নিজস্ব প্রতিবেদক
রমজানের বাকি মাত্র এক-দুই দিন। এরই মধ্যে বাজারে রমজানের পণ্য কেনাবেচা শুরু হয়েছে। প্রতি বছর এসময়ে ছোলা, ডাল, চিনি, ভোজ্যতেল, মুড়ি ও খেজুরের মতো পণ্যগুলোর চাহিদা হু হু করে বেড়ে যায়। চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ে দাম। তবে এ বছর রমজান ঘিরে এসব পণ্যের দাম এখনো অনেকটাই স্থিতিশীল। তবে পাকা কলা, কাঁচা কলা, বেগুন, পেঁয়ারাসহ কয়েকটি পণ্যের দাম বেড়েছে অবিশ্বাস্য হারে।
এদিকে একমাস ধরে চলা সয়াবিন তেলের সংকট এখনো কাটেনি। অর্থাৎ, বলা চলে সয়াবিন তেল ছাড়া রমজানের অন্যসব পণ্যের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। যশোরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমনটিই জানা গেছে।
শহরের রেলবাজার, বড়বাজার ও চুয়াডাঙ্গা স্ট্যান্ড বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত ২-৩ দিন আগেও প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হয়েছে ৩০ টাকা কেজি। সেই বেগুন গতকাল বিকালে দাম রাখা হয় দ্বিগুনেরও বেশি। অর্থাৎ ৭০ টাকা কেজি। এ নিয়ে ক্রেতাদের সাথে বিক্রেতাদের বাকবিত-া করতে দেখা যায়। একই ভাবে ২০ টাকা কেজি দরের কলা বিক্রি করা হচ্ছিল ৪০ টাকা। আর পাকা কলার দাম চুপিচুপি আগে বাড়িয়েছে বিক্রেতারা। যে কলা পিচ ৫-৬ টাকা বিক্রি হতো সেটা গত সপ্তাহ ধরে ৭-১০ টাকা চাওয়া হচ্ছে।
ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৯৫-১১০ টাকা কেজি দরে। গত বছর রমজানেও এ দামে ছোলা কেনা গেছে। একইভাবে খেসারির ডাল ১১০-১২০ টাকা ও মসুর ডাল ১২০-১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
বড়বাজারের মুদি দোকানি গণেশ দাস বলেন, ডালজাতীয় কোনো পণ্যের দাম বাড়েনি। আগের বছর রমজানেও এমন দাম ছিল। মাঝে মসুরের দাম কিছুটা বেড়েছিল, এখন সেটা কমেছে। মাস দুই আগে চিনির দাম উঠেছিল ১২৫-১৩০ টাকায়। এখন তা কিছুটা কমে ১১৫-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে জানান এ বিক্রেতা।
তবে অস্থিরতা রয়ে গেছে সয়াবিন তেলের বাজারে। ভোজ্যতেলের সরবরাহ সংকট এখনো কাটেনি। বিভিন্ন দোকান ঘুরে সয়াবিন তেলের দেখা মেলেনি। সরবরাহ সংকটের সুযোগ নিয়ে কিছু কিছু বিক্রেতা ১৭৫ টাকা লিটারের তেল ২০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছেন বলে ক্রেতাদের অভিযোগ। অনেকে তেলের বোতল কেটে ড্রামে ঢেলে চড়া দামে খুচরায় বিক্রি করছেন।
রমজানের আরেকটি অতিপ্রয়োজনীয় পণ্য পেঁয়াজ। এবছর ভরা মৌসুম হওয়ার কারণে পেঁয়াজ নিয়ে কোনো দুশ্চিন্তা নেই। ৪০ টাকা দরে পেঁয়াজ কিনতে পারছেন ক্রেতারা। রমজান ঘিরে বাজারে মুড়ি ও খেজুরের চাহিদাও বাড়ে। বাজারে এখন প্রতি কেজি মুড়ি ৮০-৯০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। গত বছরও এমন দাম ছিল বলে জানান বিক্রেতারা।
খেজুরের দাম গত বছর রমজানের চেয়ে এবার কম বলছেন রেলবাজারে ক্রয় করতে আসা মিজানুর রহমান। তিনি বলেন প্রতি কেজি সাধারণ মানের খেজুর ২৫০-৩০০ টাকা এবং ভালো মানের খেজুর ৪০০-৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে অন্যসব পণ্যের দামেও তেমন হেরফের দেখা যায়নি। স্বস্তি রয়েছে ডিম ও সবজির দামেও। বাজারে সবজির সরবরাহ অনেক; এতে কমেছে দাম। বর্তমানে ধরনভেদে শিম ৩০-৪০ টাকা ও টমেটো ২৫-৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এছাড়া পেঁপে ৩০-৪০ টাকা ও লাউ ২০-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আলুর কেজি এখন ২০-২৫ টাকা।
বাজারে ফার্মের মুরগির ডিমের দামও সহনশীল রয়েছে। প্রতি ডজন কেনা যাচ্ছে ১৩২-১৩৫ টাকায়। ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৯০ থেকে ২০০ টাকায়। সোনালি মুরগির কেজি ৩০০-৩২০ টাকা।
এদিকে ক্রেতারা জানিয়েছেন, এখনো স্থিতিশীল আছে বাজার। প্রশাসন যদি নজরদারি বাড়ায় তবে রমজানে স্বাভাবিক থাকবে দাম।
