নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোর সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের অডিটোরিয়ামে বিএনপির কর্মীসভা বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গত রবিবার সন্ধ্যায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনুপ দাশ সভাচলাকালীন সময়ে উপস্থিত হয়ে কর্মীসভা বন্ধ করে দেন বলে জানিয়েছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, প্রশাসনকে অবহিত করে, অডিটোরিয়ামের ভাড়া পরিশোধ করার পরও কেবলমাত্র রাজনীতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে কর্মসূচি করতে দেওয়া হয়নি। তবে অডিটোরিয়ামে কর্মীসভা না করতে পারলেও পাশের একটি জায়গায় কর্মসূচি পালন করেছে নেতাকর্মীরা। কোন অনাকাক্সিক্ষত ঘটনাও ঘটেনি বলে জানা গেছে।
বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিএনপির চলমান আন্দোলন ও সাংগঠনিক কর্মকা- গতিশীল করতে যশোর নগর বিএনপি প্রতিটি ওয়ার্ডে কর্মীসভা করছে। সেই ধারাবাহিকতায় রোববার সন্ধ্যায় সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের অডিটোরিয়ামে নগর বিএনপির ২ নম্বর ওয়ার্ড শাখা কর্মী সভার আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন যশোর পৌরসভার সাবেক মেয়র মারুফুল ইসলাম। এদিন সন্ধ্যায় অনুষ্ঠান শুরু হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার অনুপ দাশ উপস্থিত হন। এসময় তিনি অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেন।
যশোর নগর বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম মুল্লুক চাঁন সোমবার সকালে দৈনিক কল্যাণকে বলেন, সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের অডিটোরিয়ামটি ইজারার মাধ্যমে পরিচালনা হয়। অডিটোরিয়ামটি ইজারা নিয়ে নাম দিয়েছে রজনীগন্ধা কমিউনিটি সেন্টার। তাদের ভাড়ার টাকা পরিশোধ করে এবং প্রশসানকে অবহিত করে নগর বিএনপির ২ নম্বর ওয়ার্ড শাখার কর্মী সভার আয়োজন করে। এমনকি অনুষ্ঠানের সম্পূর্ণ বিষয়টি তাদেরকে অবহিত করা হয়। পরে কর্মী সভা শুরুর কিছু সময় পর একদল পুলিশ সদস্য প্রথমে ঘটনা স্থলে গিয়ে কর্মসূচি সম্পর্কে জানতে চান। পরে তারা জেনে বুঝে চলে যান। এর কিছু সময় পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসে অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেন। আয়োজকরা ২০ মিনিটের মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ করবে বলে জানান তার পরেও অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়। তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে আসেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। তার নির্দেশনায় পাশের একটি জায়গাতে ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি রাশেদ আব্বাস রাজের নিজস্ব কার্যালয়ে তাৎক্ষণিক কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় অনিন্দ্য ইসলাম অমিত প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। সভায় ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতিত্বে রাশেদ আব্বাস রাজের সভাপতিত্বে নগর বিএনপিসহ ওয়ার্ড বিএনপির নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
এ বিষয় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপ দাশ বলেন, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠান হতে যাচ্ছিল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যেহেতু প্রতিষ্ঠানটি স্বাধীনতার স্বপক্ষের একটি প্রতিষ্ঠান। সেখানে কোন রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি শোভা পায় না। সে কারণে অনুষ্ঠানটি হতে দেওয়া হয়নি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওখানে অনুষ্ঠান করতে প্রশাসনের কাছ থেকে কোন অনুমতি দেওয়া হয়নি।
মুক্তিযুদ্ধা কমপ্লেক্সের ইজারাদার শহিদুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় কাউন্সিলর ও ২ নাম্বার ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি রাজ আমার এলাকার বাসিন্দা। তিনি আমাকে বলেছিলেন কয়েকজন বসে একটা ছোট্ট মিটিং করবো। রাজনৈতিক কোন সভা সমাবেশ করবে সেটা বলেনি। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনুষ্ঠানটি বন্ধ করে দেন।
বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত দৈনিক কল্যাণকে বলেন, মুক্তিযুদ্ধা কমপ্লেক্সের অডিটোরিয়ামটি ইজারা দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। ইজারাদারের কাছ থেকে আমরা অনুমতি নিয়েছি। শহরের ওয়ার্ডে চলমান কর্মসূচি উপলক্ষে আমরা আগে থেকেই প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়া ছিলো। এখন প্রশাসন যদি আমাদের কর্মসূচি বন্ধ করে দেয় তাহলে কি করা। এটা সুষ্ঠু গণতন্ত্র হতে পারে না। আমাদের কর্মসূচি সকল বাধা অতিক্রম করে চালিয়ে যাবো। একটি রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া সুষ্ঠু গণতন্ত্র চর্চার অন্তরায় ছাড়া কিছু না।

 
									 
					