নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোর মেডিকেল কলেজের উন্নয়ন খাতের লোকবল রাজস্ব খাতে যুক্ত করা নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মচারীরা। তাদের দাবি উন্নয়ন খাতের ৩৫ কর্মীর মধ্যে পছন্দের লোকজন রাজস্ব খাতে নেওয়া হচ্ছে। আর এজন্য গোপনে একটি তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। ওই তালিকা কর্মচারীদের হাত ঘুরে গণমাধ্যমকর্মীদের হাতেও পৌছেছে। এনিয়ে বঞ্চিতরা ব্যাপক ক্ষুব্ধ হয়েছেন।
সূত্র মতে, যশোর মেডিকেল কলেজে ৬৫ জন কর্মচারী আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত। এরমধ্যে ১৪ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী, ৩১ জন নিরাপত্তা প্রহরী, দুইজন টেবিল বয়, দুইজন আয়া, দুইজন বাবুর্চি, তিনজন সহকারী বাবুর্চি, তিনজন হোস্টেল অ্যাটেনডেন্ট, দুইজন গার্ডেনার এবং প্লাম্বার, ম্যাসেঞ্জার, লিফটম্যান, পাম্প অপারেটর, এসি ম্যাকানিক ও ইলিকট্রিশিয়ান একজন করে রয়েছেন। এ কর্মচারীদের ৩৫ জন উন্নয়ন খাত ও রাজস্ব খাত থেকে বেতন পান ৩০ জন। উন্নয়ন খাতের কর্মীদের বেতন কোন কোন মাসে বকেয়া থাকে। এজন্য উন্নয়ন খাত থেকে তাদের রাজস্বে নেওয়ার দাবি ছিল দীর্ঘদিনের। সম্প্রতি কলেজ প্রশাসন সেই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন। তবে সেক্ষেত্রে অনিয়ম করা হয়েছে বলে কর্মচারীরা অভিযোগ করেছেন। কারো কারো ওই তালিকায় স্থান দেয়া হয়নি।
সূত্রের দাবি, রাজস্ব খাতের যে ৩০ জনের নামের তালিকা তৈরি করা হয়েছে সেখানে ২০২২ সালের ৪ সেপ্টেম্বর অধ্যক্ষের স্বাক্ষর রয়েছে। এই তালিকায় এক নম্বরে আছেন ইলেক্ট্রিশিয়ান এসএম সাইদুর রহমান সবুজ ও ৩০ নম্বর তালিকায় আছেন পরিচ্ছন্নতাকর্মী জয়দেব। অবাক ব্যাপার হচ্ছে তালিকায় ইয়াবাসহ পুলিশের হাতে আটক হওয়ায় হাবিবুর রহমান তালুকদারের নাম থাকলেও বঞ্চিত হয়েছেন অনেকে।
নাম প্রকাশে এক কর্মচারী বলেন, কলেজ অধ্যক্ষকে প্রভাবিত করে রাজস্ব খাতের ৩০জনের নামের তালিকা তৈরি করা হয়। কলেজের প্রধান অফিস সহকারী আবুস সবুর ও সদ্য অবসরে যাওয়া হিসাবরক্ষক জয়নাল অধ্যক্ষকে প্রভাবিত করেছেন। অতীতেও তারা প্রভাবিত করে কলেজের নানা খাতে অনিয়ম করেছেন।
প্রধান অফিস সহকারী আবুস সবুর যশোরের স্যালাইন ফ্যাক্টরিতে কর্মরত ছিলেন। খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য অফিসের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে তিনি যশোর মেডিকেলে দায়িত্ব বাগিয়ে নিয়ে স্বেচ্ছাচারিতা করছেন। তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ থাকলেও ব্যবস্থা নিচ্ছে না কলেজ প্রশাসন। আর হিসাবরক্ষক জয়নাল অবসরে গেলেও এখনো চেয়ার ছাড়েননি। এই দুইজনের দায়িত্ব পালনের সময় বড় ধরনের অনিয়ম হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে তদন্ত করে প্রমাণ পেয়েছে। এজন্য তাদের সময়ে অবসরে সাবেক অধ্যক্ষ গিয়াস উদ্দিন এখনো ছাড়পত্র পাননি। জয়নাল ও আব্দুস সবুরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে কলেজের একটি সূত্র জানিয়েছে।
এ বিষয়ে অবশ্য কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মহিদুর রহমান বলেন, বিভিন্ন সংস্থার অর্থায়নে উন্নয়ন খাত পরিচালিত হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের দপ্তরের মাধ্যমে উন্নয়ন খাত থেকে উন্নয়ন খাতের কর্মীদের বেতন দেয়া হয়। এখাত সংকুচিত হয়ে আসছে। এজন্য আমরা উন্নয়ন খাতের কর্মীদেরকে অর্থাৎ ৩৫ কর্মীকেই রাজস্ব খাতে যুক্ত করার চেষ্টা করছি। আশা করি কেউ বাদ পড়বে না।