দিন বদলের অগ্রযাত্রায় পদ্মা সেতুতে বাংলাদেশ
নিজস্ব প্রতিবেদক: দক্ষিণে জাজিরা প্রান্ত। উত্তরে মাওয়া। মাঝখানে প্রমত্তা পদ্মা। এর বুকেই দাঁড়িয়ে আছে স্বাধীনতা পরবর্তী দেশের ইতিহাসের সেরা মেগা প্রজেক্ট পদ্মা সেতু। ১৬ কোটি মানুষের স্বপ্ন, সক্ষমতা ও দৃঢ়তায় মেশানো যোগাযোগের নতুন দিগন্ত পদ্মা সেতুর উদ্বোধন আজ। জাতির জনকের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকাল ১০ টায় বর্ণিল অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে বহুল প্রতীক্ষিত এই সেতুর উদ্বোধন করবেন। আর এরমধ্যে দিয়ে সেতুর ওপর দিয়ে পদ্মা পাড়ি দেয়ার অপেক্ষা শেষ হবে। নদীর উত্তাল ঢেউ দেখতে দেখতে পদ্মা পাড়ি দেবেন গর্বিত বীরের জাতি বাঙালি। বঙ্গবন্ধু যে পথে লঞ্চ কিংবা স্টিমারে কষ্ট করে রাজধানীতে যেতেন, সেই পথে সেতুর উপর দিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে নির্ভয়ে যাতায়াত করবেন তাঁর উত্তরসূরীরা।
এদিকে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান প্রচারে জেলায় জেলায় নেওয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। বড় ডিজিটাল পর্দায় জেলা-উপজেলায় সেতু উদ্বোধন প্রচার করা হবে। সেতু উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে দক্ষিণের ২১ জেলার মানুষের মধ্যে বইছে আনন্দ উচ্ছ্বাস। সেতুর দুই পাড় ঘিরে এখন সাজসাজ রব। ইতোমধ্যে পুরো এলাকা ছবি, লাইট দিয়ে সাজানোর কাজ শেষ হয়েছে। সবাই অধীর আগ্রহে আছেন, কখন সেতু উদ্বোধন হবে। চলবে যানবাহন।
পদ্মা সেতুকে নিয়ে স্বপ্ন দেখা ও তা নিয়ে পরিকল্পনা হয়েছিল অনেক বছর আগেই। ১৯৯৮ থেকে ১৯৯৯ সালে এই সেতুর প্রাক সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করা হয়। ২০০৩ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত তিন বছরে করা হয় সম্ভাব্যতা সমীক্ষা। ২০১০ সালের ১১ এপ্রিল বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ (বাসেক) প্রকল্পের জন্য প্রাক যোগ্যতা দরপত্র আহ্বান করে। ২০১১ সালে আওয়ামী লীগ সরকার সেতুটিতে রেলপথ সংযুক্ত করে। সে বছর ১১ জানুয়ারি প্রথম দফায় সেতুর ব্যয় সংশোধন করা হয়। তখন এর ব্যয় ধরা হয়েছিল ২০ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা। ওই বছরে বিশ্বব্যাংক, জাইকা, আইডিবি ও এডিবির সঙ্গে ঋণচুক্তি করা হয়। ২০১২ সালের ২৯ জুন দাতা সংস্থাগুলো ঋণচুক্তি বাতিল করে দেয়। একই বছরের ৯ জুলাই নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের সাহসী সিদ্ধান্ত নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৪ সালের ৭ ডিসেম্বর সেতুটির নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন মানবতার মা উপাধিপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রথম স্প্যান বসানো হয় ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর। শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিলারের ওপর ভাসমান ক্রেনের সাহায্যে এই স্প্যান বসানো হয়। ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর শেষ স্প্যান বসানো হয়। পদ্মা সেতুর ১২ ও ১৩তম পিলারে ৪১তম পিলারটি বসানোর মাধ্যমে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। ২০২১ সালে কংক্রিটের স্ল্যাবের মাধ্যমে সড়কপথে যুক্ত হয়। ২০২১ সালের নভেম্বরে পিচ ঢালাইয়ের কাজ শুরু। একই বছরের ২৫ নভেম্বর ল্যাম্প পোস্ট বসানোর কাজ শুরু ও শেষ হয় ২০২২ সালের ১৮ এপ্রিল। ২৯ এপ্রিল শেষ হয় পিচ ঢালাইয়ের কাজ। ১৭ মে সেতুর টোল হার নির্ধারণ ও ২৯ মে সেতুর নামকরণ (পদ্মা সেতু) করা হয়। ৪ জুন পরীক্ষামূলক বাতি জ¦ালানো হয় স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে।
