নিজস্ব প্রতিবেদক
বিগত বছরগুলোর চেয়ে এবার যশোর অঞ্চলের মহাসড়ক ও জেলা সড়কগুলোর অবস্থা অনেকটাই ভালো। দুই-এক জায়গায় সামান্য সমস্যা থাকলেও চলাচলের উপযোগী করার কাজ চলছে। এছাড়া ঈদের আগে-পরে সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিয়মিত পুলিশি টহল জোরদার করা হবে। যাত্রীদের সেবার মান বৃদ্ধি ও সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ফিটনেস বিহীন যানবাহন বন্ধ রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ফলে এবার নির্বিঘ্ন হবে ঈদযাত্রা।
রোববার আসন্ন ঈদুল ফিতর উদ্যাপন উপলক্ষে সড়কপথে যাত্রীসাধারণের যাতায়াত নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করার লক্ষে যশোরসহ বিভিন্ন জেলা প্রশাসন ও সড়ক বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি মতবিনিময় সভা হয়েছে। চলাচলসহ সড়কের সব ধরনের সমস্যা সমাধানে বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি। এই সভায় সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাহজাহান খান, সড়ক ও সেতু সচিব এবিএম আমান উল্লাহ নুরী, বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব এনায়েত উল্লাহ ও যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
যশোর থেকে ভার্চুয়ালি সভায় অংশ নেন যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান, পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার, সড়ক ও জনপথ বিভাগ যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ।
ঈদ যাত্রা যাতে নির্বিঘ্ন হয়, নিরাপদ হয় এবং যানজটমুক্ত হয় সেই লক্ষ্যেই নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। –মো. তমিজুল ইসলাম খান, জেলা প্রশাসক, যশোর
সভা শেষে জানানো হয়, যশোর অঞ্চলে জাতীয় সড়ক রয়েছে ৭টি, আঞ্চলিক মহাসড়ক ২টি ও জেলা সড়ক আছে ৯টি। এসব সড়কগুলোতে অন্তত ২১টি রুটে বাস চলাচল করে। কয়েকবছর ধরে সড়কগুলো নাজুক থাকলেও সম্প্রতি এসব সড়কগুলোতে সংস্কার ও পুনঃসংস্কার করার ফলে যানচলাচল নির্বিঘ্ন হয়েছে। এর মধ্যে দুই-এক জায়গায় সমস্যা থাকলেও ঈদ যাত্রার আগে সংস্কারের কাজ চলমান রয়েছে। ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সংশ্লিষ্ট সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে দায়িত্বের সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, যার যার যে দায়িত্ব তিনি সেভাবে পালন করুন। সবচেয়ে বড় ঘাটতি আমাদের শৃঙ্খলার। সড়কের ক্ষেত্রেও সেটা কার্যকর হয়নি। পরিবহনেও হয়নি। আরও অনেক জায়গায় ছয় লেন বা আট লেন করার পরিকল্পনা আছে। তবে ডিসিপ্লিন কীভাবে কার্যকর করতে পারা যাবে সেটাই সবচেয়ে চ্যালেঞ্জ। ঈদযাত্রায় মানুষের ভোগান্তি কমাতে যেকোন ধরণের পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্মাণাধীন সড়ক খননে অযথা সংস্কারের নামে মানুষ যেন ভোগান্তিতে না পড়ে এজন্যও নির্দেশনা দেন সড়ক ও সেতুমন্ত্রী।
যশোর-নড়াইল সড়কে যে ২০ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কারের কাজ চলমান রয়েছে সেটিও দ্রুত শেষ করা হবে। আবুল কালাম আজাদ, নির্বাহী প্রকৌশলী, যশোর সওজ
জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান বলেন, ‘ঈদ যাত্রা যাতে মানুষের নির্বিঘ্ন হয়, নিরাপদ হয় এবং যানজটমুক্ত হয় সেই লক্ষ্যেই নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পদক্ষেপের অংশ হিসাবে যশোর অঞ্চলের সড়কগুলো শৃঙ্খলা ফিরাতে ইতোমধ্যে ট্রাফিক বিভাগকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যশোরের ৮টি উপজেলায় পর্যাপ্ত সংখ্যক মোবাইল কোর্ট থাকবে। একই সাথে ট্রাফিক পুলিশ ও পরিবহন মালিক শ্রমিক কাজ করবে। সবার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় নিরাপদে মানুষের ঘরে ফেরা এবং ঈদ শেষে যাতে কর্মস্থলে যোগ দিতে পারেন সেই ব্যবস্থায় কোন ঘাটতি রাখা হবে না।
যশোর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ বলেন, যশোর অঞ্চলে কোন সড়ক খারাপ নেই। কিছু কিছু জায়গায় পিচের সমস্যা থাকলেও সেগুলো সংস্কারের কাজ চলমান রয়েছে। এছাড়া যশোর-নড়াইল সড়কে যে ২০ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কারের কাজ চলমান রয়েছে সেটিও দ্রুত সংস্কার করা হবে। আশা করি যশোর অঞ্চলের মানুষের ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন হবে।
আরও পড়ুন:ক্রেতার সাথে অশোভন আচরণের পোস্ট ফেসবুকে ভাইরাল
