নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোর সদরের লেবুতলা গ্রামের কিশোর রুবেল হত্যার দীর্ঘ ১৮ বছর পর মামলার রায়ে ফুফাতো ভাই রফিককে আমৃত্যু কারাদণ্ড, চাচা ও চাচাতো ভাইকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। রোববার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৩য় আদালতের বিচারক তাজুল ইসলাম এই আদেশ দিয়েছেন।
দ-প্রাপ্তরা হলো লেবুতলা গ্রামের আব্দুল লতিফ ও তার ছেলে লিটন হোসেন এবং শর্শুনাদাহ গ্রামের মকবুল বিশ্বাসের ছেলে ভাগ্নে রফিকুল ইসলাম রফিক। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে অতিরিক্তি পিপি অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, লেবুতলা গ্রামের আব্দুল মাজেদের পরিবারের সাথে দীর্ঘদিন ধরে পৈত্রিক জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল আসামি আব্দুল লতিফের পরিবারের সাথে। এরই ধারাবাহিকতায় আব্দুল লতিফ ও তার সহযোগীরা প্রায় আব্দুল মাজেদের পরিবারের সদস্যদের মারপিট ও বাড়ি থেকে উচ্ছেদের হুমকি দিয়ে আসছিল। ২০০৫ সালে ১৬ জুন রাত সাড়ে ৮টার দিকে আব্দুল মাজেদের ছোট ছেলে রুবেল (১২) ঘর থেকে বের হয় বাথরুমে যাওয়ার জন্য। এরপর রুবেল ঘরে ফিরে না আসায় বাড়ির লোকজন সারারাত ধরে খোঁজাখুঁজি করে তাকে উদ্ধারে ব্যর্থ হন। পরদিন সকালে পাশের জঙ্গলের একটি গর্তের ভিতর থেকে রুবেলের লাশ উদ্ধার করে স্থানীয়রা। এ ঘটনায় নিহত রুবেলের পিতা আব্দুল মাজেদ তার ভাই-ভাইপো ও ভাগ্নেকে আসামি করে কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা করেন।
এ মামলার তদন্ত শেষে ঘটনার সাথে জড়িত থাকায় এজাহারনামীয় তিনজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মিজানুল হক। হত্যার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ না পাওয়ায় লতিফের স্ত্রী হালিমা ও একই গ্রামের বাচ্চু বিশ্বাসকে অব্যাহতির আবেদন করা হয় চার্জশিটে। এ মামলার দীর্ঘ সাক্ষী গ্রহণ শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক রফিককে আমৃত্যু কারাদণ্ড, আব্দুল লতিফ এবং তার ছেলে লিটনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন। একইসাথে দণ্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেককে ২৫ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছর করে কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে রায়ে। দ-প্রাপ্ত সকলে কারাগারে আটক আছে।