নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর ও ঝিকরগাছা
যশোরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের সহযোগিতায় ২৯টি বেসরকারি ক্লিনিকে অভিযান চালিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। এরমধ্যে চারটি ক্লিনিককে সিলগালা করে বন্ধ ঘোষণা ও চারটিকে জরিমানা করা হয়েছে। বাকীগুলোকে বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরে সতর্ক করেছেন স্বাস্থ্য বিভাগ। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত জেলার সদর ও ঝিকরগাছা উপজেলাতে এসব অভিযান চালানো হয়েছে। সদরের ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. নাবিদ হোসেন ও ঝিকরগাছা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কেএম মামুনুর রশীদের নেতৃত্বে এসব অভিযান পরিচালনা করা হয়। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের মিডিয়া সেলে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
সিলগালা করা ক্লিনিক হলো, যশোর শহরের ঘোপ সেন্ট্রাল রোডের আধুনিক হাসপাতাল, সদরের খাজুরার মা জেনারেল হাসপাতাল এবং ঝিকরগাছায় দুটি ক্লিনিক সালমা মেডিকেল সেন্টার ও সালেহা ক্লিনিক।
যশোর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মীর আবু মাউদ জানান, স্বাস্থ্য বিভাগের নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার যশোর শহরের বেসরকারি ক্লিনিকগুলোতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে পালবাড়ী এলাকার হাসিনা ক্লিনিকের লাইসেন্স না পাওয়ায় এবং অপারেশন থিয়েটারে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের কারণে ৫ হাজার টাকা জরিমানা এবং অপারেশন থিয়েটার সিলগালা করে দেওয়া হয়। এছাড়া একই অভিযোগে ঘোপ সেন্ট্রাল রোড এলাকার আধুনিক হাসপাতাল, সদরের খাজুরা মা জেনারেল হাসপাতালকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা ও সিলগালা এবং শহরের ল্যাবজোন ক্লিনিক ও পপুলার হাসপাতালকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে জেলার সব উপজেলাগুলোতে একই অভিযান চালানো হবে। এছাড়া শহরের হয়রত গরীব শাহ সড়কের জেনেসিস হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে নানান সমস্যা তুলে ধরে সতর্ক করা হয়েছে।
এদিকে, যশোরের ঝিকরগাছায় নিবন্ধন নবায়ন না থাকায় দুইটি ক্লিনিক ও রোগ নির্ণয়কেন্দ্র (ডায়াগনস্টিক সেন্টার) বন্ধ করে দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কেএম মামুনুর রশীদের নেতৃত্বে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. রশিদুল আলম অভিযান চালিয়ে এসব ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক বন্ধ করে দেয়। এদিকে পরিষ্কার পরিছন্নতা না থাকায় ঝিকরগাছা প্রাইভেট ক্লিনিককে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। নিবন্ধনের মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় সালেহা ক্লিনিক এ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও সালমা মেডিকেল সেন্টারের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়।
যশোরের সিভিল সার্জন ডা. বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস জানান, স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী যশোরের দুটি উপজেলায় ২৯টি বেসরকারি ক্লিনিকে অভিযান চালানো হয়েছে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকা এবং অস্বাস্থ্যকার পরিবেশে চিকিৎসা দেওয়াতে চারটি ক্লিনিককে সিলগালা করে বন্ধ ঘোষণা ও চারটিকে জরিমানা করা হয়েছে। যে সব স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সর্তক করা হয়েছে; তাদের স্বাস্থ্য সেবা প্রতিপালনগুলো না মানলে ফের অভিযান চালিয়ে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের গুণগতমান নিশ্চিত করতে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি মানহীন স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান ও ভুয়া চিকিৎসকদের থেকে দূরে থাকতে এবং এ সম্পর্কে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করার জন্য সর্বস্তরের মানুষ, বিশেষত সচেতন নাগরিক ও গণমাধ্যম কর্মীদের সক্রিয় অংশগ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।