্ডুকে আটক করে পিবিআই। পরে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হলে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।