নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরে দিনমজুর আনারুল ইসলাম হত্যা মামলার মূল আসামি রনি হোসেন ও তার মা পারভীন খাতুনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার রাতে অভয়নগর উপজেলার বাগদাহ গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তারের পর সোমবার আদালতে সোপর্দ করা হয়। হত্যার কথা স্বীকার করে রনি আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। আটক রনি হোসেন সদর উপজেলার বানিয়ারগাতি গ্রামের মৃত আবুল কালামের ছেলে। এ ঘটনার আগেই ১৬ এপ্রিল কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন নিহত আনারুলের ভাই ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার বাগদিরাইট গ্রামের লুৎফর মিয়ার ছেলে সোহেল রানা (৩৫)।
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, আনারুল ইসলাম বানিয়াগাতি গ্রামের জনৈক জুয়েল রানার বাড়ি থেকে দিনমজুরের কাজ করতো। আসামি রনি হোসেন সংঘবদ্ধ অপরাধ দলের সক্রিয় সদস্য। এলাকায় বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী মূলক কর্মকান্ড করে বেড়ায়। সোহেল রানার আপন বড় ভাই আনারুলের সাথে মোবারক হোসেন ১৩ এপ্রিল রাতে একই গ্রামের ফিরোজের দোকানে হাবিবুর রহমানের কাছে মজুরির পাওনা টাকা আনতে যায়। যাওয়ার সময় টর্চ লাইট জ্বালিয়ে যায়। টর্চ লাইটের আলো আসামি রনির চোখে পড়লে সে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। রনি বাড়ির সামনে দাড়িয়ে ছিলো। আনারুল গালিগালাজ করতে নিষেধ করে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে রনি বাড়ি থেকে ধারালো দা এনে ২/৩ জনকে সাথে করে নিয়ে আনারুলের উপর আক্রমন করে। আসামি পারভিন খাতুন ও রানি বেগম আনারুলের দুই হাত ধরে রাখে। আসামি রনি হোসেন দা দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আনারুলের মাথার বাম পাশে কোপ মেরে রক্তাত্ত জখম করে। আনারুলের চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে গেলে আসামিরা হত্যার হুমকি দিয়ে চলে যায়। আহত আনারুলকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়্ সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবন্নতি হলে খুলনা মেডিকেল কলেজ ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। ১৬ এপ্রিল সন্ধ্যায় আনারুল ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। আনারুলের মৃত্যুর আগে তার ভাই সোহেল রানা এই ঘটনায় রনি, তার মা পারভীন খাতুন ও বোন রানী বেগমের নামে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। রোববার রাতেই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই কামরুজ্জামান ও এএসআই সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে রনিকে অভয়নগরের বাগদাহ গ্রামে শ্বশুর বাড়ি তার মা পারভীন খাতুনকে বানিয়ারগাতি নিজ বাড়ি থেকে পুলিশ আটক করে।
এই ব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বসুন্দিয়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই কামরুজ্জামান বলেন, সোমবার আনারুল হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে রনি। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার দালাল জবানবন্দি শেষে রনি ও তার মাকে জেলহাজতে প্রেরণের আদেশ দিয়েছেন।