কল্যাণ ডেস্ক
৩০ জুন শেষ হয়েছে ২০২৪-২৫ অর্থ বছর। এই আর্থিক বছরে পণ্য রপ্তানি থেকে ৪ হাজার ৮২৮ কোটি ৩৯ লাখ (৪৮.২৮ বিলিয়ন) ডলার আয় করেছে বাংলাদেশ, যা আগের অর্থ বছরের (২০২৩-২৪) চেয়ে ৮ দশমিক ৫৮ শতাংশ বেশি। গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকট, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক আরোপসহ নানা বাধাবিপত্তির মধ্যেও এই প্রবৃদ্ধি ‘খুবই ভালো’ বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদ ও রপ্তানিকারকরা। নতুন অর্থ বছরে এই ইতিবাচক ধারা ধরে রাখা সম্ভব হবে কি না—তা নিয়ে সংশ্রয়ও প্রকাশ করেছেন তারা।
সদ্যবিদায়ী অর্থ বছরের শেষ মাস জুনে পণ্য রপ্তানিতে হোঁচট খেয়েছে। এই মাসে ৩৩৩ কোটি ৭৯ লাখ (৩.৩৩ বিলিয়ন) ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছেন বিভিন্ন খাতের রপ্তানিকারকরা। এই অঙ্ক গত বছরের জুন মাসের চেয়ে ৭ দশমিক ৫৫ শতাংশ কম।
কোরবানি ঈদের ১০ দিনের ছুটিতে কারখানায় উৎপাদন কর্মকাণ্ডসহ সব কিছু বন্ধ থাকায় জুনে রপ্তানি কম হয়েছে বলে জানিয়েছেন রপ্তানিকারকরা। বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভের প্রধান উৎস হচ্ছে রপ্তানি আয়; আরেক বড় উৎস প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স। এই দুই সূচক এবং বিশ্ব ব্যাংক, আইএমএফ ও এডিবিসহ আরও কয়েকটি উন্নয়ন সংস্থার ঋণে বেশ কিছুদিন ধরে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে থাকা রিজার্ভ সন্তোষজনক অবস্থায় পৌঁছেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকে মোট (গ্রস) রিজার্ভ সাড়ে ৩১ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। বিপিএম-৬ হিসাবে সাড়ে ২৬ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে। নিট বা প্রকৃত রিজার্ভ ছাড়িয়েছে ২০ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে জানানো হয়েছে, বিদায়ী অর্থ বছরের শেষ দিন ৩০ জুন দেশের মোট রিজার্ভ ছিল ৩১ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ হিসাবে ছিল ২৬ দশমিক ৬৬ বিলিয়ন ডলার। আর নিট বা প্রকৃত হিসাবে রিজার্ভ ছিল ২০ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার।
রিজার্ভের এই অঙ্ক দেশের অর্থনীতির জন্য স্বস্তির বলে মনে করছেন বিশ্ব ব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন।
তিনি বলেন, “নানা সঙ্কটের মধ্যে অর্থ বছর শেষে অর্থনীতির জন্য ভালো খবর এসেছে। রেমিটেন্সে ২৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়ে ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। এক-দুই বছর আগে এটা কল্পনাও করতে পারেনি কেউ। এর আগে কোনও অর্থ বছরে ২৫ বিলিয়নও আসেনি। এটা সত্যিই বিস্ময়কর। রপ্তানি আয়ও মোটামুটি ভালো প্রবৃদ্ধি হয়েছে। দাতা সংস্থাগুলোর বাজেট সহায়তার প্রায় পৌনে ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণে রিজার্ভও সন্তোষজনক অবস্থানে দাঁড়িয়েছে।”
সব কিছু মিলিয়ে অর্থনীতিতে স্বস্তি ফিরে আসার আভাস পাওয়া যাচ্ছে বলে মনে করছেন জাহিদ হোসেন।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) বুধবার রপ্তানি আয়ের হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা যায়, রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাকের ওপর ভর করে সদ্যবিদায়ী ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে (জুলাই-জুন) মোট ৪ হাজার ৮২৮ কোটি ৩৯ লাখ (৪৮.২৮ বিলিয়ন) ডলার আয় করেছে বাংলাদেশ। এই অঙ্ক আগের অর্থ বছরের চেয়ে ৮ দশমিক ৫৮ শতাংশ বেশি।
