ঢাকা অফিস
‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হাম্দা ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মুল্ক, লা শারিকা লাক’ ধ্বনিতে মুখরিত হচ্ছে আরাফার ময়দান।
মঙ্গলবার সারা বিশ্ব থেকে জড়ো হওয়া লাখ লাখ মুসল্লি আরাফার ময়দান এ ধ্বনিতে মুখরিত করে তুলবেন। মূলত সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফার ময়দানে অবস্থান করাই হলো হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা।
৪ বর্গমাইল আয়তনের বিশাল সমতল আরাফার ময়দানের দক্ষিণে মক্কা হাদা তায়েফ রিং রোড, উত্তরে সাদ পাহাড়। সেখান থেকে আরাফাত সীমান্ত পশ্চিমে আরও প্রায় পৌনে ১ মাইল বিস্তৃত।
মুসলমানরা পবিত্র এই ভূমিতে আজ সুবিধাজনক জায়গায় অবস্থান করে ইবাদত করবেন। শুনবেন হজের খুতবা। জোহর ও আসরের নামাজ পড়বেন। আরাফাত ময়দানের মসজিদে নামিরায় জোহরের নামাজের আগে খুতবা পাঠ করবেন গ্র্যান্ড ইমাম।
সূর্যাস্ত পর্যন্ত তারা আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করে আল্লাহ তায়ালার জিকির-আজকার ইবাদতে দোয়ায় মশগুল থাকবেন। মুজদালিফার উদ্দেশে আরাফার ময়দান ত্যাগ করবেন এবং মুজদালিফায় গিয়ে মাগরিব ও এশার নামাজ এশার ওয়াক্তে একত্রে পড়বেন এবং রাতে অবস্থান করবেন। মিনায় জামারাতে নিক্ষেপ করার জন্য ৭০টি কঙ্কর এখান থেকে সংগ্রহ করবেন।
মুজদালিফায় ফজরের নামাজ পড়ে মিনার উদ্দেশে রওনা হবেন। ১০ জিলহজ মিনায় পৌঁছার পর হাজিদের পর্যায়ক্রমে চারটি কাজ সম্পন্ন করতে হয়। প্রথমে মিনাকে ডান দিকে রেখে হাজিরা দাঁড়িয়ে শয়তানকে (জামারা) পাথর নিক্ষেপ করবেন। দ্বিতীয় কাজ আল্লাহর উদ্দেশে পশু কোরবানি করা। অনেকেই মিনায় না পারলে মক্কায় ফিরে গিয়ে পশু কোরবানি দেন। তৃতীয় পর্বে মাথা ন্যাড়া করা। চতুর্থ কাজ তাওয়াফে জিয়ারত।
প্রথম দিন মিনায় পৌঁছে বড় শয়তানকে সাতটি কঙ্কর নিক্ষেপ, মাথা মুণ্ডন ও কোরবানি দিয়ে হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে মেতে উঠবেন ঈদের আনন্দে।
জিলহজের ১১ তারিখ মিনায় রাতযাপন করে দুপুরের পর থেকে সূর্যাস্তের আগমুহূর্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে হাজিরা বড়, মধ্যম ও ছোট শয়তানের ওপর সাতটি করে পাথর নিক্ষেপ করবেন। আর এ কাজটি করা সুন্নত। পরদিন ১২ জিলহজ মিনায় অবস্থান করে পুনরায় একইভাবে হাজিরা তিনটি শয়তানের ওপর পাথর নিক্ষেপ করবেন। শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করা শেষ হলে অনেকে সূর্যাস্তের আগেই মিনা ছেড়ে মক্কায় চলে যাবেন। আর মক্কায় পৌঁছার পর হাজিদের একটি কাজ অবশিষ্ট থাকে। সেটি হচ্ছে কাবা শরিফ তাওয়াফ করা। একে বলে বিদায়ি তাওয়াফ। স্থানীয়রা ছাড়া বিদায়ি তাওয়াফ অর্থাৎ কাবা শরিফে পুনরায় সাতবার চক্কর দেওয়ার মাধ্যমে হাজিরা সম্পন্ন করবেন পবিত্র হজব্রত পালন।
সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চলতি বছর করোনা মহামারির নিষেধাজ্ঞা পুরোপুরি তুলে নেওয়ার পর বেড়েছে রেকর্ডসংখ্যক হজযাত্রী। চলতি বছর ২৬ লাখের বেশি মুসল্লি হজ করতে গেছেন দেশটিতে।