নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোর পৌরসভা এলাকার স্থগিত হওয়া তিনটি ওএমএস ডিলার নিয়োগ দেয়া হয়েছে গত বুধবার। এ ডিলারশিপ পেয়েছেন বহুল আলোচিত আবুল খায়ের’র প্রতিষ্ঠান। এলাকাবাসী এই ডিলারশিপ বাতিলে গতকাল জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে। এতে শতাধিক মানুষ স্বাক্ষর করেন।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, লটারিতে ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ৭ জনের মধ্যে লটারিতে ডিলার মনোনীত হয়েছেন শাহ নেওয়াজ। ৭ নম্বর ওয়ার্ডে ২৪ জনের মধ্যে লটারিতে মনোনীত হন রিয়েল দাউদ। এবং ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ১০ জনের মধ্যে আছাদুজ্জামান জিহাদ লটারিতে ডিলার মনোনীত হয়েছেন। তিনি যশোরের সন্ত্রাসী আবুল খায়েরের ছেলে। মূলত আবুল খায়েরের প্রতিষ্ঠান জিদান ইন্টারপ্রাইজ।
এর আগে ডিলার নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের দোসর থাকার অভিযোগ তুলে ৬,৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ওএমএস ডিলার নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ রাখা হয়। অধিকতর যাচাই বাছাই ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনের পর পুনরায় স্থগিত হওয়া ৩টি ওয়ার্ডে ডিলার নিয়োগ করা হয়েছে।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা সেফাউর রহমান জানান, নতুন করে ডিলার নিয়োগপ্রাপ্তরা আগামী রোববার চালান জমা দিয়ে চাল ও আট উত্তোলন করে বিক্রি শুরু করবে।
এর আগে ৩ জুলাই ওপেন লটারির মাধ্যমে ডিলার নিয়োগ প্রাপ্তরা হলেন ১ নম্বর ওয়ার্ডে কামরুল হাসান টুটুল, ২ নম্বর ওয়ার্ডে শেখ আলী আকবর, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ঘোপ সেন্ট্রাল রোডে রাজুর মোড়ে ইব্রাহিম হোসেন ও জেল রোডে বাবর আলী, ৪ নম্বর ওয়ার্ডে সালমা ইসলাম, ৫ নম্বর ওয়ার্ডে হাসেম আলী, ৬ নম্বর ওয়ার্ডে ইয়াসিন আলী, ৯ নম্বর ওয়ার্ডে এটিএম মঈনুল ইসলাম ও বিসিক শিল্প নগরীতে ইফতিয়ার রহমান।
ডিলার নিয়োগ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলামের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা সেফাউর রহমান, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর যশোরের সহকারী পরিচালক সেলিমুজ্জামান প্রমুখ।
এদিকে ৮ নম্বর ওয়ার্ডে আছাদুজ্জামান জিহাদ লটারিতে ডিলার মনোনীত হওয়ায় ক্ষোভ দেখা দিয়েছে ওয়ার্ড বিএনপি, জামায়াতসহ এলাকার সাধারণ জনগণের মধ্যে। তারা বলছেন, বিগত আওয়ামী লীগের সময়ে সন্ত্রাসী আবুল খায়ের চাঁদাবাজি, দখলবাজিসহ নির্বাচনে কেন্দ্র দখলের মাস্টার মাইন্ড ছিলেন। ৮ নম্বর ওয়ার্ডে আজিমাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও এমএসটিপি বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্র বোমা হামলার করে দখল হয়েছিল এই শীর্য সন্ত্রাসীর নেতৃত্বে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, আবুল খায়ের এলাকায় এখনও আধিপত্য বিরাজ করলেও পুলিশ তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। বর্তমান সময়ে কিভাবে তার প্রতিষ্ঠান ওএমএস ডিলার নিয়োগে অংশ নিল সেই প্রশ্ন করেছেন এলাকাবাসী। তারা এই ডিলারশিপ বাতিলে প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বৃহস্পতিবার।
এব্যাপারে জেলা প্রশাসক আজহারুল ইসলাম জানান, লটারির সময়ে উপস্থিত জনতার মধ্যে থেকে কেউ অভিযোগ তোলেনি। অভিযোগ তুললে বাতিল করে দিতাম।