২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ৪ হাজার ৪৪৬ কোটি ৯৭ লাখ (৪৪.৪৭ বিলিয়ন) ডলার আয় হয়েছিল। নানা চ্যালেঞ্জের মধ্যেও রপ্তানি আয়ের ইতিবাচক ধারা ধরে রেখেছে বাংলাদেশ। বড় দুই বাজার ইউরোপ ও আমেরিকাতেও ভালো প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। বড় বড় বাজারে রপ্তানি বাড়ায় খুবই খুশি ছিলেন রপ্তানিকারকরা। তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন বাণিজ্য নীতি অর্থাৎ ট্রাম্প শুল্কের ধাক্কার শেষ পরিণতি কী হবে, তা নিয়ে চিন্তায় আছেন সবাই।
এপ্রিল মাসে রপ্তানি আয় ৩০০ কোটি (৩ বিলিয়ন) ডলারে নেমে আসায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন দেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাকসহ অন্যান্য খাতের রপ্তানিকারকরা। রোজার ঈদের কারণে ৮/১০ দিন পোশাক কারখানাসহ অন্যান্য খাতের উৎপাদন কর্মকাণ্ড বন্ধ থাকায় এপ্রিলে রপ্তানি কমেছিল বলে জানিয়েছিলেন রপ্তানিকারকরা।
তবে মে মাসে বাড়ায় সে ভয় কেটে যায়। ওই মাসে পণ্য রপ্তানি থেকে প্রায় পৌনে ৫ বিলিয়ন (৪৭৪ কোটি) ডলার দেশে আসে। এই অঙ্ক বিদায়ী অর্থ বছরের ১২ মাসের (জুলাই-জুন) মধ্যে সবচেয়ে বেশি। প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ১১ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
ইপিবি বুধবার রপ্তানি আয়ের হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, সদ্য শেষ হওয়া জুন মাসে পণ্য রপ্তানি থেকে ৩৩৩ কোটি ৭৯ লাখ (৩.৩৪ বিলিয়ন) ডলার আয় করেছেন বিভিন্ন খাতের রপ্তানিকারকরা। গত বছরের জুন মাসে আয়ের অঙ্ক ছিল ৩৬১ কোটি (৩.৬১ বিলিয়ন) ডলার। এ হিসাবে গত বছরের জুন মাসের চেয়ে এই বছরের জুনে রপ্তানি আয় ৭ দশমিক ৫৫ শতাংশ কমেছে।
গত মাস মার্চে ৪২৪ কোটি ৮৬ লাখ (৪.২৫ বিলিয়ন) ডলার আয় হয়েছিল; প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ১১ দশমিক ৪৪ শতাংশ বেশি। ফেব্রুয়ারিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ২ দশমিক ৭৭ শতাংশ; আয় হয়েছিল ৩৯৭ কোটি ৩১ লাখ ডলার।
২০২৫ সালের প্রথম মাস জানুয়ারিতে ৪৪৩ কোটি ৬০ লাখ (৪.৪৩ বিলিয়ন) ডলারের পণ্য রপ্তানি করেন রপ্তানিকারকরা, যা ছিল গত বছরের জানুয়ারির চেয়ে ৫ দশমিক ৭০ শতাংশ বেশি। গত বছরের শেষ এবং চলতি ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের ষষ্ঠ মাস ডিসেম্বরে ৪৬২ কোটি ৭৫ লাখ (৪.৬২ বিলিয়ন) ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছিলেন বিভিন্ন খাতের রপ্তানিকারকরা; প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ১৭ দশমিক ৭২ শতাংশ।
নভেম্বর মাসে রপ্তানির অঙ্ক ছিল ৪১১ কোটি ৯৭ লাখ (৪.১২ বিলিয়ন) ডলার; আগের বছরের নভেম্বরের চেয়ে বেড়েছিল ১৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ। অক্টোবরে আয় হয়েছিল ৪ দশমিক ১৩ বিলিয়ন ডলার; প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ২০ দশমিক ৬৫ শতাংশ। অর্থ বছরের তৃতীয় মাস সেপ্টেম্বরে আয় হয়েছিল ৩ দশমিক ৫২ বিলিয়ন ডলার; বেড়েছিল ৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ। আগস্ট ও জুলাইয়ে আয়ের অঙ্ক ছিল যথাক্রমে ৪ দশমিক শূন্য তিন ও ৩ দশমিক ৮২ বিলিয়ন ডলার; প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৫ দশমিক ৬১ ও ২ দশমিক ৯৩ শতাংশ।
