নেংগুড়াহাট প্রতিনিধি
যশোরের মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জের পথের পাশে, জমির আইলে, খাল-বিল পাড়ে এবং বাড়ির আনাচে কানাচে দাঁড়িয়ে থাকা খেজুর গাছে নজরে পড়ছে কাঁচা-পাকা হলুদ খেজুর। মধুমাস জ্যেষ্ঠের অন্যতম ফল এই দেশি খেজুর।
দেশি খেজুরকে কেউ কেউ বুনো বা জংলি খেজুর নামেও ডাকেন। কেননা এটা কেউ চাষ করে না, জঙ্গলের গাছ। দেশি খেজুর এ দেশের একটি অন্যতম প্রাচীন ফল। এ দেশেই উৎপত্তি, এ দেশেই বিস্তার। চৈত্র মাসে ফুল ফোটে। কাঁধিতে পুরুষ ও স্ত্রী ফুল ফোটে। পুরুষ ফুল সাদা ক্ষুদ্রাকার। ফল হয় গ্রীস্মকালে। ফল প্রায় ডিম্বাকৃতি, হলুদ রঙের, লম্বায় প্রায় ২.৫ সেন্টিমিটার। ভেতরে হালকা বাদামি রঙের বীজ। বীজের ওপরে পাতলা আবরণের মতো শাঁস। কাঁচা শাঁস কষ্টা ও নোনতা। কিন্তু পাকলে তা বেশ মিষ্টি। পাকা খেজুরের রঙ লালচে বাদামি থেকে খয়েরি হয়। বীজ দিয়েই খেজুর গাছের বংশবৃদ্ধি হয়। দেশি খেজুরের ফলের শাঁস পাতলা, বিচি বড়, পাকা ফলের সংরক্ষণ ক্ষমতা খুবই কম। তবু পাকা ফলের সুমিষ্ট গন্ধ ও মিষ্টি স্বাদ ছোট বড় সকলকেই আকৃষ্ট করে। পাকা খেজুর গ্রাম বাংলার শিশুদের কাছে খুব প্রিয়। রাজগঞ্জের চালুয়াহাটি ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা এসএম মারুফুল হক জানান, গাছির অভাবে খেজুর গাছ থেকে রস আহরণ করা যাচ্ছে না। এ কারণে প্রতি বছর শত শত খেজুর গাছ কাটা পড়ছে। তবে কয়েক বছর আগেও এ এলাকায় লক্ষাধিক খেজুর গাছ ছিল। রাজগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে খেজুর গাছে থোকায় থোকায় ঝুলছে খেজুর। অনেক খেজুরে রঙ ধরেছে। তা দেখে প্রতিটি মানুষের চোখ ধাঁধিয়ে যাচ্ছে। খেজুর পাকতে শুরু করেছে। সড়কের পাশে খেজুর গাছের খেজুরগুলো স্থানীয় ছেলে-মেয়েরা পেড়ে খেতেও শুরু করেছে। অনেকেই পাকা খেজুর বাজারে বিক্রি করছেন। বিশ টাকা কেজি দরে খেজুর বিক্রি হচ্ছে। তবে মৌসুমী ফলের ভিড়ে দেশি খেজুরের কদর খুবই কম বাজারে।
