নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন মহাবিদ্যালয় (এম এম কলেজ) ছাত্রদলের বৃক্ষরোপন ও অসহায়দের মাঝে খাবার বিতরণ কর্মসূচিতে ছাত্রলীগের হামলার ঘটনা ঘটেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে কলেজ মসজিদ গেট এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাহাদৎ বার্ষিকী উপলক্ষে দুস্থদের মধ্যে খাবার বিতরণ ও বৃক্ষরোপন করে ছাত্রদল। এ সময় ‘জয় বাংলা’ ও ছাত্রলীগের স্লোগান দিয়ে হামলা করা হয় বলে অভিযোগ করেছে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এই ঘটনায় কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়কসহ পাঁচজন আহত রয়েছে। আহতদের যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতরা হলেন কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক হাসান ইমাম (৩২), সদস্য সচিব কামরুল ইসলাম (২৮), যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদুল ইসলাম বিল্টু (২৬), টিটন তরফদার (২৬) ও ছাত্রদল কর্মী সাদিকুর রহমান (২৪)।
কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক হাসান ইমাম বলেন, ‘মঙ্গলবার বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪২ তম শাহাদৎ বার্ষিকী উপলক্ষে এম এম কলেজ ছাত্রদলের উদ্যোগে বৃক্ষরোপন, দোয়া মাহফিল ও খাবার বিতরণের কর্মসূচি ছিলো। বাদ জোহর কলেজ মসজিদে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হওয়ার পরে অসহায়দের যখন খাবার বিতরণ কর্মসূচি চলছিলো তখন কলেজ ছাত্রলীগ নেতা অহিদুল ইসলাম রাব্বীর নেতৃত্বে ১৫ থেকে ২০ জন নেতাকর্মী জয় বাংলা এবং ছাত্রলীগের স্লোগান দিয়ে তাদের কর্মসূচিতে হামলা করে। এরপর ছাত্রদলের নেতাকর্মীর উপর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বেধড়ক মারপিট করে। এই ঘটনায় পাঁচজন গুরুতর এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। অভিযুক্ত ছাত্রলীগনেতা রাব্বীর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। আর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সালাউদ্দিন কবির পিয়াস বলেন, ‘কলেজে ছাত্রলীগের কোন কমিটি নাই। ছাত্রলীগের যারা কর্মী আছে তারা এই কাজ করতে পারে না। ছাত্রদলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে নিজেরা এই ঘটনা ঘটিয়ে ছাত্রলীগের উপর অভিযোগ দিচ্ছে। আর যশোর কোতয়ালী মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) শফিকুল আলম বলেন, আমরা একজনের আহতের ঘটনা শুনেছি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।এদিকে হামলার ঘটনা শুনে আহত ছাত্রদল নেতাকর্মীদের হাসপাতালে দেখতে যান বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতসহ ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এই ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত আটকের দাবি জানান নেতৃবৃন্দ।
কলেজ ছাত্রলীগ সূত্রে জানা গেছে, যশোর সরকারি এমএম কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি চলতি বছরের গত ৫ এপ্রিল যশোর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সালাউদ্দিন কবির ও সাধারণ সম্পাদক তানজীব নওশাদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিলুপ্ত করে। ৬ বছরের আগের সদ্য বিলুপ্ত হওয়া কমিটিতে অধিকাংশ নেতা বর্তমানে বিবাহিত ও সন্তানের বাবা। আবার কেউ কেউ চাকরিজীবন নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তিন-চার বছর ধরে তারা রাজনীতিতে নিস্ত্রিয়। দীর্ঘদিন কমিটি না হওয়ায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে ছোট ছোট উপদল। ফলে এসব নেতা কর্মীরা ক্যাম্পাসে প্রভাব ও আধিপত্য বিস্তার রোধে নানা বিশৃঙ্খলা কর্মকান্ড করে যাচ্ছেন। অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা অহিদুল ইসলাম রাব্বী যশোর পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ জাহিদ হোসেন মিলনের অনুসারী হিসাবেই পরিচিত।