অহংকারের পদ্মা সেতু ৬.১৫ কিলোমিটার। আর দুই পাশের সড়ক মিলিয়ে প্রায় ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতু। মূল সেতু নির্মাণ করেছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি)। নদীশাসনের কাজ করছে চীনের আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ করেছে বাংলাদেশের আবদুল মোমেন লিমিটেড। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হয়েছে এ সেতুর কাঠামো। ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা ব্যয়ে এ সেতু বছরে দশমিক ৮৪ শতাংশ দরিদ্রতা হ্রাস ও জিডিপিতে এক দশমিক ২৩ শতাংশ অবদান রাখবে। শুধু তাই নয়, আঞ্চলিক যোগাযোগ ব্যবস্থায় এটি বড় ভূমিকা রাখবে। এশিয়ান হাইওয়েতে-১ (তামাবিল-সিলেট-ঢাকা-পদ্মা সেতু-যশোর-বেনাপোল) সরাসরি যুক্তের মাধ্যমও এ সেতুটি।
এই সেতু নির্মাণ করতে গিয়ে অনেক অপবাদ ও অপপ্রচারের মুখে পড়ে সরকার। সেতুটি যখন ভ্রুণে রূপ নিতে চলছিল তখন থেকে এর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু হয়। বাংলার মা যাতে পদ্মা সেতুর মতো একটি গর্বের সন্তান জম্ম দিতে না পারে, তার জন্য শুরু হয়েছিল নানামুখী ষড়যন্ত্র, বাধা ও অপপ্রচার। এজন্য বিশ্বব্যাংকের টাকায় পদ্মা সেতু হওয়ার কথা থাকলেও দেশের মধ্যে একদল কুচক্রি মহল সেতুর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। কুচক্রি মহল প্রচার করতে থাকে সেতু নির্মাণে শুরু থেকেই দুর্নীতি হয়েছে। ফলে বিশ্বব্যাংক প্রতিশ্রুত অর্থ প্রত্যাহার করে নেয়। সাথে সাথে এডিবি, আইডিবি ও জাইকাও পদ্মা সেতুতে তাদের বিনিয়োগ বন্ধ করে দেয়। দেশে ও কানাডায় দুর্নীতি মামলা হয়। দেশে দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। কানাডার আদালত কানাডিয়ান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এসএনসি-লাভালিনের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাংক কর্তৃক আনীত দুর্নীতির অভিযোগ মিথ্যা বলে রায় দেয়। বিশ্বব্যাংকের কাছেও কোনো সাক্ষ্য প্রমাণ ছিল না।
কিন্তু থেমে যাননি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি সংসদে দৃঢ়তার সঙ্গে ঘোষণা দেন পদ্মা সেতু হবে নিজস্ব টাকায়। যেই কথা সেই কাজ। সেতু নির্মাণের জন্য আন্তর্জাতিক টেন্ডারের মাধ্যমে ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়। অভিজ্ঞ ও দক্ষ চাইনিজ কোম্পানি কাজ পায়। অত্যন্ত উঁচুমানের নকশা অনুযায়ী সেতুর কাজ শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৭ সালের অক্টোবরে মূল সেতুর কাজের উদ্বোধন করেন। আর এক্সপ্রেস ওয়েসহ পুরো পদ্মা সেতু নির্মাণ, সোন্দর্য্যবর্ধন, লাইটিংসহ অন্যান্য কাজ শেষে আজ ২৫ জুন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতার প্রতীক পদ্মা সেতু শনিবার সকালে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এদিন সকাল ১০টায় তিনি মাওয়া প্রান্তে প্রথম সুধী সমাবেশে বক্তৃতা করবেন এবং পদ্মা সেতু উদ্বোধনের ঘোষণা দেবেন। পরে তিনি সেতুর ফলক ও ম্যুরাল উদ্বোধন করে টোল দিয়ে সফরসঙ্গীদের নিয়ে পদ্মা সেতু পার হবেন। ওপারে গিয়েও তিনি প্রথমে সেতুর ফলক ও পরে ম্যুরাল উদ্বোধন করবেন। বিকেলে তিনি কাঁঠালবাড়িতে এক ঐতিহাসিক জনসভায় বক্তৃতা করবেন। উদ্বোধনের পরদিন ২৬ জুন ভোরে যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে বহুল প্রত্যাশিত এই মেগা কাঠামো।