নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোর শহরের লালদীঘিপাড়স্থ জেলা বিএনপির কার্যালয়ে ৫৮ দিন ধরে তালা ঝুলছে। উপজেলা পর্যায়েও কার্যালয়গুলো বন্ধ। নেই নেতা-কর্মীদের আনাগোনাও। শীর্ষ নেতারা পলাতক জীবনযাপন করছেন। এতে করে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা এক ধরণের হতাশা নিয়ে চলাচল করছেন।
সরকারবিরোধী আন্দোলনে থাকা বিএনপির কার্যালয়ে তালা ঝুলছে গত ২৮ অক্টোবরের পর থেকে। যেদিন ঢাকায় তাদের মহাসমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়। মহাসমাবেশের দিন পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষে এক পুলিশ সদস্যসহ দুজন নিহত হন। পুলিশ এরপর থেকে সারা দেশে অভিযান চালিয়ে বিএনপি নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করা শুরু করে। তখন থেকে বন্ধ হয়ে পড়ে দলটির সাংগঠনিক কার্যালয়। সেই অবস্থা এখনো চলছে। জেলা বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রম চলে ৮টি উপজেলার তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত।
এদিকে গত কয়েক দিনে একাধিকবার লালদীঘিপাড়স্থ গিয়ে দেখা গেছে, বিএনপির কার্যালয় ঘিরে পুলিশি পাহারা থাকে।
বিএনপির নেতারা বলছেন, দলের কেন্দ্রীয় নেতাসহ জেলা, উপজেলা এমনকি ইউনিয়ন পর্যায়ের সক্রিয় নেতা-কর্মীরা গ্রেপ্তার আতঙ্কে আত্মগোপনে থাকছেন। ফলে কার্যালয় খোলা রাখার সুযোগ নেই।
বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, মামলার আসামি না হলেও বিনা পরোয়ানায় পুলিশ বিএনপি নেতা-কর্মীদের বাসা থেকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। এমনকি অনেকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। আমিসহ যশোর বিএনপির শীর্য নেতাদের একজনের নামে ৫০-৬০টি গায়েবি মামলা রয়েছে। যার কারণে নেতা-কর্মীরা কৌশল অবলম্বন করে দলীয় কর্মসূচিগুলো পালন করে যাচ্ছেন।
২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ পণ্ড হয়ে যাওয়ার পর ওই দিন রাতেই যশোর বিএনপির কার্যালয়ের মূল ফটকে তালা দেওয়া হয়। সেই তালা এখনো খোলেনি। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের দিন জেলা বিএনপি বিজয় শোভাযাত্রা কর্মসূচি পালন করলেও কার্যালয় খোলা হয়নি।
গত ২৪ ডিসেম্বর শহরের এইচএম রোডে বিএনপি নেতা অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের নেতৃত্বে ভোট বর্জনের লিফলেট বিতরণ করা হয়। এরপরই ওই এলাকা জুড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েত করা হয়েছিল। অবশ্য অমিত গত ২৮ অক্টোবরের পর থেকে আত্নগোপনে রয়েছেন।
এ ব্যাপারে যশোর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগম জানান, গত ২৮ অক্টোবরের পর থেকে আমাদের দলীয় কার্যালয় অবরুদ্ধ করে রেখেছে পুলিশ। গত ১৭ ডিসেম্বর দলীয় কার্যালয়ের সামনে মহিলা দলের কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানেও পুলিশি প্রহরা ছিল। দলীয় কার্যালয় খুলতে গেলে পুলিশের অনুমতি লাগছে। জেলা পর্যায়ের শীর্য সব নেতারা বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক গয়েবি মামলা। যেকারণে কেউ দলীয় কার্যালয়ে আসছেন না। তারপরও সব বাধা উপেক্ষা করে আমরা কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালন করছি।