কল্যাণ রিপোর্ট :
ঐতিহাসিক যশোর মুক্ত দিবস উপলক্ষে ‘চলো দুর্জয় প্রাণের আনন্দে’ স্লোগানে যশোরে শুরু হয়েছে যশোর সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের ২১দিনব্যাপি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বিজয়ের ৫০বছর পূর্তি উপলক্ষে ৫০জন বীর মুক্তিযোদ্ধা জাতীয় সঙ্গীতের সাথে ৫০টি জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও ৫০টি রঙিন বেলুন উড়িয়ে গতকাল এই অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়।
যশোর টাউন হল ময়দানের শতাব্দি বটতলে অ্যাডভোকেট রওশন আলী স্মৃতি মঞ্চে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য এমপি। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন যুদ্ধকালীন মুজিব বাহিনীর যশোর জেলা প্রধান বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী হোসেন মনি, যশোরের পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ার্দার ও জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, কারো দেন দরবারে নয় বা কারো দয়ার দান হিসেবে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করিনি। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে এই বিজয়। তাই বিজয় দিবসের চেতনাকে আমাদের জাতীয় জীবনের সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে হবে। দেশে একটি শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে পারলেই এই দিনের সত্যিকার তাৎপর্য আমরা অনুধাবন করতে সক্ষম হবো। আমাদের মনে রাখতে হবে আমরা ৫০ বছর আগে ভৌগলিক স্বাধীনতা লাভ করলেও আজও অর্থনৈতিক মুক্তি পাইনি। অজ¯্র রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বিজয় যাতে কারো ব্যক্তিগত বা দলগত চোরাবালিতে পথ না হারায় আমাদের সেই প্রচেষ্টা করতে হবে। সকল প্রকার অপ-সংস্কৃতি ও দুর্বৃত্তায়ন পরিহার করতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
বক্তারা বলেন, আনুষ্ঠানিক বিজয় লাভের ১০দিন আগেই যশোরবাসী বিজয়ের আনন্দ লাভ করেছিল। বিজয়ের প্রথম পতাকা, দেশের প্রথম জনসভা এবং প্রথম প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতিসহ মুক্তিযোদ্ধাদের সমাগম হয়েছিল এই ময়দানে। সেই স্মৃতিকে অম্লান রাখতে সরকার উদ্যোগ নিয়েছে। ইতোমধ্যেই এই মাঠ ও মঞ্চের উন্নয়নে ২ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। স্বাধীন বাংলার প্রথম জনসভাকে স্মরণীয় রাখতে আগামী বছরের ১১ডিসেম্বর এই মঞ্চে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। যেন বর্তমান ও আগামী প্রজন্ম বিজয়ের সঠিক ইতিহাস জানতে পারে।
অনুষ্ঠানে ৫০জন বিশিষ্ট শিল্পীর কণ্ঠে মুক্তিযুদ্ধের উজ্জীবনী সঙ্গীত ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’ এবং স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শেষ গান ‘বিজয় নিশান উড়ছে ঐ’ পরিবেশিত হয়। সবশেষে যশোর সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের নেতৃত্বে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে অংশ নেয়া ৫০টি শিল্পী গোষ্ঠীর পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনূষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।