নিজস্ব প্রতিবেদক: বছরের প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেয়ার মধ্যে দিয়ে সারা দেশে বই উৎসব হয়। সেই উৎসবের দিন ঘনিয়ে আসলেও যশোরে চাহিদার গড়ে ৭৫ ভাগ বই এখনো আসেনি। মঙ্গলবার পর্যন্ত প্রাথমিক স্তরে মাত্র ৩০ শতাংশ বই এসেছে। মাধ্যমিক স্তরে এসেছে গড়ে ২৫ শতাংশ। ফলে বছরের প্রথমদিনে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ‘বই উৎসব’ নিয়ে আশঙ্কা রয়েছে। গত বছরও বই উৎসব করা হয়েছিল চাহিদার মাত্র অর্ধেক বই নিয়ে।
যশোর জেলা শিক্ষা অফিস মতে, নিম্ন মাধ্যমিক, মাধ্যমিক, কারিগরি ও মাদ্রাসা পর্যায়ে জেলায় সম্ভব্য ৫ লক্ষাধিক শিক্ষার্থী হিসাব করা হয়েছে। এহিসেবে বইয়ের চাহিদা রয়েছে ৫৪ লাখ ৯৮ হাজার ৭৫টি। এর মধ্যে মাধ্যমিক, দাখিল, এবতেদায়ী, এসএসসি ভোকেশনাল ও দাখিল ভোকেশনালে বইয়ের চাহিদা ৪১ লাখ ৪৯ হাজার ৯০২ পিস। চাহিদার বিপরীতে জেলায় বই এসে পৌঁছেছে ১৫ লাখ ৫৭ হাজার ৬২৩ পিস।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বইয়ের চাহিদা ১৩ লাখ ৪৮ হাজার ১৭৩ পিস। বই এসে পৌঁছেছে ৩ লাখ ৫৬ হাজার ২০৫ পিস। বছরের প্রথম দিন থেকেই এসব বিতরণের কথা রয়েছে।
জেলা শিক্ষা অফিসের একটি সূত্রের দাবি, গতবছর প্রায় সব শ্রেণিতে অর্ধেক বই দিয়ে বই উৎসব শুরু হয়েছিলো। প্রায় ফেব্রুয়ারি মাস লেগেছিলো শতভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শতভাগ শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছাতে। নতুন কালিকুলাম ও সিলেবাসে বই ছাপাতে কিছুটা বিলম্ব হওয়ায় অন্য জেলাগুলোর মতো যশোরেও সব নতুন বই এসে পৌঁছায়নি বলে শিক্ষা অফিসের সূত্রটি জানিয়েছেন। বই প্রাপ্তির বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী এবারও অর্ধেক বই নিয়ে বই উৎসব হবে।
যশোর সদরের দত্তপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর জব্বর বলেন, গত বছর এই সময়ে কিছু বই পেয়ে ছিলাম। এ বছর বই আসছে অনেক ধীরগতি। এখন পর্যন্ত তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির কোন বই পায়নি। প্রথম শ্রেণির একটি বিষয়ের বই ও দ্বিতীয় শ্রেণির দুটি বিষয়ের বই পেয়েছি।
শার্শার গোড়পাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আবুল হাশেম জানান, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির কিছু বই এসেছে। বাকি আছে ষষ্ঠ ও নবম শ্রেণির বই। তবে এখনো সময় আছে। এরমধ্যে বই এসে পৌছাবে বলে আশা করছি।
যশোর জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক শোয়েব হোসেন জানান, এখনও মাধ্যমিক পর্যায়ের বই হাতে পায়নি। তবে আশা করছি বছরের শুরুতে বই পেয়ে যাব।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার একেএম গোলাম আযম জানান, আস্তে আস্তে বই আসছে। এখন পর্যন্ত চাহিদার ২৫ শতাংশ বই পেয়েছি আমরা। আশা করি ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে সকল বই পেয়ে যাবো। বই দেরি করে আসছে বলে; বই পৌঁছে দিতে বেশি জনবল প্রস্তুত রেখেছি। যাতে দ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বইগুলো পৌঁছে যায়।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুস সালাম বলেন, প্রতিদিনই বই আসতে শুরু করেছে। এ মাসের মধ্যে সব বই এসে যাবে। নববর্ষে উৎসবের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেয়া হবে।