নিজস্ব প্রতিবেদক
নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আহসান হাবীব খান ভোট কেন্দ্রের কর্মকর্তাদের কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, কেউ যদি জোরাজুরি করে জাল ভোট দিতে চায়, তাহলে পুলিশ ডেকে নিবৃত্ত করবেন। তারপরও ঠেকাতে না পারলে কেন্দ্র বন্ধ করে চলে যাবেন। কিন্তু কোনভাবে জাল ভোট দিতে দেয়া যাবে না।
আহসান হাবিব খান আরও বলেছেন, বাইরের নিরাপত্তা আমরা দেব। আপনারা ভোটকেন্দ্রের ভিতরের নিরাপত্তা দিলে সম্মিলিতভাবে একটি অবাধ সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেওয়া সম্ভব হবে। পথভ্রষ্ট, অতিউৎসাহী, সন্ত্রাসীদের কোনো সুযোগ দেয়া যাবে না। সন্ত্রাসীদের পরিচয় তারা সন্ত্রাসী, তাদের কোন দল নেই। নির্বাচনে কোন গোলযোগ সৃষ্টির পায়তারা করা হলে র্যাব, বিজিবি, সেনাবাহিনী তাদের কঠোর হস্তে দমন করবে।
তিনি আরও বলেন, ভোট অধাধ নিরপেক্ষ করার জন্য ভোট কেন্দ্রে সাংবাদিক কিংবা নির্বাচন পর্যবেক্ষনের সাথে জড়িতরা প্রিজাইডিং অফিসারের নিকট থেকে অনুমতি নয়, তাকে অবহিত করে ভোট কেন্দ্রে প্রবেশ এবং ভেতরে ছবি তুলতে পারবেন। শতভাগ নিরপেক্ষতা নিয়ে নির্বাচন কমিশন কাজ করবে। আগামী নির্বাচনের দিকে দেশি-বিদেশিসহ সকলে তাকিয়ে আছে।
শনিবার যশোরের শার্শা ও মনিরামপুর উপজেলায় ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন। যশোর জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার মোহাম্মদ আবরাউল হাছান মজুমদারের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার ও খুলনা বিভাগীয় নির্বাচন কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির।
পরে শার্শায় আহসান হাবীব খান প্রেসব্রিফিং করেন। তিনি বলেন, নির্বাচনের দিন কোন কেন্দ্রে ভোট ডাকাতির চেষ্টা করা হলে নির্বাচন বন্ধ করে দেয়া হবে। জোরপূর্বক বা জাল ভোট প্রদানে সহায়তার অভিযোগ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী কর্মকর্তাকে সাসপেন্ড বা চাকুরিচ্যুত করা হবে। ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে ভোট কেন্দ্রে আসতে পারে সে জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রধান বিরোধী দল বিহীন নির্বাচন কতটুকু গ্রহণযোগ্যতা পাবে এমন প্রশ্নের জবাবে ব্রিগেডিয়ার আহসান হাবিব বলেন, সংবিধান রক্ষার জন্য নির্বাচন করা হচ্ছে। ৪৪টি নিবন্ধিত দলের মধ্যে ৩৯টি দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। বড় বড় দলগুলো অংশ নিলে ভাল হতো, আমরা তাদেরকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি। তারা নির্বাচনে না এলে আমাদের করার কি আছে?
মণিরামপুরে প্রশিক্ষণ কর্মশালায় নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আহসান হাবীব খান বলেছেন, বর্তমান কমিশন ২২ মাসে ১৩শ’ ভোট করেছে। একটাতেও অনিয়ম, অবিচার পাবেন না। আগামী সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করার বিকল্প নেই। এজন্য ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।
ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে আহসান হাবীব খান বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও লক্ষীপুরে ভোট কেন্দ্র প্রার্থীকে সুবিধা দিতে গিয়ে অনেক শিক্ষক চাকরি হারিয়েছেন। তাদের জন্য মায়া হয়। কিন্তু কোন শিক্ষক প্রার্থীকে সুবিধা দিতে গিয়ে নিজের চাকরি হারান, তবে সেটি দুঃখজনক হবে।
ভোট কেন্দ্রে যদি কেউ জোরাজুরি করে পুলিশ ডেকে নিবৃত্ত করবেন। তারপরও ঠেকাতে না পারলে কেন্দ্র বন্ধ করে চলে যাবেন। পরে ভোট নেয়া হবে। কিন্তু কোনভাবে জাল ভোট দিতে দেয়া হবে না। একজন যদি জাল ভোট দেয়, তার জন্য পোলিং অফিসার, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ও প্রিসাইডিং অফিসার দায়ী থাকবেন।
প্রশিক্ষণ কর্মশালায় মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার জাকির হোসেন সভাপতিত্ব করেন।