নিজস্ব প্রতিবেদক
আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধে যশোরে চিহ্নিত সন্ত্রাসী রমজান আলীকে (৩০) কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষ পিচ্চি রাজা গ্রুপের সদস্যরা। গতকাল শুক্রবার রাতে শহরের রেলগেট এলাকায় এই ঘটনার পর পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে। নিহত রমজান আলী একই এলাকার মাদক দম্পতি রেখা-ফায়েকের ছেলে। তার বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, বোমাবাজি ও মাদকসহ ৩২টি মামলা রয়েছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছে, নিহত রমজান আলী ও তার ভাই সাগর দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় সন্ত্রাসীমূলক কর্মকাণ্ড করে আসছে। সে কারণে রেলগেট পশ্চিম এলাকায় সাগর-রমজান বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকে। সম্প্রতি একই এলাকায় মজিবর রহমানের ছেলে রাজা ওরফে পিচ্চি রাজার নেতৃত্বে একটি কিশোর গ্যাং বাহিনী নিয়ন্ত্রণ নেয়ার জন্য চেষ্টা চালিয়ে আসছিল। প্রায় মাস দুয়েক হলো সারা যশোরেই হত্যা, ছুরিকাঘাতে আহত, ছিনতাইসহ নানাবিধ অপরাধে অপরাধীরা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। এতে করে জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। কয়েকটি ঘটনায় পিচ্চি রাজাদের সম্পৃক্ততার কারণে রাজার ও তার কিশোর গ্যাংয়ের কয়েক সদস্যের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলা রুজু হয়। ওই মামলায় পিচ্চি রাজা গাঢাকা দিয়ে থাকলেও এলাকায় তার আচারণ-বিচরণ দেখা যায়। আর তাই তাকে (রাজাকে) ধরিয়ে দেয়ার জন্য সন্ত্রাসী রমজান আলী পুলিশের কাছে তথ্য আদান-প্রদান করছিলেন বলে সন্দেহ করে রাজা। ফলে রমজান আলীকে খুন করতে নানাবিধ পরিকল্পনাসহ সুযোগের অপেক্ষায় থাকে রাজা। ৮ মার্চ রাত ১০টার দিকে রেলগেট পশ্চিমপাড়া বাবুর বাড়ির সামনে রমজানকে পেয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যায় পিচ্চি রাজার গ্রুপ। খবর পেয়ে স্থানীয়রা উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু কর্তব্যরত চিকিৎসক রমজান আলীকে মৃত ঘোষণা করেন।
উল্লেখ্য, রমজান ও সাগর রেলগেট পশ্চিমপাড়ার মাদক দম্পতি রেখা-ফায়েকের ছেলে। তাদের দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র, ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, বোমাবাজি, মাদক ও মারামারিসহ তিন ডজন করে মামলা রয়েছে। পাশাপাশি রমজানের মা রেখার বিরুদ্ধেও অন্তত দুই ডজন মাদকের মামলা রয়েছে।
এদিকে এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এই ঘটনার কারণ উদঘাটন এবং দোষীদের আটকের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালি থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) কেএম শফিকুল আলম চৌধুরী।
