নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবিলায় জেলার ২ হাজার ২শ ৪৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত করা হয়েছে। একই সাথে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি যশোর ইউনিট, জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ, ফায়ার সার্ভিসসহ স্বেচ্ছাসেবক টিমের ১০হাজার কর্মী প্রস্তুত রয়েছে। খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম।
বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি যশোর ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হাসান টুকুন জানান, ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবেলায় জেলা প্রশাসনের সাথে রেডক্রিসেন্ট যশোর টিম সকল প্রস্তুত রয়েছে। জেলা জুড়ে ১শ জন ভলান্টিয়ার প্রস্তুত রয়েছে। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, ইউনিট লেভেল অফিসার মোক্তার হোসেনসহ শতাধিক রেডক্রিসেন্টের সদস্যরা।
এদিকে জেলা ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. নাজমুস সাদিক রাসেল জানান, জেলার সকল স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে একটি করে মেডিকেল টিম প্রস্তুত করা হয়েছে। এর মধ্যে জেলা হাসপাতালসহ ৮ উপজেলায় ৮টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত করা হয়েছে। একই সাথে সব স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানে ১ থেকে ২ জন করে অতিরিক্ত জনবল নিযুক্ত করা হয়েছে। একইসাথে জেলার সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় সিভিল সার্জন অফিসের পক্ষ থেকে খাবার স্যালাইনসহ জরুরি প্রতিরোধ ও প্রতিষেধক ওষুধ ও উপকরণ পর্যাপ্ত মজুত করা হয়েছে।
প্রয়োজনীয় সংখ্যক পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট এবং সাপে কাপড় দেওয়া রোগীর জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক অ্যান্টিভেনম মজুত রাখতে সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান সমূহকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। স্বাস্থ্য পরিদর্শক, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক, স্বাস্থ্য সহকারীসহ অন্যান্য মাঠকর্মীদের নিজ নিজ এলাকায় সতর্কভাবে অবস্থান করে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে এবং যেকোনো জরুরি পরিস্থিতিতে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক, ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে চলমান সার্বক্ষণিক চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার পাশাপাশি জরুরি পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। যেকোনো স্বাস্থ্যগত ঝুকি বা সমস্যায় নিকটস্থ স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের সহযোগিতা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
এছাড়া জেলার সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ রিজিবুল ইসলাম বলেন, জেলার ১হাজার ২শ ৮৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ৯শ ৫৬টি মাধ্যমিক, মাদ্রাসা ও কলেজ প্রস্তুত রাখা হয়েছে আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে। একই সাথে পর্যাপ্ত চাল, শুকনো খাবার ও নগদ অর্থ রাখা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এর আগে ২০২০ সালে ২০ মে প্রলয়ঙ্কারী ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ঘরের ওপর গাছ পড়ে যশোরে মা-মেয়েসহ ১২ জনের মৃত্যু হয়েছিল। বিভিন্ন উপজেলায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে শার্শা উপজেলায় চারজন, চৌগাছায় দুজন, বাঘারপাড়ার একজন ও মণিরামপুর উপজেলার পাঁচজন।