নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরে ১৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবিতে স্ত্রীকে মারপিট করা পুলিশ সদস্য সাবিত হোসেনের বিরুদ্ধে আদালতে করা মামলা রেকর্ড করেছে থানা পুলিশ। সদর উপজেলার বড় ভেকুটিয়া গ্রামের মৃত হাসেম আলী মন্ডলের মেয়ে তানিয়া সুলতানা গত ১ আগস্ট আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। এর একদিন পরই যশোরের কোতোয়ালি থানা পুলিশ মামলাটি রেকর্ড করেছে।
এরআগে সাবিত হোসেনের বিরুদ্ধে নড়াইল পুলিশ সুপারের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ করেছিলেন তানিয়া।
আসামি নড়াইলের ৬৫২ নম্বর পুলিশ কনস্টেবল এবং যশোর শহরের পূর্ব বারান্দীপাড়ার মৃত মাসুক হোসেনের ছেলে। তার বিপি নম্বর ৯৭১৭২০১৯৮১।
তানিয়া সুলতানা মামলায় বলেছেন, ২০২২ সালের ২ জুন পারিবারিকভাবে তিন লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য্যে তানিয়াকে বিয়ে করেন পুলিশ কনস্টেবল সাবিত হোসেন। এরআগে ফারজানা ইয়াসমিন নামে এক নারীকে প্রথমে বিয়ে করলেও তানিয়ার কাছে গোপন রেখেছিলেন। যদিও যৌতুক দাবিতে মারপিটের কারণে ফারজানা তাকে তালাক দিয়ে চলে যান। বিয়ের কিছুদিন পরই তানিয়া জানতে পারেন ফারজানাকে বিয়ের কথা। বিয়ের সময় সাবিতের দাবিকৃত যৌতুক হিসেবে তার বাবার বাড়ির লোকজন টিভি, ফ্রিজ, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন ধরণের আসবাবপত্র দিয়ে দেন। চলতি বছরের ১ এপ্রিল সাবিত প্রাইভেটকার কেনার জন্য স্ত্রী তানিয়ার কাছে পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। টাকা দিতে না পারায় তানিয়ার উপর অমানসিক নির্যাতন চালানো হয়। বছর খানেক আগে সাবিত কুষ্টিয়ায় চাকরি করতেন। এই ঘটনায় তানিয়া কুষ্টিয়া পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। নড়াইলে বদলি হয়ে আসার পরে গত ৮ এপ্রিল নড়াইল পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ করেন। ব্যবস্থা না নেয়ায় হতাশ হয়ে পড়েন তিনি। এরপরে নড়াইলে চাকরিতে র্যাংক লাগানোর কথা বলে গত ১০ জুলাই তানিয়ার কাছে ১০ লাখ টাকা যৌতুক হিসেবে দাবি করেন সাবিত। ওই টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় বারান্দীপাড়া সাবিতের বাসায় তানিয়াকে ঘরের দরজা বন্ধ করে এলোপাতাড়ি মারপিট শুরু করেন। এমনকি শ^াসরোধে তাকে হত্যাচেষ্টা করা হয়। এসময় তানিয়ার হাতে থাকা মোবাইল ফোন দিয়ে সাবিতের মাথায় আঘাত করলে ছেড়ে দেন। কোন চিকিৎসা না করে তানিয়াকে ঘরের মধ্যে আটকে রেখে দফায় দফায় মারপিট করা হয়। পরদিন ভোরে তার বোনের কাছে মোবাইল করলে তানিয়াকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এই ঘটনায় থানায় গেলে মামলা গ্রহণ করেনি পুলিশ। বাধ্য হয়ে ১ আগস্ট আদালতে মামলা করেন তানিয়া। নারী ও শিশু নিয়াতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক গোলাম কবির আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করে আদালতে অবহিত করার জন্য কোতোয়ালি থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন। সেই নির্দেশনায় ২ আগস্ট রাতে মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করেছে থানা পুলিশ। আসামি সাবিত হোসেন পলাতক রয়েছে।
