নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরে কয়েক দিন ধরে তাপমাত্রা বাড়ছেই। গত সপ্তাহ ধরে যশোরে ৩৯ দশমিক দুই থেকে ৪০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বিরাজ করছে। এ কারণে গোটা জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ভোর থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকলেও দুপুর থেকেই পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে। আকাশ থেকে যেন আগুন ঝরছে! ঈদবাজার হলেও দুপুরের আগেই অনেকটা ফাঁকা হয়ে যায় শহরের পথঘাট। অতিরিক্ত তাপমাত্রায় মহাসড়কের বিটুমিন গলে যাচ্ছে। একটু প্রশান্তি পেতে শিশু-কিশোরেরা ঝাঁপাঝাঁপি করে পুকুর কিংবা নদীতে।
তাপপ্রবাহের কারণে বাইরে বের হলে মনে হচ্ছে আকাশ থেকে আগুন ঝরছে। সকালে একটু বেলা গড়ানোর পরই পথঘাট উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। এ কারণে রাস্তাঘাটে মানুষের চলাচল কমে যাচ্ছে। খুব প্রয়োজন না হলে রোজা রেখে কেউ এমন তাপপ্রবাহের ভেতর বাড়ির বাইরে যাচ্ছেন না। তবে শ্রমজীবী মানুষকে ঠিকই বৈরী পরিবেশের ভেতর কাজ করতে হচ্ছে।
যশোর বিমানবন্দর বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান ঘাঁটি সংশ্লিষ্ট আবহাওয়া দফতর থেকে জানা যায়, শুক্রবার যশোরে সর্বোচ্চ ৪০. ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল। বেলা সাড়ে ৩টার দিকে এই তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ ২৪ শতাংশ। এর আগের দিন যশোরে তাপমাত্রা রেকর্ড হয় ৪০. ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত ৯ এপ্রিল তাপমাত্রা ছিল ৩৯.২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে উঠা নামা করছে। যশোর শহরের ধর্মতলা ও পালবাড়ি খয়েরতলা মহাসড়কের বিটুমিন গলে গেছে। জানতে চাইলে যশোর সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘শুনেছি রাস্তার বিটুমিন গলে যাচ্ছে। অফিস থেকে লোক পাঠিয়েছি সংশ্লিষ্ট এলাকায়। তিনি ফিরে আসার পর বিস্তারিত বলতে পারবো।’ ‘পালবাড়ি খয়েরতলা এলাকার রাস্তা পাঁচ-সাত বছর আগের তৈরি। সড়কে সাধারণত দুটি গ্রেডের বিটুমিন ব্যবহার করা হয়। আগে ৩০ থেকে ৩২ ডিগ্রি তাপমাত্রার জন্য সড়কে ৮০/১০০ গ্রেডের বিটুমিন ব্যবহার করা হতো। পরে গবেষণা করে বেশি তাপমাত্রা সহনশীল ৬০/৭০ গ্রেডের বিটুমিন ব্যবহার করা হচ্ছে। এই গ্রেডের বিটুমিনের দামও বেশি।’
তাপপ্রবাহের কারণে বাইরে বের হলে মনে হচ্ছে আকাশ থেকে আগুন ঝরছে। সকালে একটু বেলা গড়ানোর পরই পথঘাট উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। এ কারণে রাস্তাঘাটে মানুষের চলাচল কমে যাচ্ছে। খুব প্রয়োজন না হলে রোজা রেখে কেউ এমন তাপপ্রবাহের ভেতর বাড়ির বাইরে যাচ্ছেন না। তবে শ্রমজীবী মানুষকে ঠিকই বৈরী পরিবেশের ভেতর কাজ করতে হচ্ছে।
যশোর কলেজের রসায়ন বিভাগের শিক্ষক মহসিন আলী বলেন, ‘সাড়ে ৪টার দিকে শানতলা থেকে পালবাড়ি হয়ে শহরে ঢুকেছি। সূর্যের তেজ যেমন, রাস্তা থেকেও একই রকম ঝাঁজালো তেজ চোখেমুখে লাগছে। মনে হচ্ছে গরম হাড়ি থেকে বাষ্প বের হয়ে চোখ-মুখ পুড়িয়ে দিচ্ছে।’
