নিজস্ব প্রতিবেদক
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় দল থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত যশোরের চার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সাবেক এক চেয়ারম্যানসহ ছয়জনকে ক্ষমা করেছে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। তাদের ক্ষমা করে গত দুই ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের পৃথক চিঠি দিয়েছেন। তিন ফেব্রুয়ারি শুক্রবার পত্রিকা দপ্তরে এসব চিঠির ফটোকপি সরবরাহ করেন নেতৃবৃন্দ। ওই চিঠিতে ভবিষ্যতে দলের স্বার্থ পরিপন্থী ও শৃঙ্খলা ভঙ্গ না করার শর্তে তারা এ ক্ষমা পেয়েছেন বলে উল্লেখ রয়েছে।
ক্ষমাপ্রাপ্তরা হলেন দেয়াড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি ও দেয়াড়া ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান, নওয়াপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক আহ্বায়ক এবং নওয়াপাড়া ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর তুহিন, মণিরামপুর ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য ও যশোরের চাঁচড়া ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান শামীম রেজা, জেলা মৎস্যজীবী লীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও রামনগর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মাহমুদ হাসান লাইফ, চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান মুন্না এবং সদর উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসেন।
আরও পড়ুন: মেয়াদোত্তীর্ণ যশোর পৌর, অভয়নগর ও মণিরামপুর আ.লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি
দলীয় সূত্র মতে, ২০২১ সালে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে চেয়াম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় তাদের সংগঠনের পদ থেকে বহিষ্কার করে জেলা আওয়ামী লীগ। দোষ স্বীকার করে তারা ভবিষ্যতে এ ধরনের কর্মকা-ে যুক্ত না হওয়ার লিখিত অঙ্গীকার করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৭ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সিদ্ধান্ত অনুসারে তাদের ক্ষমা করা হয়।
এ বিষয়ে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম মিলন বলেন, ক্ষমা প্রাপ্তির আবেদনের প্রেক্ষিতে এ সকল নেতাকে ক্ষমা করা হয়েছে। তবে স্বপদে বহাল করা হয়নি। এখনো জেলা আওয়ামী লীগের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি পৌঁছায়নি। তবে কেউ কেউ ব্যক্তিগতভাবে দলের সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরিত চিঠি পেয়েছেন বলে তিনি শুনেছেন।
এই বিষয়ে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহারুল ইসলাম বলেন, ‘এখন পর্যন্ত যারা নেত্রীর কাছে ক্ষমার আবেদন করেছেন সেই ছয় নেতাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন দলীয় সভানেত্রী। আপাতত এই ছয় নেতা ক্ষমা পেলেও দলের স্বপদে স্থান পাচ্ছেন না বলে জানান তিনি।
ক্ষমাপ্রাপ্তির বিষয়ে দেয়াড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান বলেন, সারাজীবন বঙ্গবন্ধুর আদর্শে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে রাজনীতি করে যেতে চাই। দলের আদর্শ নীতি মেনেই ভবিষতে পথ চলবো। আমাকে ক্ষমা করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।
ক্ষমাপ্রাপ্তরা অন্যরাও প্রধানমন্ত্রী ও ওবায়দুল কাদেরের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ক্ষমা চেয়ে দলের কাছে আবেদন করায় অব্যাহতি প্রত্যাহার করে ক্ষমা করা হয়েছে। আগামীতে কখনো দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে যাবেননা বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তারা।
আরও পড়ুন:যশোর বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি চার বছরেও, হতাশ নেতাকর্মীরা