সালমান হাসান: যশোর শহরের মহা এক দুর্ভোগের নাম ‘বেলা সাড়ে এগারটা’। এই সময়টায় শহরের যান ও জনচলাচলের বেজে যায় পুরোপুরি বারোটা। এক ঘন্টার যানজটে দুর্ভোগের অন্ত থাকে না। ফুটপাথ দখল থাকায় হাঁটাচলারও অবস্থা থাকে না।
বেলা এগারটার পর থেকে শহরের বেশির ভাগ স্কুল ছুটি শুরু হয়। এসময়ে বেশ কয়েকটি সড়কে যানজট ছড়িয়ে পড়ায় যাতায়াত স্থবির হয়ে পড়ে। অফিস-আদালত ঘেরা সিভিল কোর্ট মোড়ের যানজট হয়ে পড়ে একদম নিয়ন্ত্রণহীন। একবার জট বাঁধলে ছাড়াতে ঘন্টার ওপর সময় লেগে যায়। এগারটা থেকে ১২টা পর্যন্ত এখানকার তীব্র যানজট নিত্যদিনের সমস্যা।
নাগরিক ভাবনা ভাবেন এমন অনেকের অভিমত, নির্দিষ্ট একটা সময়ের জন্য মুজিব সড়কের সিভিল কোর্ট মোড়ের চারটি রাস্তার কোন কোনটি ‘ওয়ানওয়ে’ রাখতে হবে। বিশেষ করে স্কুল ছুটির সময় এই পথ দিয়ে বের হয়ে যানবাহন অন্য গন্তব্যে যেতে পারবে। কিন্তু ওই সময়ে সড়কটিতে যাত্রী নিয়ে ঢুকতে পারবে না। এমনটি করা গেলে এখানকার যানজট সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে।
আইনজীবী ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নৃত্যবিতান যশোরের সভাপতি শাহরিয়ার বাবু বলেন, সিভিল কোর্ট এলাকার যানজট নিত্যদিনের সমস্যা। তাদের মত অন্যদেরও এর ভোগান্তি পোহাতে হয়। তিনি মনে করেন, সিভিল কোর্ট মোড়ের কাছাকাছি যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে, সেগুলোর ছুটির সময় সড়কটি ‘ওয়ানওয়ে’ করা গেলে নিত্য এই দুর্ভোগ ঘোচানো সম্ভব হতে পারে।
একই রকম অবস্থার সৃষ্টি হয় মোড়টির অদূরে পোস্ট অফিসের সামনে অক্ষর শিশু শিক্ষালয় ও কালেক্টরেট স্কুলের সামনের রাস্তায়। সিভিল কোর্টের মোড়ের যানজট একবার শুরু হলে মুজিব সড়কের সার্কিট হাউস পর্যন্ত দীর্ঘ হয়। এখানকার যানজট সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন জিরো পয়েন্ট মোড় ছাড়িয়ে যায়। একই দৃশ্য দেখা যায়, চিত্রা মোড় থেকে চৌরাস্তা পর্যন্ত। একঘন্টার এই যানজট নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিকে কর্মরতরা গলদঘর্ম হয়ে যান।
আদালত, পোস্ট অফিস, স্কুলসহ বিভিন্ন দফতরের অবস্থান থাকায় এমনিতেই সিভিল কোর্ট এলাকায় ভিড় লেগেই থাকে। শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে ছাড়াও জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দরকারি কাজে এখানে আসেন বহু মানুষ। ফলে ইজিবাইকসহ বিভিন্ন যানবাহনের চাপ থাকে এখানে সবসময়। আর স্কুল ছুটির পর মোড়টি দিয়ে একের পর এক রিক্সা-ইজিবাইকের যাতায়াত শুরু হয়। অক্ষর শিশু শিক্ষালয় ও কালেক্টরেট স্কুলের সামনে ছুটির সময় যানবাহন থামিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ওঠানামায় যানজট দ্বিগুণে মোড় নেয়। আর ফুটপাথে নির্মাণ সামগ্রি এমনকি গাড়ি পার্কিং করে সেখান দিয়ে চলাচল করা যায় না।
স্কুল ছুটি চলাকালীন সিভিল কোর্ট এলাকার সড়কগুলো ওয়ানওয়ে করা যায় কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে যশোরের ট্রাফিক পরিদর্শক মশিউর রহমান বলেন, শহরের বেশ কিছু সড়ক ওয়ানওয়ে করার জন্য কাজ করছি। তিনি মনে করেন, স্কুল ছুটিকালীন মুজিব সড়ক ওয়ানওয়ে রাখা এটাও একটা ভালো প্রস্তাবনা। তবে এরকম অনুমতি জেলা প্রশাসক ও পৌর মেয়রের এখতিয়ারাধীন। এ ব্যাপারে তাদের সাথে কথা বলবেন বলে আরও জানান তিনি।