রপ্তানিকারকরা অনেক দিন ধরেই অভিযোগ করছিলেন, ইপিবি রপ্তানি আয়ের ফোলানো-ফাঁপানো তথ্য দিচ্ছে। গত বছরের জুলাই মাসে রপ্তানি আয়ের হিসাবে বড় ধরনের গরমিল ধরা পড়ার পর ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে ইপিবি।
এরপর থেকে রপ্তানি আয়ের সংশোধিত বা প্রকৃত তথ্য প্রকাশ করছে ইপিবি। গরমিল ধরা পরার পর গত বছরের ৯ অক্টোবর চলতি ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের তিন মাসের (প্রথম প্রান্তিক, জুলাই-সেপ্টেম্বর) তথ্য একসঙ্গে প্রকাশ করেছিল ইপিবি। এরপর প্রতি মাসেই রপ্তানি আয়ের তথ্য প্রকাশ করা হচ্ছে, যা প্রকৃত তথ্য বলে দাবি করছে ইপিবি।
৮১.৫০ শতাংশই এসেছে পোশাক থেকে
দেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক; বিদায়ী অর্থ বছরে এই খাত থেকে মোট আয়ের ৮১ দশমিক ৫০ শতাংশ এসেছে। ইপিবির তথ্যে দেখা যায়, বিদায়ী ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে ৩৯ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার আয় হয়েছে, যা ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের চেয়ে ৮ দশমিক ৮৪ শতাংশ বেশি। তবে অর্থ বছরের শেষ মাস জুনে ৬ দশমিক ৩১ শতাংশ কমেছে। এই মাসে পোশাক রপ্তানি থেকে ২ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন ডলার আয় হয়েছে। গত বছরের জুনে আয়ের অঙ্ক ছিল ২ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার।
গেল অর্থ বছরে নিট পোশাক রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ২১ দশমিক ১৬ বিলিয়ন ডলার; প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ। ওভেন পোশাক থেকে এসেছে ১৮ দশমিক ১৯ বিলিয়ন ডলার; বেড়েছে ৭ দশমিক ৮২ শতাংশ।
অন্যান্য খাত
ইপিবির তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, বিদায়ী অর্থ বছরে তৈরি পোশাক ছাড়াও চামড়া ও চামড়াজাতপণ্য, হোম টেক্সটাইল, চামড়াবিহীন জুতা, হিমায়িত খাদ্য, কৃষি পণ্য, প্লাস্টিক পণ্য, ওষুধ ও প্রকৌশল পণ্যের রপ্তানি বেড়েছে। তবে পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি কমেছে।
২০২৪-২৫ অর্থ বছরে কৃষি পণ্য রপ্তানি থেকে ৯৮ কোটি ৮৬ লাখ ডলার আয় হয়েছে। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২ দশমিক ৫২ শতাংশ। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ১১৪ কোটি ৫১ লাখ (১.১৪ বিলিয়ন) ডলার; বেড়েছে ১০ দশমিক ১৯ শতাংশ।
হোম টেক্সটাইল রপ্তানি থেকে আয় বেড়েছে ২ দশমিক ৪২ শতাংশ; এসেছে ৮৭ কোটি ১৬ লাখ ডলার। প্লাস্টিক পণ্য থেকে আয় হয়েছে ২৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার; বেড়েছে ১৬ দশমিক ২১ শতাংশ। ওষুধ রপ্তানি থেকে আয় বেড়েছে প্রায় ৪ শতাংশ। আয় হয়েছে ২১ কোটি ৩২ লাখ ডলার।
প্রকৌশল পণ্য রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ৫৩ কোটি ৫৫ লাখ ডলার; প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১০ শতাংশ। তবে পাট ও পাটজাত পণ্য থেকে আয় কমেছে ৪ দশমিক ১০ শতাংশ; আয় এসেছে ৮২ কোটি ডলার। ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে পণ্য রপ্তানি থেকে ৪৪ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন ডলার আয় করেছিল বাংলাদেশ, যা ছিল আগের অর্থ বছরের (২০২২-২৩) চেয়ে ৪ দশমিক ২২ শতাংশ কম।
২০২৪-২৫ অর্থ বছরে পণ্য রপ্তানি থেকে মোট ৫০ বিলিয়ন ডলার আয়ের লক্ষ্য ধরেছিল অন্তর্বর্তী সরকার। কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময় সংঘাতময় পরিস্থিতিতে পণ্য উৎপাদন ও রপ্তানি ব্যাহত হয়। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়।
