নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশের বৃহত্তম চামড়ার বাজার যশোরের রাজারহাটে গত শনিবারের তুলনায় মঙ্গলবার দ্বিতীয় হাটে মৌসুমী ব্যবসায়ীদের সংখ্যা আরো কমে গেছে। বাজারে পশুর চামড়া উঠেছেও কম। ফলে দুপুরের আগেই কেনাবেচা শেষ হয়ে যায়। ব্যবসায়ীদের একই অভিযোগ, চামড়ার দাম নেই, আর লবণসহ উপকরণের দাম বৃদ্ধির ফলে লোকসান গুনতে হচ্ছে। যদিও চমড়ার মূল হাট হবে আগামী শনিবার। ব্যবসায়ীরা ওই দিনের অপেক্ষায় আছেন।
মণিরামপুরের হোগলাডাঙ্গার ব্যবসায়ী অসীত কুমার জানিয়েছেন, তিনি মঙ্গলবার ২০০ চামড়া হাটে আনেন। সব বিক্রি হয়ে গেছে। প্রতিটি গরুর চামড়া ৬শ থেকে ৯শ টাকার মধ্যে বিক্রি করেছেন। লবণ, পরিবহন খরচ, লেবার খরচ দিয়ে তার লাভ হয়নি। আরো চামড়া আছে সে গুলো আগামী শনিবার হাটে নিয়ে আসবেন।
হাট ইজারাদারের প্রতিনিধি হোসেন আলী জানিয়েছেন, প্রতি পিস ছাগলের চামড়া ১৫ থেকে ৭০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। আর গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে ৩শ থেকে ১১শ টাকা পর্যন্ত। চামড়ার দাম আশানুরুপ না। ফলে অনেক ব্যবসায়ী মঙ্গলবার হাটে চামড়া আনেননি।
বৃহত্তর যশোর জেলা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আকিল আহমেদ জানিয়েছে, মঙ্গলবার মূল হাট না। মূল হাট হবে আগামী শনিবার। ওইদিন হাট জমতে পারে। মঙ্গলবার বলে যশোরের বাইরের ব্যবসায়ীদের আনাগোনা কম। ওইদিন দুরদূরন্ত থেকে ব্যবসায়ীরা আসতে পারে। বেশি দিন চামড়া স্টক করে রাখা যায় না। এতে খরচ বাড়ে। ব্যবসায়ীদের পুঁজি বসে যায়।
তিনি জানিয়েছেন, এদিন হাটে গড়ে গরুর চামড়া ৮শ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আর ছাগলের চামড়া ৩০-৩৫ টাকার মতো। ২ হাজারের মতো গরুর চামড়া আর ১২ থেকে ১৫শ’র মতো ছাগলের চামড়া উঠেছে। আগামী শনিবার সংখ্যা বাড়তে পারে।
ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সভাপতি নাসির উদ্দিন সেফার্ড বলেছেন, চামড়ার হাটের ঐতিহ্য হারিয়ে যেতে বসেছে। তৃণমূল পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে সরকার একটা ভালো ও কার্যকর সিদ্ধান্তে পৌছালে হাট আবার পূর্বের মতো জমে যাবে।
বৃহত্তর যশোর জেলা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দীন মুকুল বলেন, গতকাল তেমন চামড়া আসেনি। আশা করছি মূল হাট বসবে আগামী শনিবার। এদিন গরু ও ছাগলের প্রায় ৪ হাজার চামড়া এসেছিল। প্রায় ২০ লাখ টাকা কেনাবেচা হয়েছে। চামড়া খাতকে চাঙ্গা করতে হলে ব্লু চামড়া রপ্তানি করতে হবে।’
উল্লেখ্য, রাজারহাটে যশোরসহ খুলনা বিভাগের দশ জেলার পাশাপাশি ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, ঝালকাঠি, রাজশাহী, পাবনা, ঈশ্বরদী ও নাটোরের বড় ব্যবসায়ীরা চামড়া বেচাকেনা করেন। এই হাটে ঈদের মৌসুমে দশ থেকে ১৫ কোটি টাকার অধিক চামড়া বেচাকেনা হয়। দুইশ আড়তদার রয়েছে এখানে। এখাতে কম পক্ষে ১০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান রয়েছে।