নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরে ফুটবল খেলা নিয়ে বিরোধের জের ধরে নূর হোসেন নামে এক কলেজ শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
শনিবার (১১ মে) রাতে শহরের শংকরপুর চোপদারপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত নূর হোসেন যশোর শহরের শংকরপুর চোপদারপাড়ার নজরুল ইসলামের ছেলে। আব্দুর রাজ্জাক মিউনিসিপাল কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
এখন নূর হোসেনের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। তার মা ও বোনের বুকফাটা আহাজারিতে অশ্রু ধরে রাখতে পারছেন না প্রতিবেশীরাও। তারা এ ঘটনায় জড়িতদের সকলকে আটক ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
জানা গেছে, শুক্রবার (১০ মে) বিকেলে যশোর শহরের শংকরপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ ছিল। বন্ধুদের সঙ্গে ওই ম্যাচে খেলতে যান কলেজছাত্র নূর হোসেন। তবে বদলি খেলোয়াড় হিসেবে তাকে বসিয়ে রাখা হয়। একপর্যায়ে খেলা নিয়ে গোলযোগ শুরু হলে নূর হোসেন বাড়ি ফিরে যায়। এরপর শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে কোচিং থেকে বাড়ি ফেরার পথে তার বন্ধু শান্তকে মারপিট করতে দেখে এগিয়ে যায় সে। ফুটবল খেলায় গোলযোগের ঘটনা তারা জড়িত নয় দাবি করে শান্তকে রক্ষা করতে গেলে স্থানীয় পচা নামে এক যুবকের নেতৃত্বে ৪-৫ জন তাকে মারধর শুরু করে। একপর্যায়ে তাকে ধাওয়া করে নিয়ে ছুরি মেরে জখম করে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। অবস্থার অবনতি হলে পরে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
নূর হোসেনের মা বলেন, ‘আমার স্বপ্ন ছিল ছেলেকে স্নাতক পাস করিয়ে বিদেশে পাঠাবো। সংসারে আসবে স্বচ্ছলতা। কিন্তু দুর্বৃত্তদের কারণে সব স্বপ্ন তছনছ হয়ে গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার ছেলে তো কোনো খারাপ কাজে নেই। জন খাটে, লেখাপড়া করে। ওকে কেন এভাবে হত্যা করা হলো!’
নূর হোসেনের বোন বলেন, ‘একই এলাকার পচা, আকাশ, কানা রনি, দুর্জয়, রিয়াদ মিলে আমার ভাইকে হত্যা করেছে। আমার ভাইয়ের তো কোনো দোষ ছিল না।’
এ ঘটনায় জড়িতদের সবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
এদিকে, গতকাল রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। তবে এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।