নিজস্ব প্রতিবেদক
বেনাপোল বন্দর দিয়ে আসন্ন রমজানকে সামনে রেখে বেড়েছে ভোগ্যপণ্যের আমদানি। বেশি আসছে ছোলা ও বিভিন্ন ধরনের ফল। আমদানি স্বাভাবিক থাকলে আগামী দুই মাসে ভোগ্যপণ্যের দাম অনেকটা কমে আসার সম্ভাবনা দেখছেন ব্যবসায়ীরা। গত তিন দিনে কয়েকশ ট্রাক ফল ও ছোলা ভারত থেকে বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করেছে। দ্রুত খালাস প্রক্রিয়া শেষে পাঠানো হচ্ছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়। তবে জায়গা স্বল্পতার কারণে পণ্য খালাসে বেশি সময় লাগছে বলে দাবি বন্দর কর্তৃপক্ষের।
গত তিন দিনে ৩৮০ ট্রাক ভোগ্যপণ্য ও ফল আমদানি হয়েছে বেনাপোল বন্দর দিয়ে। বুধবার বিকাল পর্যন্ত বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে প্রায় ৫৫ ট্রাক ভোগ্যপণ্য ও ফল আমদানি হয়েছে। তবে এ তিন দিনে ফল আমদানির পরিমাণ বেশি। চিনির শুল্ক কমানোর পর কোন চিনি ও খেজুর আমদানি হয়নি এ বন্দর দিয়ে। তবে রোজা শুরুর আগেই খেজুর আমদানি হবে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
রমজানকে সামনে রেখে ভারত থেকে আমদানি করা হচ্ছে ছোলা ও বিভিন্ন রকম ফল। ঋণপত্র খোলার জটিলতা নিরসন হওয়ার পরপরই ছোলা আমদানি শুরু হয়েছে। তবে ফল আমদানি হচ্ছে অনেক আগে থেকেই। এসব পণ্যের বাজারদর স্বাভাবিক রাখতে এলসি সহজের বিষয়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে আগেই নির্দেশ দিয়েছে সরকার। এ কারণে আমদানি করা খাদ্যদ্রব্যের দাম সহনীয় থাকার আশা ব্যবসায়ীদের। কিন্তু বাজারে দাম এখনও আকাশচুম্বী।
এদিকে, প্রতি কেজি ছোলা পাইকারি বাজারে ৭৮ টাকা ও খুচরা বাজারে ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া পাইকারি বাজারে চিনি ১০৩, পেঁয়াজ ২৫, আপেল ১৮০, আঙ্গুর ২০০ ও কমলা ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর খুচরা বাজারে চিনি ১১২, পেঁয়াজ ২৬ থেকে ৩০, আপেল ২৩০, আঙ্গুর ২২০ ও কমলা ২৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
যশোরের ফলের আড়ৎদার সেলিম হোসেন বলেন, চাহিদা থাকায় ভারত থেকে অধিক পরিমাণে ছোলা ও ফল আমদানি করা হচ্ছে। এ ছাড়া ব্যাংক সম্প্রতি এলসি দেওয়ায় খাদ্য আমদানি সহজ হয়েছে বলে জানান তারা। আর ক্রেতারা জানান, রমজান এলেই নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যায়। এ জন্য দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে রোজায় বাজার মনিটরিং জোরদার করার দাবি করেন।
যশোরের বড় বাজারের আড়তদার শংকর মন্ডল বলেন, ভারত থেকে ছোলা আমদানি বেড়েছে। কাজেই সরবরাহ বেশি হওয়ার কারণে ছোলার দামও কমছে। কিন্তু খোলা বাজারে দাম তেমন কমছে না। বাজার মনিটরিং জোরদার করার দাবি তার।
এদিকে বেনাপোল স্থলবন্দরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কেন্দ্রের উপ-সহকারী হেমন্ত কুমার সরকার জানান, ভারত থেকে আমদানি করা ভোগ্যপণ্যগুলো খাওয়ার উপযোগী কি না যাচাই করতে মান পরীক্ষা করা হচ্ছে। এরপর বন্দর থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে বেনাপোল স্থলবন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আব্দুল জলিল বলেন, ভোগ্যপণ্য দ্রুত বন্দর থেকে খালাস করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, বছরে বাংলাদেশে এক লাখ ২০ হাজার টন ছোলার চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে শুধু রমজান মাসেই ইফতারের জন্য ৮০ হাজার টন ছোলার প্রয়োজন হয়।