এর মধ্যে গাজীপুর ও ঢাকার সাভারে শ্রমিক অসন্তোষের বেশ কয়েক দিন অনেক পোশাক কারখানা বন্ধ থাকে; উৎপাদন ব্যাপকভাবে ব্যাহত হয়। ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর অস্থিরতার মধ্যেও রপ্তানি মোটামুঠি ভালো প্রবৃদ্ধি নিয়ে অর্থ বছর শেষ হওয়া সন্তোষ প্রকাশ করেছেন নিট পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম। তবে ট্রাম্প শুল্ক নিয়ে আতঙ্কের মধ্যে আছেন তিনি।
তিনি বলেন, “২০২৪-২৫ অর্থ বছর মোটেই স্বস্তির ছিল না। এই আর্থিক বছর ছিল ক্ষমতার পট পরিবর্তনের বছর; অস্থিরতা-অনিশ্চয়তার বছর। ট্রাম্প শুল্কের ধাক্কা, ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধ, ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধসহ আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে নানা অস্থিরতা ছিল। এত সব প্রতিকুলতার মধ্যেও ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে অর্থ বছর শেষ হয়েছে। আমি মনে করি এটা খুবই ভালো।”
হাতেম বলেন, “মে মাসে রপ্তানি আয় যেটা কম এসেছে, সেটা মূলত কোরবানি ঈদের ১০ দিনের ছুটির কারণে এসেছে। রোজার ঈদে ৮/১০ দিন ছুটির কারণে এপ্রিল মাসেও রপ্তানি আয় কম এসেছিল।” তিনি বলেন, “জুলাই-অগাস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে আমাদের ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এরপরও রপ্তানি আয় বাড়ায় আমরা খুশি। তবে আমাদের অর্ডার কিন্তু কমছে। জানি না আগামী মাসগুলোতে কী হবে।
“বিশ্বজুড়ে রীতিমতো বাণিজ্য যুদ্ধ বাধিয়ে দিয়ে ঝড় তুলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এটার পরিণতি কী হবে, তা আমরা পরিস্কার কিছুই বুঝতে পারছি না।” হাতেম বলেন, “এপ্রিলে ট্রাম্প শুল্কের প্রভাব পুরোপুরি পড়েনি। তবে তিন মাস স্থগিতের পরও যে ১০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্প আরোপ করা হয়েছে, তাতে আমাদের ক্ষতি হতে শুরু করেছে। চট্টগ্রামের এক পোশাক ব্যবসায়ী কয়েক দিন আগে আমাকে বললেন, ১০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্কের কারণে তাকে ২ দশমিক ৮৫ মিলিয়ন ডলার বাড়তি খরচ করতে হয়েছে।
“এর মানে ট্রাম্প শুল্পের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। আগামী দিনগুলোতে বেশ ভালোভাবেই পড়বে। যদি কোনও সম্মানজনক সমাধান না হয়, ১০ শতাংশ শুল্কও যদি দিতে হয়, তারপরও আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হব।” ডোনাল্ড ট্রাম্প তার প্রথম সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন। চীন ছাড়া অন্য সব দেশের জন্য ধার্য করা যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক ৯০ দিন স্থগিত করা হয়েছে। এই সময় দেশগুলোর পণ্যে পাল্টা শুল্ক ন্যূনতম ১০ শতাংশ কার্যকর হবে।
ট্রাম্প গত ২ এপ্রিল হোয়াইট হাউসে সংবাদ সম্মেলন করে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রপ্তানিকারক শতাধিক দেশের পণ্যের ওপর সম্পূরক শুল্ক হার পুনর্নির্ধারণ করে দেন। তাতে বাংলাদেশের পণ্যে নতুন করে ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ হয়েছে, যা এতদিন ছিল ১৫ শতাংশ। বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের অনুরোধে ১০ এপ্রিল চীন ছাড়া অন্য সব দেশের পাল্টা শুল্ক ৯০ দিন স্থগিত রাখার ঘোষণা দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।