নিজস্ব প্রতিবেদক
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব স্মরণে ১লা সেপ্টেম্বর স্মরণকালের সর্ববৃহৎ ছাত্রসমাবেশের আয়োজন করবে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ। সেই ছাত্রসমাবেশ সফল করতে যশোরে পাল্টা প্রস্তুতি সভার আয়োজন করে জেলা ছাত্রলীগের একাংশ। গত শুক্রবার জেলা ছাত্রলীগের প্রস্তুতি সভায় উপস্থিত না হওয়ায় ১১ নেতাকে শোকজ করা হয়েছে। এই শোকজের প্রতিবাদে রোববার দুপুরে গাড়িখানা রোডে জেলা আ’লীগের দলীয় কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে পাল্টা প্রস্তুতি সভা করেন শোকজ নোটিশ পাওয়া ১০ ছাত্রলীগ নেতা। প্রস্তুতি সভা হলেও মূলত অনুষ্ঠানে বক্তরা সংগঠনের জেলা শাখার সভাপতি সম্পাদককে তিরস্কার করে বক্তব্য দেন নেতৃবৃন্দ।
সভায় জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিফাতুজ্জামান রিফাত বলেন, আপনারা (সভাপতি-সম্পাদক) যশোরে কতদিন রাজনীতি করেন। উড়ে এসে জুড়ে বসেছেন। সভাপতি সম্পাদক পরিকল্পিত ভাবে আমাদের শোকজ করেছে। এই সভা থেকে আপনাদের আমরা শোকজ করলাম। আমরা আপনাদের শোকজ মানি না। সহ সভাপতি কায়েস আহমেদ রিমু বলেন, রাজনীতি উড়ে এসে জুড়ে বসা নয়। আমার দুভাগ্য এমন একটি কমিটিতে আমি স্থান পেয়েছি। যে কমিটির সভাপতি সম্পাদকের ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দদের সঙ্গে সম্পর্ক নেই। ছাত্র রাজনীতি সম্পর্কেও অবগত নেই। আমরা ও রকম সভাপতি-সম্পাদক মানি না। আরেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান হৃদয় বলেন, ‘জেলার সভাপতি-সম্পাদক যে আমাদের শোকজ করেছে; সেটা মানি না। প্রস্তুতি সভায় উপস্থিত না হলে শোকজ করতে পারে না। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সম্পাদকের অনুমতি নিয়েই আমরা আজকের পৃথক সভা করেছি। জেলার সভাপতি-সম্পাদক সাংগঠনিক কমিটির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সমন্বয় করে না। তারা রাতের আধারে প্রেস রিলিসের মাধ্যমে সভাপতি-সম্পাদক হয়েছে। তারাই সেই প্রেস রিলিসের মাধ্যমে কমিটি অনুমোদন দেয়, বাতিল করে। সাংগঠনিক কমিটির সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে না। সভাপতি সম্পাদকের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে আমরা কেউ সভায় উপস্থিত হয়নি। তবে আমরা জেলা আ’লীগের সভাপতি সম্পাদকের নেতৃত্বে সর্ববৃহৎ ছাত্রসমাবেশে বিশাল মিছিল নিয়ে উপস্থিত হবো। এ সময় বক্তব্য রাখেন জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন রনি হাওলাদার, আব্দুর রউফ পিন্টু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, মাসুদ হাসান কৌশিক, সাংগঠনিক সম্পাদক তরিকুল ইসলাম, রাকিবুল আলম, ফাহমিদ হুদা বিজয় প্রমুখ।
জেলা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০২১ সালের ৫ জুলাই সালাউদ্দিন কবির পিয়াসকে সভাপতি ও তানজীব নওশাদ পল্লবকে সাধারণ সম্পাদক করে পাঁচটি পদে ২৩ নেতার আংশিক কমিটি অনুমোদন দেন তৎকালীন কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য। অনুমোদন হওয়া এই কমিটি আড়াই বছর পার হলেও আজও পূনাঙ্গ না হওয়াতে নেতাকর্মীদের মাঝে বিরাজ করছে ক্ষোভ আর হতাশা। একই সাথে অভিযোগ রয়েছে, জেলার সভাপতি পিয়াস ও সাধারণ সম্পাদক পল্লব দায়িত্ব পালনকালে পদে পদে গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কমিটি গঠন থেকে শুরু করে সংগঠনের সিদ্ধান্ত তারা দুজন নিয়েছেন। সংগঠন পরিচালনায় তাদের চরম স্বেচ্ছাচারিতায় ২৩ সদস্যের কমিটিকে একসঙ্গে করতে পারেননি এই সভাপতি-সম্পাদক। তাদের সাংগঠনিক অক্ষমতায় ইতিমধ্যে জেলা ছাত্রলীগ অনেকগুলো উপগ্রুপে বিভক্ত হয়েছে। অনেকে কাঙ্খিত পদে বসতে না পারায় পদ ব্যবহার করেন না, একই সঙ্গে দলীয় কর্মসূচিতেও অংশ নেন না বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সালাউদ্দিন কবির পিয়াস ও সাধারণ সম্পাদক তানজীব নওশাদ পল্লবের মোবাইল ফোনে কয়েক দফায় ফোন দিলেও তারা দুজনেই ফোন রিসিভ করেননি।