নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরে সক্রিয় হচ্ছে গ্রাম আদালত। গত এক বছরে ২২ শ ১৪টি মামলা দায়ের হয়েছে। এরমধ্যে নিষ্পত্তিকৃত মামলার সংখ্যা ২১১৭টি। অর্থাৎ ৯৫ দশমিক ৬২ ভাগ মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। এসময় আদালতের মাধ্যমে দুই কোটি ঊনষাট লক্ষ তের হাজার নয়শত সত্তর টাকা ক্ষতিপূরণ আদায় ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষকে দিয়েছেন আদালত।
এদিকে, উচ্চ আদালতের মামলা জট কমানোর লক্ষ্যে সরকার গ্রাম আদালতকে সক্রিয়করণ করছে। অথচ গ্রাম আদালত সম্পর্কে মানুষ জানে না। মানুষের মধ্যে ব্যাপক প্রচারণা বৃদ্ধির জন্য সমন্বয় সভা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক রফিকুল হাসান। সর্বশেষ গতকালও (৪ মে) জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সভা হয়েছে।
বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ ৩য় পর্যায় প্রকল্পের যশোর ডিস্ট্রিক্ট ম্যানেজার অ্যাড. মহিতোষ কুমার রায় এ সভায় বলেন, প্রকল্প শুরুর পর ফেব্রুয়ারি ২০২৪ থেকে মার্চ ২০২৫ যশোর জেলায় গ্রাম আদালতে মামলা দায়ের হয় ২২১৪টি। এর মধ্যে সরাসরি ইউনিয়ন পরিষদে দায়ের হয় ১৮৫৫ টি এবং জেলা আদালত থেকে পাঠানো হয় ৩৫৯টি। এর মধ্যে দেওয়ানি ১১০৭টি ও ফৌজদারি ১১০৭ টি। দায়েরকৃত মামলার মধ্যে আবেদনকারী পুরুষ ১৫২৬ (৬৮.৯৩%) এবং নারী ৬৮৮ (৩১.০৬%) জন। নিষ্পত্তিকৃত মামলার সংখ্যা ২১১৭টি (৯৫.৬২%)। মোট ক্ষতিপূরণ আদায় দুই কোটি ঊনষাট লক্ষ তের হাজার নয়শত সত্তর টাকা। যা ক্ষতিগ্রস্থ পক্ষকে দেওয়া হয়েছে।
সমাজসেবা অধিদপ্তর যশোরের উপপরিচালক অসীত কুমার রায় বলেন, গ্রাম আদালত স্থানীয়ভাবে বিরোধ মীমাংসার অত্যন্ত কার্যকর ব্যবস্থা। সরকার গ্রাম আদালতকে সক্রিয়করণে বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। গ্রাম আদালত সম্পর্কে এখনো মানুষ ব্যাপকভাবে জানে না। সরকারের একার পক্ষে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা সম্ভব নয়। সে কারণে সরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের সচতনতামূলক কাজের মধ্যে গ্রাম আদালতকে একটি এজেন্ডা হিসেবে গ্রহণ করে মানুষকে সচেতন করতে হবে।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার আব্দুল আহাদ বলেন, বাংলাদেশে প্রচলিত আদালতে বিচারকের সংখ্যা সীমিত এবং মামলার পরিমাণ অনেক বেশি। সুতরাং এই সীমিত সংখ্যক বিচারকের পক্ষে এত মামলা নিষ্পত্তি করা অত্যন্ত সময় সাপেক্ষ। এক্ষেত্রে গ্রাম আদালত সক্রিয় করা গেলে কম সময়ে, স্বল্প খরচে হয়রানিমুক্ত হয়ে স্থানীয় বিরোধ স্থানীয়ভাবে নিষ্পত্তি হবে। আর এর জন্য গ্রাম আদালত সম্পর্কে ব্যাপক জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা খুবই জরুরি। সেজন্য সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ও গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সচেতনতামূলক কর্মসূচির মাধ্যমে গ্রাম আদালত সম্পর্কে সমাজের মানুষকে সচেতন করবেন।