নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরের উপর দিয়ে মাঝারি ধরনের শৈত্য প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। গত কয়েকদিন মৃদু শৈত্য প্রবাহ বয়ে গেলেও গতকাল থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্য প্রবাহ হচ্ছে। এমন শৈত্যপ্রবাহের মধ্যে তাপমাত্রা আরও কমে গেছে। রোববার জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগের দুই দিন শুক্র ও শনিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, যশোর জেলার ওপর দিয়ে মাঝারি মানের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। শনিবার এই জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রার এমন অবস্থা আরও কয়েক দিন থাকতে পারে বলে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।
গত কয়েক দিন যশোর ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে, সঙ্গে রয়েছে উত্তরের হিমেল হাওয়া। এতে স্থবিরতা নেমে এসেছে জনজীবনে। আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন অনেকেই।
জানা যায়, গত কয়েক বছর পর এবার পৌষের মাঝামাঝিতে এ অঞ্চলে শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। পৌষের মাঝামাঝি হিসেবে সর্বশেষ ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের শেষে এবং ২০১৮ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে যশোরে দীর্ঘ সময় ধরে শৈত্যপ্রবাহ বিরাজ করেছিল। ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে যশোরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ৪ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এবার জানুয়ারির শুরু থেকেই যশোরে তাপমাত্রা কমতে থাকে। শুরু হয় শৈত্যপ্রবাহ। শৈত্যপ্রবাহের শুরুতেই ৫ জানুয়ারি যশোরে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। এরপর তাপমাত্রা কমতে কমতে ৭ জানুয়ারি ৮ দশমিক ৬ এবং রোববার ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে এসেছে।
এদিন যশোরের সাথে চুয়াডাঙ্গায়ও দেশের সর্বনিম্ন ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। যশোরে বিমান বাহিনীর আবহাওয়া অফিস এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এদিকে, প্রচণ্ড শীতের কারণে ব্যাহত হচ্ছে মানুষের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড। হাড় কাঁপানো শীতে ঘর থেকে বের হননি অনেকে। তবে ঘর থেকে বের হয়েও কাজ মিলছে না শ্রমজীবী মানুষের।
যশোর শহরের লালদীঘি পাড়ে প্রতিদিন প্রায় দুশো মানুষ শ্রম বিক্রির জন্য জড়ো হয়ে থাকেন। রোববার সকালে সেখানে দেখা গেছে, কাজ না পাওয়ায় অনেকেই বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। কিছু মানুষ অনেক বেলা পর্যন্ত অপেক্ষা করছেন কাজের আশায়।
এদিকে তীব্র ঠান্ডায় শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন শিশু, নারী ও বৃদ্ধরা। যশোর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা আবদুস সামাদ বলেন, শীতজনিত রোগে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। এই হাসপাতালে বর্তমানে ৪৮২ রোগী অবস্থান করছেন। এর মধ্যে শিশু ওয়ার্ডে ৩৯ ও ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ১৩ রোগী ভর্তি আছে। বাকিরা অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে এসেছেন।