নিজস্ব প্রতিবেদক
আজ শুক্রবার ঐতিহ্যবাহী যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির বার্ষিক নির্বাচন। এ নির্বাচনে ১৩ পদের বিপরীতে ২২ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরমধ্যে সাবু-গফুর ঐক্য প্যানেলের ১৩ প্রার্থী ও লতিফ-ছোট ঐক্য পরিষদে ৮ প্রার্থী এবং সাধারণ সম্পাদক পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে একজন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের ব্যানারে সাবু-গফুর ঐক্য প্যানেলে ১৩ পদের মধ্যে সভাপতি পদে সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, সহসভাপতি পদে গোলাম মোস্তফা ও বাসুদেব বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক পদে এমএ গফুর, যুগ্ম সম্পাদক পদে নূর আলম পান্নু, সহকারী সম্পাদক পদে সেলিম রেজা ও আশরাফুল আলম, গ্রন্থাগার সম্পাদক পদে কামরুল হাসান সোহেল এবং কার্যকরী সংসদ সদস্য পদে মঞ্জুরুল মাহমুদ লিটু, মৌলুদা পারভীন, রেহেনা খাতুন, শাহাজাহান কবির বিপ্লব ও মেহেদী ইমাম বাপ্পী নির্বাচন করছেন।
লইয়ার্স কাউন্সিলের লতিফ-ছোট ঐক্য পরিষদের ৮ পদের প্রার্থীরা হলেন সভাপতি পদে এমএ লতিফ, সহসভাপতি পদে আলমগীর সিদ্দিক (১), সাধারণ সম্পাদক পদে আবু মোর্ত্তজা ছোট, যুগ্ম সম্পাদক পদে আবুল করিম মন্ডল, গ্রন্থগার পদে এসএম শাহরিয়ার হক, কার্যকারী সংসদ পদে শরিফুল ইসলাম ও আজহারুল ইসলাম।
আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের মূল আকর্ষণ সাধারণ সম্পাদক পদ। এপদে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞ ও জনপ্রিয় আইনজীবী নেতা আবু মোর্ত্তজা ছোট ও বর্তমান সাধারণ সম্পাদক এমএ গফুরের মধ্যেই শেষ পর্যন্ত লড়াই হবে। বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের কোন প্রার্থী নেই এবারের নির্বাচনে। সেহেতু এ পরিষদের সদস্যদের যে প্রার্থী কাছে টেনে নিতে পারবেন তার পাল্লাই ভারি হবে বলে সাধারণ আইনজীবীদের অভিমত।
অপরদিকে সভাপতি পদে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরমের সাবু-গফুর ঐক্য প্যানেলের সভাপতি পদে সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু ও লইয়ার্স কাউন্সিলের লতিফ-ছোট ঐক্য পরিষদের আব্দুল লতিফ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু জেলা বিএনপির সভাপতি ও পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি)। জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের তিনি অন্যতম নীতিনির্ধারক। অপরদিকে আব্দুল লতিফ দীর্ঘ দিন ধরে সমিতির রাজনীতির সাথে সরাসরি জড়িত। তিনি লইয়ার্স কাউন্সিলের সভাপতি। সমিতির নির্বাচনে আবুল লতিফের অভিজ্ঞতা রয়েছে। তিনি কয়েকবার বিপুল ভোটের ব্যবধানে সহসভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। এ বারের নির্বাচনে তিনি সভাপতি পদে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী।
আইনজীবীরা বলছেন, দুইটিই শক্তিশালী প্যানেল। সভাপতি পদে দুই প্যানেলের দুই প্রার্থী থাকলেও সাধারণ সম্পাদক পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন কাজী রেফাত রেজওয়ান সেতু। সেক্ষেত্রে সাধারণ সম্পাদক পদে হবে ত্রিমুখী লড়াই।
আইনজীবীদের মতে, এবারের নির্বাচনের মূল আকর্ষণ সাধারণ সম্পাদক পদ। বর্তমান সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু মোর্তজা ছোট দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞ ও জনপ্রিয় আইনজীবী নেতা। এরআগেও একাধিকবার তারা একই পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। হাড্ডাহাড্ডি লাড়াইয়ে কেউ হেরেছেন কেউ জিতেছেন। তাদের রয়েছে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা। অন্যদিকে তরুণ আইনজীবী ব্যারিস্টার কাজী রেফাত রেজওয়ান সেতুও শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে উঠে এসেছেন। তার বাবা আব্দুস শহীদ লাল সমিতির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করায় পারিবারিকভাবে তারও একটি ভোটব্যাংক রয়েছে।
এছাড়া তরুণ প্রজন্মের একটি অংশ রয়েছে তার পক্ষে। ফলে পদটি নিয়ে তীব্র প্রতিযোগিতা দেখা যাবে। এছাড়া সভাপতি পদেও বিএনপি ও জামায়াতপন্থী প্যানেলের মধ্যে কঠিন লড়াই হবে বলে মনে করছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরা।
নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মোহসীন আলী জানিয়েছেন, নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আইনজীবী সমিতির ১ নম্বর ভবন মিলনায়তনে ১০ টা বুথে সকাল ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে। এরমধ্যে দুপুর ১টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত জুমার নামাজের জন্য বিরতি থাকবে। এবারের নির্বাচনে ৫৩৬ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে এক বছরের জন্য নেতা নির্বাচন করবেন।
