যশোরে যুবলীগকর্মী হত্যায় দুই ভাই আটক
নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোরে যুবলীগ কর্মী ইয়াসিন আরাফাত ওরফে হুজুর ইয়াসিন হত্যায় অংশ নেয়া হিটার স্বর্ণকার রানা ও তার ভাই রুবেলকে আটক করেছে ডিবি পুলিশ। হত্যাকান্ডের কয়েক ঘন্টার মধ্যেই খুলনার শিরোমনিতে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আহত অবস্থায় আটক করা হয়।
ডিবি পুলিশের ওসি রূপন কুমার সরকার জানান, আটক স্বর্ণকার রানা ও রুবেলের বাড়ি শহরের শংকরপুর চোপদারপাড়ায়। আহত হওয়ায় তাদেরকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে, যশোরে যুবলীগ কর্মী ইয়াসিন আরাফাত ওরফে হুজুর ইয়াসিন হত্যার ঘটনায় যশোর কোতয়ালি মডেল থানায় ৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ৫/৬ জনকে আসামি করে লিখিত এজাহার দিয়েছেন নিহতের স্ত্রী শাহানা আক্তারা নিশা।
এজাহার সূত্রে জানা গেছে, শংকরপুর চোপদারপাড়া এলাকার মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে স্বর্ণকার রানা, রুবেল হোসেন, হাফিজুর রহমান, আব্দুল কাদের ওরফে শান্ত, শংকরপুর কবরখানা এলাকার জীবন সিকদার, শফিক, ময়না, বদিউজ্জামান ওরফে ধনি, শফিকুল ইসলামসহ অজ্ঞাত আরো ৫/৬ জনকে আসামি করে এজাহার দায়ের করা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জানায়, হুজুর ইয়াসিনকে কোপানোর সময় তার সহযোগী রাজিবুলসহ অন্যরা হামলাকারী স্বর্ণকার রানা ও রুবেলসহ অন্যদের প্রতি চেয়ার ছুড়ে প্রতিহত করার চেষ্টা চালান। চেয়ারের আঘাতে আহত হয় স্বর্ণকার রানা ও রুবেল। হত্যার পর তারা আহত অবস্থায় পালিয়ে খুলনার শিরোমনিতে গিয়ে সেখানকার লিন্ডা হাসপাতালে ভর্তি হন। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ডিবি পুলিশ বুধবার রাত ৩টার দিকে সেখানে অভিযান চালিয়ে আহত অবস্থায় তাদেরকে আটক করে।
পুলিশ জানায়, সাড়ে ৫ বছর আগে হুজুর ইয়াসিন ও তার সহযোগীরা পূর্ব শত্রুতার কারণে স্বর্ণকার রানার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও তাকে মারধর করে পা ভেঙে দিয়েছিল। এ ঘটনায় প্রতিশোধ নেয়ার জন্য সুযোগ খুঁজছিলেন স্বর্ণকার রানা। স্বর্ণকার রানার আরেক ভাই হাফিজুরকে এলাকায় দেখতে পেলেই হুমকি ধামকি দিয়ে তাকে তাড়িয়ে দিতেন হুজুর ইয়াসিন। ঘটনার দিন বুধবার বিকেলে হাফিজুর শংকরপুর চোপদারপাড়াস্থ রেললাইন সংলগ্ন ব্রাদার্স ক্লাবে বসে খেলা করছিল।
এ সময় ক্লাবঘরে ঢুকে তাকে চড় থাপ্পর মেরে তাড়িয়ে দেয় হুজুর ইয়াসিন। বিষয়টি মোবাইল ফোনে স্বর্ণকার রানাকে জানায় হাফিজুর। একেতো সাড়ে ৫ বছর আগে মারধরে কারণে পা ভেঙেছে, তারপর ভাইকে চড়থাপ্পর মারায় ক্ষেপে যায় স্বর্ণকার রানা। পরে রানা, রুবেল, হাফিজুরসহ তারা ৪ ভাই এবং আরো কয়েকজন সহযোগী ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে রাত সাড়ে ৭টার দিকে ক্লাবঘরে হামলা চালায়। এ সময় তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাস খেলারত ইয়াসিনকে এলোপতাড়ি কোপায়। তাকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসেন ক্লাবঘরে উপস্থিত হুজুর ইয়াসিনের সহযোগীরা। তারা চেয়ার ছুঁড়ে প্রতিরোধের চেষ্টা করলে তাতে আহত হন রানা ও রুবেল।
কোতোয়ালি থানা পুলিশের ওসি তাজুল ইসলাম জানান, হত্যার ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি। গত বুধবার রাতে প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসীদের হাতে খুন হয় হুজুর ইয়াসিন।