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ঘিরে দেশের বৃহত্তম নদী পদ্মার চরে গত একমাস ঘিরে ছিল বিশাল কর্মযজ্ঞ। পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের পর মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাটে জনসভা করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এগারোটি পিলারের ওপর দশটি স্প্যান বসিয়ে পদ্মা সেতুর আদলেই তৈরি করা হয়েছে এই জনসভার মঞ্চ। মঞ্চের ঠিক সামনে পানিতে ভাসতে থাকবে বিশাল আকৃতির একটি নৌকা। দেখে মনে হবে পদ্মা সেতুর পাশ দিয়ে বড় একটি নৌকা চলছে। এভাবেই সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে ঐতিহাসিক রূপ দেয়া হয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের জনসভা ঘিরে তিন বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে আলোকসজ্জার কাজ করছেন শ্রমিকরা। মঞ্চের চারপাশে নেয়া হয়েছে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের তত্ত্বাবধানে নির্মাণ করা হয়েছে এই মঞ্চ। তারা অস্ত্র হাতে সার্বক্ষণিক স্পটে থাকছেন।
২৪ জুন রাত ১২টার পর থেকে বন্ধ রয়েছে ফেরি চলাচল। পুলিশ সদর দপ্তর বলছে, পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে বিপুলসংখ্যক লোক অনুষ্ঠানস্থলে জড়ো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বেশ কয়েক দফা নিরাপত্তা তল্লাশি পার হয়ে অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হতে হবে আগত অতিথিদের। কেউ যেন কোনো ধরনের অপতৎপরতা সৃষ্টি করতে না পারে, সে ব্যাপারে থাকবে কঠোর নজরদারি। হাইওয়ে পুলিশ, ট্রাফিক পুলিশ, জেলা পুলিশ, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন, নৌ পুলিশ, র্যাবসহ সবাই একযোগে কাজ করছে। সার্বিক নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে র্যাবসহ সাড়ে ৫ হাজার পুলিশ সদস্য। এজন্য সাজানো হয়েছে ত্রিমাত্রিক নিরাপত্তা বলয়।
এরই মধ্যে সেতুর নির্মাণকাজ শেষ করেছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চীনের মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড (এমবিইসি)। সেতুর নির্মাণকাজ শতভাগ শেষ করে তা আনুষ্ঠানিকভাবে সেতু বিভাগকে বুঝিয়ে দেয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সেতু প্রকল্পের ব্যবস্থাপক দেওয়ান আব্দুল কাদের বলেন, শতভাগ কাজ শেষ করে ঠিকাদারী কোম্পানি সেতুটি বুঝিয়ে দিয়েছে। তবে যে কোন অবকাঠামোর ক্ষেত্রে ছোটখাটো কাজ থাকে। তাই আগামী এক বছর তারা ‘ডিফেক্ট লায়াবিলিটি পিরিয়ড’ এর কাজ করবে।
গত ১৪ জুন সন্ধ্যায় মুন্সীগঞ্জের মাওয়া ও শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তের সব ল্যাম্পপোস্টের বাতি একসঙ্গে প্রজ্বালন করা হয়। এতে পুরো পদ্মা সেতু আলো ঝলমলে হয়ে ওঠে। রাতের আঁধার নেমে আসতেই সড়কবাতির ঝলকে আলোকিত হয়ে ওঠে প্রমত্তা পদ্মার বুক।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ঘিরে একসময়ের পদ্মাপাড়ে অবহেলিত অঞ্চল শিবচরে বইছে উৎসবের আমেজ। শিবচর উপজেলা আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, ২৫ জুন শনিবার পদ্মা সেতুর দুই প্রান্ত মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ও শরীয়তপুরের জাজিরা পয়েন্টে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সশরীরে এসে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করবেন। শিবচর উপজেলার কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের বাংলাবাজার ফেরিঘাট এলাকায় জনসভায় যোগ দেবেন। জনসভাকে স্মরণীয় করে রাখতে প্রায় ১৫ একর জমির ওপর ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ১৫০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৪০ ফুট প্রস্থের বিশাল মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য মঞ্চের ভেতরে ও বাইরে বসানো হয়েছে ছয়টি ওয়াচ টাওয়ার। থাকবে দেড় শতাধিক সিসিটিভি ক্যামেরা। র্যাব, পুলিশ, সেনা সদস্য, এসএসএফসহ নানা বাহিনীর তৎপরতায় এটি ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানে রূপ নেবে বলে আশা করা হচ্ছে।
জনসভার মঞ্চ তৈরির কাজ করছে ক্যানভাস বাংলাদেশ ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট। প্রতিষ্ঠানটির উন্নয়নকর্মী কবির হোসেন জানান, অনেকটা সেতুর আদলেই তৈরি করা হয়েছে উদ্বোধনী মঞ্চ। এ ছাড়াও কয়েক স্তরের নিরাপত্তা শেড রয়েছে। মঞ্চের সামনে পানি থাকবে। তার ওপর ছোট-বড় বেশ কয়েকটি নৌকা ভাসতে থাকবে।
প্রধানমন্ত্রীর আগমন ঘিরে দক্ষিণ অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা থেকে ১০ লাখ মানুষের সমাগম হবে। সভাস্থলে ৫০০ অস্থায়ী শৌচাগার, ভিআইপিদের জন্য আরও ২২টি শৌচাগার, সুপেয় পানির লাইন, তিনটি ভ্রাম্যমাণ হাসপাতাল, নারীদের আলাদা বসার ব্যবস্থা, প্রায় দুই বর্গকিলোমিটার আয়তনের সভাস্থলে দূরের দর্শনার্থীদের জন্য ২৬টি এলইডি মনিটর, ৫০০ মাইকের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এ ছাড়া নদীপথে আসা মানুষের জন্য ২০টি পন্টুন তৈরি করা হচ্ছে। এ ছাড়াও মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো তাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ভ্রাম্যমাণ মোবাইল টাওয়ার নির্মাণ করছে।
জনসভাস্থলের দুই বর্গকিলোমিটার জায়গা তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব পেয়েছে পিয়ারু সরদার এ্যান্ড সন্স নামে একটি প্রতিষ্ঠান। ওই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক মোজ্জামেল হক বলেন, ‘সভাস্থলে ওয়াচ টাওয়ার, এলইডি মনিটরসহ নিরাপত্তাবিষয়ক সব ধরনের কাজ করেছেন। স্মরণকালের সেরা আয়োজন হবে এখানে। জনসভায় আসা অতিথিদের কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিক চিকিৎসাসেবা দেয়ার জন্য ভ্রাম্যমাণ হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়েছে।’
সাড়ে তিন হাজার আমন্ত্রণপত্র : পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ও সুধী সমাবেশের জন্য আমন্ত্রণ পেয়েছেন সাড়ে তিন হাজার বিশিষ্ট ব্যক্তি ও সুধীবৃন্দ। আগে বলা হলেও আইনগত কারণে শেষ পর্যন্ত পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তবে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপির সাত নেতাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এছাড়া জমকালো এ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে। কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম জানিয়েছেন, বিএনপি নেতৃবৃন্দ অনুষ্ঠানে যাবেন না।
সেতু বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ও নোবেল জয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে আমন্ত্রণপত্র জানানো হয়েছে। এছাড়া অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীসহ সুপ্রীমকোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের সব বিচারপতিকে।
সবমিলিয়ে, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নিতে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, বিদেশী কূটনীতিক, বীরমুক্তিযোদ্ধা ও সাংবাদিকসহ সাড়ে তিন হাজার অতিথিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। বিদেশি অতিথিদের আমন্ত্রণ প্রসঙ্গে সেতু বিভাগের কর্মকর্তারা বলেন, পদ্মা সেতু তৈরিতে যারা বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করেছেন বিদেশি অতিথি হিসেবে তাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এছাড়া দেশীয় কর্মী যারা এ সেতু তৈরিতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন তারাও আমন্ত্রিত হিসেবে থাকবেন। বাংলাদেশে অবস্থানরত কূটনীতিকরাও আমন্ত্রণ পেয়েছেন।