মণিরামপুর প্রতিনিধি
মণিরামপুরের চাঁদপুর গ্রামের সৈনিক আলমগীর হোসেনের মেয়ে আনিশা আলমগীর রাখি (১২) এবং আনিশা আলমগীর আঁখি (১০) দুই বোন। এখন মা রহিমা জীবিত থাকতেও মা ডাকতে পারছেন না তারা। বাবা আলমগীরও চাকরি সুবাদে রয়েছেন বাইরে। দাদা ও মেঝ চাচা-চাচীর কাছে কাটছে তাদের দিন। সম্প্রতি তাদের মা রহিমা পরকীয়ায় জড়িয়ে যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২’র জুনিয়র ইঞ্জিনিয়র (আইসিটি) মীর ইমাম হোসেন সোহাগের সাথে ঘর সংসার করছেন। আলমগীর মণিরামপুর প্রেসক্লাবে এসে তার সংসারের হঠাৎ এ বিপর্যয়ের কান্না বিজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো জানাচ্ছিলেন সাংবাদিকদের।
গত ১৫ বছর আগে মণিরামপুর উপজেলার গাংগুলিয়া গ্রামের রহিমার সাথে বিয়ে হয় সৈনিক আলমগীরের। এরই মাঝে দুই মেয়েকে নিয়ে ভালোই যাচ্ছিল সংসার জীবন। দুই মেয়েকে ভালো স্কুলে পড়া লেখা করানোর জন্য মণিরামপুর পৌরশহরের মোহনপুর গ্রামে বাসা ভাড়া নেন তারা। একই ভবনের নিচতলায় ভাড়া থাকতেন পল্লী বিদ্যুতের জুনিয়র ইঞ্জিনিয়র মীর ইমাম হোসেন। আলমগীর বাড়ি না থাকার সুযোগে স্ত্রী রহিমার সাথে মীর ইমাম পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে গত জানুয়ারি মাসে রহিমাকে ডিভোর্স করিয়ে মীর ইমাম জুন মাসে বিয়ে করেন। পুরো বিষয়টি অজানা ছিল সৈনিক আলমগীরের। আলমগীর দাবি করছেন, মিশনে থাকায় সবকিছুই ছিলো তার অন্ধকারে। ছুটিতে বাড়ি ফিরে জানতে পারেন রহিমা এখন তার নয় বরং কাগজে-কলমে মীর ইমামের স্ত্রী। সাময়িকভাবে এনিয়ে তুমুল ঝড় ওঠে। যা শেষ পর্যায় থানা পর্যন্ত গড়ায়।
খুলনার রূপসা উপজেলার নৈহাটি-জয়পুর গ্রামের মীর ইমাম হোসেন সোহাগ। একাধিক বিয়ে ও পরকীয়ার অভিযোগ রয়েছে মীর ইমামের বিরুদ্ধে। এমনকি স্ত্রীর করা মামলায় জেলও খাটেন কিছুদিন। এ তথ্য গোপন করেই তিনি চাকরি করছেন।
সর্বশেষ মীর ইমাম সৈনিক আলমগীরের স্ত্রীকে পরকীয়ার জালে আটকে তাকে বিয়ে করে ঘর সংসার করছেন। তবে, এ ঘটনায় স্থানীয়ভাবে ব্যাপক চাপের মুখে পড়েন মীর ইমাম। স্ত্রীকে ফিরে পাওয়াসহ খোয়া যাওয়া টাকা উদ্ধারের জন্য আলমগীর মণিরামপুর থানাসহ পল্লী বিদ্যুৎ সংশ্লিষ্ট একাধিক দপ্তরে অভিযোগ করার পরও কোন ফল হয়নি। প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, রহিমা নতুন স্বামী পেল! দুই মেয়ে রাখি ও আখি’র চোখের জল মুছবে কে? এছাড়াও সৈনিক আলমগীরের সাজানো সংসার তছনছ করা হলেও সে বিষয়টিও কেনই বা আমলে নেননি কেউ।
এসব বিষয় নিয়ে মুঠোফোনে কথা হয় মীর ইমাম হোসেন সোহাগের সাথে। এক পর্যায় তিনি সবই স্বীকার করে জানান, যা করেছি শরিয়তসম্মতভাবে করেছি।
যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর (মণিরামপুর) জেনারেল ম্যানেজার আব্দুল লতিফের সাথে মুঠোফোনে মীর ইমাম বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তদন্ত পতিবেদন পাওয়ার পর বিষয়টি দেখা হবে।