নিজস্ব প্রতিবেদক
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতাচ্যুতির এক মাস পূর্তি উপলক্ষে ‘শহীদি মার্চ’ কর্মসূচির আয়োজন করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সারাদেশের ন্যায় যশোরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুটি গ্রুপ পৃথক সময়ে কর্মসূচি পালন করে। এ কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের মধ্যে গ্রুপিংয়ের বিষয়টি অনেকটা প্রকাশ্যে চলে এসেছে।
যশোরে একাংশের সমন্বয়ক রাশেদ খানের নেতৃত্বে বৃহস্পতিবার বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণে একটি মিছিল বের হয়। মিছিলটি শহরের সিভিল কোর্ট মোড়, প্রেসক্লাব, চৌরাস্তা, দড়াটানা হয়ে শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়।
মিছিল শেষে বক্তারা বলেন, জুলাই এবং আগস্টে স্বৈরাচার সরকার হটাতে গিয়ে যারা আহত এবং নিহত হয়েছেন তাদের তালিকা তৈরি করতে হবে। পাশাপাশি যারা অসুস্থ রয়েছেন তাদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। এ আন্দোলনে শহীদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করতে হবে।
এর আগে সকালে অপর গ্রুপের কর্মসূচির নেতৃত্ব দেন অন্যতম সমন্বয়ক জেসিনা মূর্শীদ প্রাপ্তি, মাসুম বিল্লাহ ও নূর ইসলাম। তারা প্রেসক্লাব যশোরের সামনে জড়ো হন। এতে অংশ নেন যশোরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থী। এরপর সেখান থেকে শুরু হওয়া শহীদি মার্চটি যশোর শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে যশোর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে যশোরের বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থীরা ছাত্র- জনতার উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন। বক্তব্য শেষে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ছাত্র জনতার স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন ও তাদের রূহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া মাহফিল করে কর্মসূচি শেষ হয়।
অন্যতম নেতৃত্ব দানকারী জেসিনা মুর্শীদ প্রাপ্তি বলেন, গত বুধবার বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্র ঘোষিত শহীদি মার্চ কর্মসূচি ঘোষণার পর আমরা সন্ধ্যা ৬ টার দিকে যশোরে কর্মসূচি পালনের সময় এবং স্থান ঘোষণা করি। ১৯৭১ সালের মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিকামী শহীদের প্রতি স্মরণে আমরা যেমন রাষ্ট্রীয় কর্মসূচি পালন করি; ঠিক তেমনই ২০২৪ সালের জুলাই মাসের মুক্তিকামী শহীদদের স্মরণে ‘শহীদি মার্চ’ কর্মসূচি পালন করছি। ফ্যাসিস্ট ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে এবং ছাত্র ও সাধরণত জনগণের হত্যার বিচার চেয়ে আমরা রাজপথে আছি। ২০২৪ এর জুলাইয়ের মুক্তিকামী শহীদদের প্রতি আমাদের অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু ভবিষ্যত পরিকল্পনা রয়েছে। আমরা খুবই শিঘ্রই তা বাস্তবায়ন চাই।
গ্রুপিং নিয়ে তিনি বলেন, আমাদের ঘোষণা দেখে আমাদের অপর গ্রুপ ৩ ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় কর্মসূচি ঘোষণা করে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের অপর গ্রুপটি নিয়ে আমাদের কোন আপত্তি নেই। কারণ গত ১৫ আগস্ট কেন্দ্রের কর্মসূচি ছিল আন্দোলনে আহতদের খোঁজ খবর নেওয়া। আমাদের ওপর গ্রুপটি ওইদিন কেন্দ্রের কর্মসূচি অমান্য করে বাউল সংগীতের আয়োজন করে। কেন্দ্রের নির্দেশনা অমান্য করায় আমরা আলাদা হয়ে যাই। তবে আমরা সকলে একসাথে দেশ সংস্কারের কাজ করতে চাই। আমাদের মধ্যে কোন প্রতিহিংসা চাই না।
