নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরে মাদকের বিস্তার রোধ, নিরব চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। রোববার সকালে জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মিটিংয়ে এ আহ্বান জানানো হয়।
এদিকে, জুলাই মাসের অপরাধ চিত্রে দেখা গেছে জুন মাসের তুলনায় অপরাধ কমেছে। জুন মাসে ৮টি খুন, ১০ টি ধর্ষণ, অন্যান্য চুরি ২২ টি, সড়ক দুর্ঘটনা ১০ টি, মাদকদ্রব্য উদ্ধারজনিত মামলা ৭১ টি ও চোরাচালানের ঘটনা ৮টি থাকলেও জুলাই মাসে তা কমেছে। জুলাই মাসে জেলায় ৬টি খুন, ধর্ষণ ৭টি, অন্যান্য চুরি ১২ টি, সড়ক দুর্ঘটনা ৪টি, মাদকদ্রব্য উদ্ধারজনিত মামলা ৬৫ টি ও চোরাচালানের ঘটনা ৫ টি ঘটেছে। এদিকে বৃদ্ধি পেয়েছে নারী ও শিশু নির্যাতন ও অপহরণ। জুন মাসে নারী ও শিশু নির্যাতন ১৮ টি থাকলেও জুলাই মাসে তা বেড়ে ২৩ টি এবং অপহরণ ৬টি থাকলেও তা বেড়ে ৯ টি দেখা গেছে।
সভায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন মাদক বিস্তার রোধে গত মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চান। তিনি বলেন, গত মিটিংয়ে মাদকের বিস্তাররোধে একটা আলোচনা এসেছিলো। অভিযান চালানোর কথাও বলা হয়েছিলো। কিন্তু দৃশ্যমান কিছু দেখি নাই। মাদক বিক্রিতে আমাদের কোনো লোকও জড়িত থাকলে আপনারা পদক্ষেপ নেন। আমরাও দল থেকে ব্যবস্থা নেবো।
জেলা বিএনপির সভাপতি ও পিপি সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু বলেন, আমরা সবাই জানি যশোর শহরে ও শহরতলীতে কোথায় ও কে কে মাদক বিক্রি করে। মাদকের মামলা সেভাবে লক্ষ্য করছি না। কোর্টে মাদকের মামলার ক্ষেত্রে ফরওয়ার্ডিং এ অতীতের মামলা দিলে জামিনে সময় লাগবে। আমাদের যুবক ছেলেরা মাদকের সাথে জড়িত। তাদের চেহারা দেখলে বোঝা যায়।
তিনি আরও বলেন, কোর্টে দেখছি ৪, ৫ ও ৮ বছরের শিশুরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। বিশেষ করে মাদ্রাসার শিক্ষকরা এই মামলার আসামি। এছাড়া শহরে নিবর চাঁদাবাজি হচ্ছে। ফুটপাত থেকে টোল আদায় করা হচ্ছে। এসব বিষয় নিয়ে আমাদের আলোচনা করা উচিৎ। এবার যশোরের মামলাও নিষ্পত্তি হয়েছে প্রায় ৩ থেকে ৪ শ। শিশু নির্যাতনের মামলায় দ্রুত ফরওয়ার্ডিং দেওয়ার কথা বলেন তিনি।
পুলিশ সুপার রওনক জাহান বলেন, পুলিশের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি। আপনাদের সহযোগিতা কামনা করি। নারী নির্যাতন হচ্ছে আহরহ। এটা মামলা পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া ক্রিটিক্যাল। অপরাধী আটক ও অস্ত্র উদ্ধার অব্যাহত রয়েছে। মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। গত মাসে ৪৬ টি মামলা হয়েছে। আমরা কৌশলগতভাবে ৩ টি স্টেপে কাজ করছি। মাদকের বিরুদ্ধে অভিযানের এখনই সময়। যারা মাদক বিক্রি করে তাদের হাতে অস্ত্র ও ককটেল থাকে। এক সপ্তাহের মধ্যে আমরা আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যবস্থা করছি। নিরব চাঁদাবাজি হচ্ছে জানতে পারলে ধরে আমাদের খবর দেবেন। আমরা ব্যবস্থা নেবো।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম বলেন, গত মাসের তুলনায় এ মাসে অপরাধ কমেছে। তবে অপহরণটা বেশি। মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করতে হবে। মাদক কারবারীর মিনিমাম ৬ মাস যেন বের হতে না পারে। প্রকৃত মাদকের সাথে জড়িতদের তালিকা তৈরি করে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে সমন্বয় করে পদক্ষেপ নিতে হবে। তিনি জলাবদ্ধতা সম্পর্কে সচেতন করে বলেন, আমাদের জলাবদ্ধতা নিয়ে ভুগতে হবে। ভবদহ, হরিনার বিলসহ বেশ কিছু এলাকায় এই সমস্যা প্রকট। কাজেই এখই সচেতন হওয়া দরকার এবং জলাবদ্ধতা নিরসনে পদক্ষেপ নিতে হবে।
উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক রফিকুল হাসান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কমলেশ মজুমদার, যশোর চেম্বর অব কমার্সের সাধারণ সম্পাদক তানভীরুল হাসান সোহান, জামায়াত নেতা গোলাম কুদ্দুস, জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতা খালেদ সাইফুল্লাহ প্রমুখ।