নিজস্ব প্রতিবেদক
নিয়মের তোয়াক্কা না করে যশোর মিনিবাস ও বাস মালিক সমিতির সদস্যভুক্ত ৪২টি বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন কালীগঞ্জ মোটর মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ। এবিষয়ে তাদেরকে মীমাংসায় আহ্বান জানানো হলেও তারা কোনো কর্ণপাত করেননি। সে কারণে কালীগঞ্জ মোটর মালিক সমিতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি।
প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে যশোর-চুয়াডাঙ্গা সড়কে আপাতত শাপলা এক্সপ্রেস চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে যাত্রীসাধারণের কথা বিবেচনা করে মঙ্গলবার থেকে যশোর-চুয়াডাঙ্গা ভায়া চৌগাছা, কোটচাঁদপুর রুট দিয়ে সীমিত সংখ্যক বাস চলাচল করবে বলেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সোমবার যশোর জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কার্যালয়ে খুলনা বিভাগের ১০টি জেলার ২৫টি বাস মালিক-শ্রমিক সংগঠন নেতৃবৃন্দের এক যৌথ সভায় এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদ আল লতিফ খোকা। সভায় সভাপতিত্ব করেন যশোর জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি পবিত্র কাপুড়িয়া। সভায় মালিক-শ্রমিক নেতৃবন্দ গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০১৪ সালে এমপি হওয়ার পর কালীগঞ্জের এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার যশোর, কালিগঞ্জ, চুয়াডাঙ্গা তিন সমিতির নেতাদের ডেকে অতিরিক্ত ১৪টি গাড়ি যশোর-চুয়াডাঙ্গা রুটে চলাচলের জন্য শাপলা এক্সপ্রেসে জোরপূর্বক অন্তর্ভুক্ত করে দেন। এসব গাড়ি ওই এলাকার স্থানীয় রুটে চলাচল করলেও তারা এক্সপ্রেস সার্ভিসের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়। অতিরিক্ত ১৪টি বাস অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় যশোর-চুয়াডাঙ্গা সড়কে শাপলা এক্সপ্রেসে শিডিউল বিপর্যয়সহ নানাবিধ সমস্যার সৃষ্টি হয়।
শনিবার (১২ জুলাই) কালীগঞ্জ মোটর মালিক সমিতি অন্যায়ভাবে যশোর সমিতিভুক্ত ৪২টি বাস যশোর-চুয়াডাঙ্গা রুটে চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। এমনকি যশোর মিনিবাস ও বাস মালিক সমিতির একটি বাস কালীগঞ্জ মোটর মালিক সমিতির সভাপতি ফরিদ উদ্দিন অবৈধভাবে আটকে রেখেছেন। এসব সমস্যা নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে সোমবার যশোর জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কার্যালয়ে এক যৌথ সভার আয়োজন করা হয়। কিন্তু, কালীগঞ্জ মোটর মালিক সমিতির কোনো নেতা সেই সভায় উপস্থিত না হওয়ায় ক্ষুব্ধ হন ১০টি জেলার ২৫টি সংগঠনের নেতারা। নেতৃবৃন্দ সভায় অবিলম্বে কালীগঞ্জ মোটর মালিক সমিতির রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার দাবি জানান। সভায় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ জানান, তারা ফিরে যেয়ে সকল সমিতির নেতৃবৃন্দকে চিঠি দেবেন। একইসাথে বৃহস্পতিবার ঢাকাতে ডাকবেন জেলার নেতাদের। সেখানে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক সৈয়দ রেজাউল করিম। বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের খুলনা বিভাগীয় সভাপতি রবিউল ইসলাম রবি, যশোর জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান লিটন, যশোর বাস মালিক সমিতির সভাপতি বদরুজ্জামান বাবলু, যশোর মিনিবাস ও বাস মালিক সমিতির সভাপতি মুসলিম আলী পাপ্পু, যশোর জেলা পরিবহন সংস্থা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোর্তুজা হোসেন, সহসাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ ফুলু, যশোর জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন (৪৬২) বিশ্বনাথ ঘোষ বিশু, চুয়াডাঙ্গার মালিক সমিতির সভাপতি বকুল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মঈন উদ্দিন, চুয়াডাঙ্গা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি এম জেনারেল ইসলাম, কোটচাঁদপুর সাবেক পৌর মেয়র সালাউদ্দিন বুলবুল শিডল, জামায়াতের নায়েবে আমির মুয়াবিয়া হোসেন, সাবেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নরুজ্জামান, ছাত্র সমন্বয়ক হৃদয় আহমেদ, চৌগাছার সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান, মহেশপুরে সভাপতি এম এ ওয়াদুদ, সাধারণ সম্পাদক সোমেন কুমার নাথ, খাজুরা মালিক সমিতির সভাপতি তারেক হোসেন এবং কেশবপুর কমিটির সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন।