নিজস্ব প্রতিবেদক
দলের দুর্দিনের অভিভাবক হিসেবে পরিচিত যশোর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক নার্গিস বেগমকে যোগ্য সম্মান দিয়েছেন নেতাকর্মীরা। জেলা বিএনপির আসন্ন সম্মেলনে তিনি সভাপতি পদে থাকতে চান না; খবরে নেতাকর্মীরা তার বাড়িতে জড়ো হন। তার সাথে দেখা করে সভাপতির পদ নিতে অনুরোধ করেন। কর্মীদের অনুরোধ রাখতে পারছেন না বলে তাৎক্ষণিক জানিয়ে দেন নার্গিস বেগম। এতে নাছোড়বান্দা কর্মীরা তার বাড়ির সামনে অবস্থান নেন। তারা বিক্ষোভ করে সভাপতি হতে অনুরোধ করেন। অনুনয়-বিনয় করতে থাকেন। তারা দাবি আদায়ে অনশনে যাওয়ার ঘোষণা দেন। এক পর্যায়ে তার ছেলে বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত অনুরোধ জানালে নেতাকর্মীরা বাড়ি থেকে বের হয়ে জেলা বিএনপির কার্যালয়ে অবস্থান নেন। তখন নেতাকর্মীরা লালদীঘির পাড়ে দলের কার্যালয়ের সামনে এসে একই দাবিতে বিক্ষোভ করতে থাকেন। নেতাকর্মীদের ভাষ্য, নার্গিস বেগম সর্বজন গ্রহণযোগ্য। তিনিই জেলা বিএনপির একমাত্র সভাপতি হওয়ার যোগ্য। দুর্দিনে দলের অভিভাবকের ভূমিকা পালন করে কর্মীদের মাতৃছায়া দিয়ে আগলে রাখেন।
মহিলা দলের নেত্রী শামসুন্নাহার পান্না বলেন, অধ্যাপক নার্গিস বেগমকে তারা সুখে দুখে কাছে পেয়েছেন। তার নেতৃত্বে বিএনপি কঠিন দুঃসময় পার করেছে। ফলে সভাপতি পদে তাকে রাখতে চাইছেন নেতাকর্মীরা।
এদিকে বিএনপির একটি সূত্র জানায়, নতুন নেতৃত্বকে সামনে এগিয়ে আনতে এবং দলের বৃহত্তর স্বার্থেই তিনি সভাপতি পদে থাকতে রাজি হননি নার্গিস বেগম। বিষয়টি তিনি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে জানিয়েছেন। এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটা স্ট্যাটাস দেন তার ছেলে বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। এরপর শান্ত হন নিবেদিত কর্মীরা।
অন্যদিকে, জেলা বিএনপির কার্যালয়ে সকাল থেকে ফরম কিনতে আসেন প্রার্থীরা। প্রার্থীদের উপস্থিতিতে কার্যালয়ে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে। ফরম সংগ্রহের জন্য সব পদপ্রার্থীকেই নির্ধারিত ফি জমা দিতে হয়। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য ৫০ হাজার টাকা এবং সাংগঠনিক সম্পাদক পদের জন্য ৩০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়। এছাড়াও ভোটার তালিকা সংগ্রহের জন্য ৫ হাজার টাকা জমা দিতে হয়। নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের যোগ্যতা নিশ্চিত করতে কিছু শর্ত রাখা হয়েছে, যার মধ্যে উপজেলা বা পৌর বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটির সদস্য হওয়া বাধ্যতামূলক। অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্রীয়, জেলা, উপজেলা বা পৌর পর্যায়ের নেতা হলে তাদের পদত্যাগপত্র জমা দিতে হবে।
প্রসঙ্গত, ২২ ফেব্রুয়ারি সকালে যশোর কেন্দ্রীয় ঈদগাহে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এরপর আলমগীর সিদ্দিকী হলে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বে রয়েছেন আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মো. ইসহক, সদস্য অ্যাডভোকেট হাজী আনিছুর রহমান মুকুল, অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) মকবুল হোসেন, ডা. রবিউল আলম, সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম সজল।