নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরে আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের হামলায় এক যুবক নিহত ও আরও ৫ জন আহত হয়েছেন। বুধবার দিনগত রাত ২টার দিকে যশোর সদর উপজেলার বসুন্দিয়া ইউনিয়নের গাইদগাছি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত যুবক মাসুদ রানা (৩২) সদরের কেফায়েতনগর বসুন্দিয়া মোড় এলাকার মৃত সোহরাব হোসেনের ছেলে। আহতরা হলেন, অভয়নগরের চেঙ্গুটিয়া গ্রামের ইসমাইল হোসেনের ছেলে জুলফিক্কার, মণিরামপুর উপজেলার করেরআইল গ্রামের শামীম মোল্লার ছেলে সজিব মোল্লা ও আলমগীর হোসেনের ছেলে সুমন হোসেন, সুবলকাঠি গ্রামের মনসুর আলী বিশ্বাসের ছেলে ইস্রাফিল ও বারপাড়া গ্রামের বাবলু গাজীর ছেলে মঈনুদ্দিন।
স্থানীয় সূত্র ও নিহতের স্বজনরা জানান, মাসুদ রানা বসুন্দিয়া মোড়ে বসবাস করলেও তার পিতার বাড়ি ছিল পার্শ্ববর্তী অভয়নগর উপজেলা বনগ্রামে। ওই এলাকার আধিপত্য বিস্তার নিয়ে মুরাদ, শিমুলসহ একটি চক্রের সাথে মাসুদের বিরোধ ছিল। সম্প্রতি বনগ্রাম কাটাখাল এলাকার মসজিদের গ্রিল চুরি হয়। মুরাদ, শিমুলসহ ওই চক্রটি এই গ্রিল চুরির জন্য জুলফিক্কার নামে এক যুবককে অভিযুক্ত করে। জুলফিক্কারের বাড়ি চেঙ্গুটিয়ায় হলেও বনগ্রামের পার্শ্ববর্তী গাইদগাছি গ্রামে শ্বশুর আকবর গাজীর বাড়িতে তিনি বসবাস করেন। ওই চুরির সূত্র ধরে জুলফিক্কারের শ্বশুর বাড়ি যাওয়া বন্ধ করে দেয় মুরাদ-শিমুল চক্র।
বুধবার মধ্যরাত ১২টার দিকে মাসুদ চার সহযোগী ইস্রাফিল, সজিব, সুমন ও মইনুদ্দিনকে সাথে নিয়ে জুলফিক্কারকে তার শ্বশুর বাড়িতে তুলে দিতে যায়। এ খবর পেয়ে রাত ১টার দিকে মুরাদ, শিমুল, বাবু, পিন্টু, হাকিম, আল-আমিনসহ ১০/১২ জন রামদা, লাঠি সোটা, কোদালের আচাড়িসহ দেশিয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মাসুদ ও তার সহযোগীরে উপর হামলা চালায়। এ সময় তারা মসজিদের মাইকে ‘ডাকাত পড়েছে’ বলেও প্রচার করে। বেধড়ক মারপিটের এক পর্যায়ে তাদের ভ্যানে তুলে বনগ্রাম কাটাখাল মোড়ে নিয়ে যায়। সেখানে মাসুদকে শ্বাসরোধে হত্যার পর সবাইকে ফেলে রেখে হামলাকারীরা চলে যায়। পরে খবর পেয়ে অভয়নগর থানা ও বসুন্দিয়া ফাঁড়ি পুলিশ তাদের উদ্ধার করে অভয়নগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক মাসুদকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত ৫ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে শিমুলকে আটক করেছে। শিমুল অভয়নগর উপজেলার প্রেমবাদ গ্রামের হাফিজুর রহমানের ছেলে।
যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি তাজুল ইসলাম জানান, আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব বিরোধের জের ধরে এই মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। এতে মাসুদ রানা নামে একজন নিহত আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন। নিহত মাসুদ রানার বিরুদ্ধে ১৫টি মাদক ও ২টি চাঁদাবাজির মামলা রয়েছে। পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ হত্যার কারণ উদ্ঘাটন ও জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু করেছে।