নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরের গত ২৪ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে দুজন। এছাড়া নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন আরো জন ৯ জন। এ সংখ্যা দিয়ে জেলায় মোট রোগীর সংখ্যায় দাঁড়ালো ১০৮ জনে। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়িতে রয়েছেন ৮৬ জন। আজ শনিবার বেলা ১২ টার দিকে যশোর সিভিল সার্জনের মিডিয়া সেলে বিষয়টি জানানো হয়েছে। এদিকে যশোরের কয়েকটি উপজেলা ডেঙ্গুর হটস্পট ঘোষণা হলেও মশা নিধনের তৎপরতা নিয়ে হতাশ এলাকাবাসী। সংশ্লিষ্টরা দ্রুত তৎপর না হলে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা দেখা দিবে।
সিভিল সার্জনের কার্যালয় সূত্রে জানাগেছে, যশোরে গত ২৪ ঘন্টায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন চৌগাছা কয়ারপাড়া গ্রামের সমীর কর্মকারের স্ত্রী দোলন কর্মকার (৩৩) এবং বাঘারপাড়া উপজেলার আব্দুল গফফার (৬৫)। যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়। তারা দুজনই স্থানীয় ভাবে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত ১২ জুলাই যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়। এর তারা ১৪ এপ্রিল শুক্রবার মারা যান। মারা যাওয়া দুজনই হার্ট ও ডায়াবেটিস রোগী ছিলেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। এছাড়া গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ৯ জন। আক্রান্তরা সবাই যশোর জেনারেল হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে যশোরের সিভিল সার্জন ডা. বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস বলেন, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত দুজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় যশোর ২৫০শয্যা জেনারেল হাসপাতালে মারা গেছেন। মারা যাওয়া দুজনই স্থানীয়ভাবে আক্রান্ত ছিলেন। তিনি জানান, যশোরে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আছে। খারাপ হতে পারে এমন আশঙ্কায় সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। যশোর জেনারেল হাসপাতালসহ প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেঙ্গু কর্নার খোলা হয়েছে। সাধারণ মানুষকে সচেতন করার জন্য বিভিন্ন উপজেলায় নিয়মিত উঠান বৈঠক ও অবহিতকরণ সভা করা হচ্ছে।
এদিকে ডেঙ্গুর ঝুঁকিতে থাকা যশোরে মশা নিধনে স্প্রে বা এডিশ মশার লার্ভা ধ্বংসে প্রত্যাশিত তৎপরতা নেই বলে অভিযোগ করেছেন শহরবাসী। তারা বলছেন, ইতোমধ্যে সদর ও অভয়নগর উপজেলাকে ডেঙ্গুর হটস্পট ঘোষণা হলেও মশার লার্ভা ধ্বংসে অভিযান চালানো হয়নি। সংশ্লিষ্ঠদের ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলায় শুধু হাকডাকই বেশি শোনা যাচ্ছে।
শহরের জেল রোড এলাকার বাসিন্দা শিউলি বেগম বলেন, তাদের এলাকায় কখনো মশার ওষুধ ছিটানো হয়নি। মশার ওষুধ শেষ কবে আমাদের এলাকায় দিয়েছে আমরা কেউ বলতে পারি না। শহরের স্টেডিয়াম এলাকার বাসিন্দা হাসানুজ্জামান বলেন, হাসপাতালে রোগী ভর্তির কারণে জানতে পারছি জেলায় ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ এই এলাকায় মশা নিধনের কোনো কার্যক্রম কারও নজরে পড়েনি।
যশোর পৌরসভার মেয়র বীরমুক্তিযোদ্ধা হায়দার গনি খান পলাশ জানিয়েছেন, চলতি মাসের শেষে ৯টি ওয়ার্ডে একসঙ্গে মশক নিধন কার্যক্রম শুরু করা হবে। ডেঙ্গু ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে পৌরসভার উদ্যোগে প্রচার প্রচারণা চালানো হচ্ছে। সেই সাথে মশা নিধন কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।