রাজগঞ্জ (মণিরামপুর) প্রতিনিধি: মনিরামপুর উপজেলা রাজগঞ্জ এলাকার মাঠে মাঠে শুরু হয়েছে নতুন ধান কাটার মহোউৎসাব। দিগন্তজোড়া প্রান্তরে সোনালি ঢেউ দোল খাচ্ছে মাঠের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। এর মাঝেই কাস্তে হাতে ব্যস্ত কৃষকরা। মাঠের পর মাঠ এখন সোনালি রঙের পাকা ধানে ভরে আছে।
উপজেলার চালুয়াহাটি ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকার বিস্তীর্ণ মাঠে সোনালি রঙের পাকা বোরো ধানের ক্ষেত। কোনো কোনো ক্ষেতে কৃষক ধান কাটছেন। আবার কোনো কোনো ক্ষেতের ধান এখনও পুরোপুরি পাকেনি। কৃষকেরা কেউ ধান কাটছেন, কেউ বাঁধছেন আঁটি। আবার কেউবা ঘাড়ে করে ধানের বোঝা নিয়ে যাচ্ছেন বাড়িতে উঠানে, যেন দম ফেলার ফুরসত নেই কারও।
লক্ষণপুর গ্রামের কৃষক আবু দাউদ বলেন, আমাদের এখন দম ফেলার ফুরসত নেই। নতুন ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করতে হচ্ছে। কয়েক বছর ধরে গ্রামে আর ধান কাটার শ্রমিক পাওয়া যায় না, যে কারণে অনেক গৃহিণীরও মাঠে এসে ধান কাটছে। কৃষকরা যেন ন্যায্যমূল্য পায় সেই দাবি করেন তিনি। রতœসাহাপুর গ্রামের কৃষক প্রবীণ মল্লিক বলেন, বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন বোরো ধান কাটার উৎসব চলছে। ফলন মোটামুটি ভালো হওয়ায় কৃষকরাও খুশি। কিন্তু ফড়িয়া বা মধ্যস্বত্বভোগীদের তৎপরতায় ফসলের কাক্সিক্ষত মূল্য পাওয়া নিয়ে কৃষকদের মধ্যে রয়েছে শঙ্কা। তিনি আরো অভিযোগ করেন বলেন, গত কয়েক বছর ধরে তারা ধানের ভাল ন্যায্যমূল্য পান না।
মোবারাকপুর গ্রামের বোরো চাষি আবুল খায়ের বলেন, বৈশাখের খরতাপে সকাল থেকে পড়ন্ত বেলা পর্যন্ত মাঠে মাঠে ফসল কাটছেন কৃষকরা। একদিকে কৃষকরা ধান কেটে বাড়ির আঙিনায় জড়ো করছেন, অন্যদিকে হাতে বা মেশিন দিয়ে ধান ঝাড়া শেষ করছেন। ধান ঝাড়ার শেষে বাতাসে ধান উড়িয়ে ঘরে কিম্বা গোলায় তোলার কাজে ব্যস্ত কৃষাণীরা।
পোকার আক্রমণের পরও এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলনের সুবাস পাচ্ছেন কৃষকরা। ধান কাটার শ্রমিক খুব কম পাওয়া যাচ্ছে বলে বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে জমি মালিকদের। চালুয়াহাটি ইউনিয়ান কৃষি উপসহকারি বলেন এ বছর এ অঞ্চলে ১ হাজার ৭২০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ করা হয়। কৃষি উপসহকারি মারুফুল হক ও হাবিবুর রহমান বলেন, এবার বোরো ধানের ফলন ভালো হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশ ধান কাটা হয়ে গেছে।