নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে বৈকালিক ‘প্রাইভেট চেম্বার’। কিন্তু প্রচার না থাকায় উদ্বোধনের প্রথম দিনে (৩-৬টা) তিন ঘণ্টায় একজন মাত্র চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন। বিপরীতে বেসরকারি হাসপাতালে ছিল রোগীর দীর্ঘ লাইন।
মঙ্গলবার দুপুরে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যশোর জেনারেল হাসপাতালসহ ১৩২টি সরকারি হাসপাতালে বৈকালিক ‘প্রাইভেট চেম্বার’ উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। যশোর জেনারেল
হাসপাতালের সভাকক্ষে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন অর রশীদ। উপস্থিত ছিলেন যশোর মেডিকেল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ডা. এনকে আলম খান, হাসপাতালের আরএমও ডা. পার্থ প্রতিম চক্রবর্তী, সহকারী অধ্যাপক গৌতম কুমার আচার্য্য, সহকারী অধ্যাপক আব্দুর রহিম মোড়ল, কনসালটেন্ট (মেডিসিন) ডা. মধুসূদন পাল, কনসালটেন্ট (শিশু) ডা. আব্দুস সামাদ, জেলা স্বাচিপের সদস্য সচিব ডা. গোলাম মোর্তুজা প্রমুখ।
যশোর জেনারেল হাসপাতালে সপ্তাহে ৬দিন (সরকারি ছুটির দিন ব্যতিত) বেলা তিনটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত গাইনি, মেডিসিন ও সার্জারি বিশেষজ্ঞ (তিন চিকিৎসক) রোগী দেখবেন। এ সময়ে তারা সরকার নির্ধারিত চিকিৎসকের সর্বনি¤œ ২০০ থেকে ৫০০ টাকা ফি নেবেন।
উদ্বোধনের দিন হাসপাতালে বৈকালিক ‘প্রাইভেট চেম্বারে’ প্রথমদিন ১২২ নং রুমে অর্থপেডিক্স বিভাগে চিকিৎসা দেন ডা. পার্থ প্রতিম চক্রবর্তী।
সদরের চুড়ামনকাটি থেকে আসা রাশেদা খাতুন (৪৫) নামে এক রোগী জানান, ‘আমি জানতাম না বিকালে হাসপাতালে স্বল্প মূল্যে চিকিৎসা দেয়া শুরু হয়েছে। পা ভেঙ্গে গেছে অনেকদিন আগে। স্থানীয় একটা ডাক্তার দিয়ে চিকিৎসা করাচ্ছি; তবে ব্যথা যাচ্ছে না।
হাসপাতালের সামনের একটি ক্লিনিকে ডাক্তার দেখাতে আসি। এক হাজার টাকা ফি চাওয়ায় সেখান থেকে জানতে পারলাম সরকারি হাসপাতালে বৈকালিক চেম্বার শুরু হয়েছে। এরপর সরকারি হাসপাতালে এসে তিনশ’ টাকা দিয়ে ডাক্তার দেখিয়েছি। ডাক্তার অনেকক্ষণ দেখেছেন। সকালের মতো বিকালেও সরকারি হাসপাতাল গুলোতে চেম্বারে দেখালে আমাদের মতো গরিব মানুষের জন্য ভালো।
নাম না প্রকাশে হাসপাতালের বৈকালিক চেম্বারের এক চিকিৎসক বলেন, ‘বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অল্প ফি নিয়ে হাসপাতালে রোগী দেখছেন, প্রথম দিনে এটা অনেকে জানেন না। তেমন প্রচারও ছিল না। তাই রোগীর আগমন কম ছিল। জানাজানি হলে ভবিষ্যতে রোগীর সংখ্যা বাড়বে।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন অর রশিদ বলেন, ‘বৈকালিক যেগুলো চেম্বার হয়েছে; মোটামুটি সাড়া ফেলেছে। যশোরে প্রথম দিন একজন মাত্র সেবা নিয়েছেন। যশোরে সপ্তাহে ৬দিন গাইনি, মেডিসিন ও সার্জারি বিশেষজ্ঞ রোগী দেখবে। এটা সরকারের নানন্দিক উদ্যোগ। আশা করছি আমাদের হাসপাতালেও সাড়া ফেলবে এবং দিন দিন রোগীর সংখ্যা বাড়বে।
এদিকে, যশোর জেনারেল হাসপাতাল ছাড়াও জেলাটিতে দুটি উপজেলা মণিরামপুর ও কেশবপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বৈকালিক চেম্বার চালু রয়েছে। দুটি উপজেলাতেই বৈকালিক চিকিৎসা চেম্বারে রোগীদের সাড়া মেলেনি। উদ্বোধনের চার মাসে মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবা নিয়েছেন ১৮০ জন আর কেশবপুরে দুই শতাধিক রোগী। অভিযোগ রয়েছে, নির্ধারিত সময় ৬টা পর্যন্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক রোগী দেখার নিয়ম থাকলেও বেশির ভাগ চিকিৎসকই চেম্বারে পাওয়া যায় না।
