নিজস্ব প্রতিবেদক
২য় ও ৩য় ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে যশোরে কোন বড় ভাইয়ের কথায় কেউ সহিংসতা চালানোর চেষ্টা করলে ছাড় দেয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) বেলাল হোসাইন। রোববার সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মাসিক আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় তিনি এমন মন্তব্য করেন।
সভায় বেলাল হোসাইন বলেন, আসন্ন উপজেলা পরিষদের ১ম ধাপে যশোরের মণিরামপুর ও কেশবপুরে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু ২য় ধাপে শার্শা, ঝিকরগাছা ও চৌগাছা এবং ৩য় ধাপে সদর, বাঘারপাড়া ও অভয়নগর উপজেলা নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করতে একটি পক্ষ সহিংসতা চালাতে পারে পুলিশের কাছে এমন তথ্য আছে। যারা নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করবে তারা যে দলরই হোক না কেন কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
সভায় নির্বাচন প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক আবরাউল হাছান মজুমদার বলেন, ইভিএমে ভোট জালিয়াতির কোন সুযোগ নেই। তাই যদি কোন প্রার্থী ভেবে থাকে ভোট জালিয়াতি করে নির্বাচনে জয়লাভ করবে সেই সুযোগ নেই। বরং ভোটাররা যাকে তাদের জনপ্রতিনিধি করতে চাইবে সেই বিজয়ী হবে।
সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম মিলন বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য বেড়েছে। রাজনৈতিক নেতারা তাদের ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলের জন্য এই কিশোর গ্যাংকে ব্যবহার করে। তাই প্রশাসনের উচিৎ কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়া।
এছাড়াও আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় এপ্রিল মাসের অপরাধ চিত্র তুলে ধরা হয়। তাতে দেখা যায় গত বছরের তুলনায় এবছর এপ্রিল মাসে ৩৩টি মামলা বেশি হয়েছে। ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে জেলার ৮ উপজেলায় হত্যা, ধর্ষণ অপহরণ, চুরি ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধের কারণে থানায় ৩৩৮টি মামলা দায়ের হয়েছে। এর মধ্যে হত্যা মামলা ৪টি, অপহরণ ৩টি, ডাকাতি ১টি, মাদকদ্রব্য আইনে ১৩৩টি এবং অস্ত্র ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে মামলা হয়েছে ৬টি। মানবপাচার মামলার মাসিক প্রতিবেদন অনুযায়ী মানব পাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এবং নারী শিশু ও মানব পাচার দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এ এপ্রিল মাসে ২৩৯টি মামলা রেকর্ড হয়েছে। এছাড়াও জেলায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনার তথ্য অনুযায়ী এপ্রিল মাসে ১৪৬টি মামলায় ২৬ জন অপরাধীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদ- দেয়াসহ ৩ লাখ ১৭ হাজার ৬৫০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এর মধ্যে সড়ক পরিবহন আইন ২০০৬ ধারা অনুযায়ী ৭৩টি মামালা দায়ের এবং ৬৯ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপনা আইন ২০১০ লঙ্ঘন করায় ৩টি মামলা দায়ের ও ৬৭ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। বালুমহল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১৩ ধারায় ১টি মামলা এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।