নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজধানী ঢাকার মার্কেটগুলোতে একের পর ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে যশোর প্রশাসন। অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টিসহ অগ্নিপ্রতিরোধ ব্যবস্থার বাইরে থাকা মার্কেট ভবন মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা ও পদক্ষেপ নিতে মাঠে নামছে প্রশাসন। রোববার জেলা প্রশাসকের অমিত্রাক্ষরে জেলা মাসিক উন্নয়ন সমন্বয় সভায় এই ঘোষণা দেন জেলা প্রশাসন। এসময় যশোরে মার্কেটগুলোতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে বড়ধরণের ক্ষতির মুখোমুখি হওয়ার আশংকা রয়েছে বলে জানিয়েছেন যশোর ফায়ার ও ডিফেন্স সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মামুনুর রশিদ। সভায় অগ্নিপ্রতিরোধ ব্যবস্থার জন্য মার্কেটগুলোতে জরুরি নিজস্ব ব্যবস্থায় পানির ব্যবস্থা রাখাসহ অগ্নিনির্বাপন যন্ত্রপাতি রাখার পরামর্শ দেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মো. তমিজুল ইসলাম খান।

সভায় জেলা প্রশাসক বলেন, যশোরে এক সপ্তাহ ধরেই তাপমাত্রা বাড়ছে। তাপদাহ এর মধ্যে অল্পতেই যেকোন স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে দ্রুত ছড়ানোর আশংকা রয়েছে। ঢাকাতে একের পর এক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটার কারণে অগ্নি সুরক্ষা বিভাগ থেকে একগুচ্ছ নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রণালয়। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী যশোরের সকল মার্কেটগুলো অগ্নি ঝুঁকিপূর্ণগুলো চিহ্নিত করা ও সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘যশোরের দিন দিন জলাশয় কমে যাচ্ছে। অগ্নিকাণ্ডের সময় সবচেয়ে জরুরি এই পানির উৎস জলাশয় রক্ষায় সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন জেলা প্রশাসক। সম্প্রতি যশোরের চুড়ামনকাটিতে একটি পেপসি কোম্পানির ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডে পানির সংকটের ভয়াবহতা তুলে ধরে ফায়ার ও ডিফেন্স সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মামুনুর রশিদ বলেন, ‘নিজ নিজ এলাকায় পানির উৎস জলাশয় ও পুকুর অকারণে ভরাট করা থেকে বন্ধ থাকার অনুরোধ করেন। একই সাথে যশোর শহরের বিভিন্ন মার্কেটগুলোতে পর্যাপ্ত অগ্নিপ্রতিরোধ ব্যবস্থা রাখার সুপারিশ করেন। যশোর শহরের বড়বাজারে মার্কেট ব্যবস্থাপনায় দুই থেকে তিন লাখ গ্যালন পানি রাখার পরামর্শ দেন। তিনি জানান, ‘শহরের ভবন ও মার্কেটগুলো তালিকা করা হচ্ছে। প্রতিটি ভবন ও মার্কেট প্রতিনিধিদের সচেতনামূলক নির্দেশনা দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
সভায় ভৈরবের পানি দূষণ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম বলেন, ‘ভৈরবের পানি আর ঢাকার বুড়িগঙ্গার পানি এক। ভৈরব নদকে বাঁচাতে সকল দপ্তরের কর্মকর্তাদের এক হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান। এছাড়া আসন্ন ঈদে যশোরের সড়ক নিরাপদ রাখতে সকল সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাজ করার নির্দেশনা দেন। দুর্ঘটনা প্রবণ এলাকাগুলোতে চিহ্নিত করে সচেতনামূলক ক্যাম্পাইন করার জন্য সকল নির্বাহী অফিসারদের নির্দেশনা দেন জেলা প্রশাসক। যশোরে কয়েকদিন ধরে তীব্র তাপদাহ বইছে। এর মধ্যে বিদ্যুতের লোডশেডিং দেখা দিয়েছে। ঈদ ও গরমে লোডশেডিং মুক্ত রাখার ব্যাপারে বিদ্যুৎ বিভাগকে নির্দেশনা দেন জেলা প্রশাসক।
সভায় বক্তব্য রাখেন জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রফিকুল হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম, সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ, যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন অর রশিদ, ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. নাজমুল সাদিক, যশোর ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মামুনুর রশিদ, মণিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমা খানম, প্রেস ক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, সাংবাদিক ফারাজী আহমেদ সাঈদ বুলবুল প্রমুখ।