নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোর আইটি পার্কের ৩৫ কোম্পানির মালিক পক্ষ, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ব্যবসায়িক ক্ষতিপূরণসহ বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন। বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় তারা এ সমাবেশ করেন। এসময় হাইটেক পার্ক অথরিটির এমডির পদত্যাগ, বিগত সরকারের দালাল টেকসিটির কার্যক্রম বন্ধ, ভাড়া কমানো, ভৌতিক বিদ্যুৎ বিলের সমাধান, পার্কে ব্যবসায়িক পরিবেশ সৃষ্টির দাবি জানানো হয়।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, প্রায় ৬ মাস হতে চলেছে বিগত সরকারের দালাল টেকসিটির কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার কথা থাকলেও তা সচল রয়েছে। তারা একের পর এক ব্যবসায়িকদের সাথে সাংঘর্ষিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। একই সাথে বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক অথরিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক একেএম আমিরুল ইসলাম কোন বিনিয়োগকারীদের সাথে দেখা বা কথা বলেন না। পার্কের নানান অংসগতি থাকলেও তার সুরাহার কোন উদ্যোগ তিনি নেন না। এমনকি যশোর সফটওয়্যার পার্ক পরিদর্শনে এসেও কোন বিনিয়োগকারীদের সাথে আলোচনায় বসেননি। অথচ তিনি মিটিং করেন টেকসিটির কর্মকর্তাদের সাথে। ৫ আগস্টের পর কিভাবে ওই টেকসিটি এখনো এই পার্কে অবস্থান করে। এটা আমরা জানতে চাই।
প্রথমে একটি বড় মিছিল পার্কের এমটি বিল্ডিংয়ের সামনে থেকে বিক্ষোভে অংশকারীরা শ্লোগানে বলতে থাকেন উদ্যোক্তার উপর জুলুম কেন আইসিটি জবাব চাই। ফ্যাসিস্টের প্রেতাত্মা দূর হও, নিপাত যাও। বৈষম্যহীন বাংলায়, ফ্যাসিস্টের ঠাঁই নাই। উদ্যোক্তার কান্না, বৃথা যেতে দেবো না। ভাড়া, বিদ্যুৎ জাস্টিস যথাযথ হওয়া চাই। চাইতে এলাম অধিকার ফ্যাসিস্ট বলে পার্ক ছাড়। অনেক হয়েছে রক্তক্ষরণ এবার চাই ক্ষতিপূরণ। এক দুই তিন চার, ভাড়া বিদ্যুৎ ঠিক কর। পরে তারা উত্তর গেটের যশোর-খুলনা মহাসড়কে অবস্থান নেয়।
যশোর সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক ইনভেস্টরস এসোসিয়েশনের উদ্যোগে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন, সংগঠনের সভাপতি আহসান কবীর, সহসভাপতি ইমানুর রহমান ইমন, সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ শাহজালাল, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মহিদুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ নাহিদুল ইসলাম। আরো বক্তৃতা করেন বিনিয়োগকারী জাকারিয়া হোসেন শুভ, ভিক্টর সাহা। সভাপতিত্ব করেন বিক্ষোভ সমাবেশ বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক পারভেজ মাহমুদ হিরা। এতে ৩৫টি কোম্পানির মালিক ও অফিস প্রধানরা অংশ গ্রহণ করে।
বক্তারা আরো বলেন, টেকসিটির দুর্নীতি, অনিয়ম-অব্যবস্থাপনাও ছিল ওপেন সিক্রেট। অসম, গণবিরোধী এই চুক্তি বাতিলের দাবিতে স্থানীয় বিনিয়োগকারীরা দীর্ঘদিন আন্দোলন করে আসছেন।
তারা আরো বলেন, বিগত সরকারের অলিগার্ক ওয়াহেদ শরীফের কোম্পানির হাত থেকে সরকারি পার্কটিকে অবমুক্ত করা, তাদের অনিয়ম-দুর্নীতির অনুসন্ধান করা, বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে আদায়যোগ্য স্পেস রেন্ট, সার্ভিস চার্জ ও বিদ্যুৎ বিল বাংলাদেশ হাইটেক পার্কের অ্যাকাউন্টে গ্রহণ, যশোরের বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ স্পেস রেন্ট নির্ধারণ, বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান করে যৌক্তিক বিল প্রদান ও আগে ইস্যু করা ভৌতিক বিল প্রত্যাহারসহ নানা দাবি নিয়েও কথা বলেন আন্দোলনকারীরা।
এর আগে ১০ দফা দাবিতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক যশোরের বিনিয়োগকারীরা। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা এক সভায় টেকসিটিকে বাতিল করার সিদ্বান্ত দিলেও তা এখনো বাস্তবায়ন হয়নি বলেও দাবি তোলেন বিক্ষোভকারীরা।