নিজস্ব প্রতিবেদক
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক নার্গিস বেগম বলেছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার আমলে দেশের নারী সমাজ নির্যাতন নিপীড়নের হাত থেকে রেহাই পায়নি। শত প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলা করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে মহিলা দলের নেত্রীরা রাজপথ ছেড়ে যায়নি। সীমান্তের কাঁটা তারের বেড়ায় যখন ফেলানির লাশ ঝুলছিল তখনো অনেক ঝুঁকি নিয়ে প্রতিবাদ করেছিল। সে কারণে শেখ হাসিনার অনুগত পুলিশ বাহিনীর লাঠির আঘাত সহ্য করতে হয়েছে। আজও তারা সে ব্যাথা বহন করে বেড়ায়।
জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের ৪৭ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে যশোর জেলা শাখা আয়োজিত নারী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। শহরের চৌরাস্তা মোড়ে অনুষ্ঠিত সমাবেশে অধ্যাপক নার্গিস বেগম মহিলা দল প্রতিষ্ঠায় যে মহীয়সী নারীরা অবদান রাখেন তাদেরকে গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। তিনি বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ১৯৭৮ সালের ১৬ মে বলেছিলেন দেশের অর্ধেক নারী এদেরকে পশ্চাৎ পদ রেখে জাতির উন্নতি আশা করতে পারি না। তিনি নারী পুরুষ সকলকে দেশ গঠনের কাজে নিয়োজিত করেন। নারীর যথাযথ মর্যদা দেওয়ার পাশাপাশি তাদেরকে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে কাজ করেছিলেন। তিনি নারীদের যথাযথ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উৎপাদনমুখী কাজের সাথে সম্পৃক্ত করেছিলেন। নারী আজ সকল কর্মক্ষেত্রে তার যোগ্যতার প্রমাণ দিচ্ছে। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান যেটির দ্বার উন্মুক্ত করেছিলেন। পরবর্তীতে বেগম খালেদা জিয়া সেটিকে সম্প্রসারিত করেছিলেন। সে সুযোগ মহিলারা পেয়েছে, আগামী প্রজন্ম বেশি করে সে সুযোগ পেয়ে সমাজ থেকে বৈষম্যকে দুর করে সমান মর্যাদায় নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পারে। তার জন্য মহিলা দলকে কাজ করতে হবে।
সমাবেশে প্রধান বক্তৃতার বক্তৃতায় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভারপ্রাাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ)অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, শহীদ জিয়াউর রহমান নারীদের নিশ্চিত ও নিরাপদ কর্মসংস্থানের পাশাপাশি নারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করেছিলেন। তিনি আইন করে নারীদের যৌতুকের অভিশাপ থেকে রক্ষা করেছিলেন। জাতীয় মহিলা সংস্থা এবং মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়নের সূচনা করেছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া আইন করে নারীদের এসিড সন্ত্রাসীদের হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন। তিনি দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত মেয়ে অবৈতনিক শিক্ষার ব্যবস্থা করেছিলেন। নারীদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে নারীদের জন্য ৫০ শতাংশ কোটা রেখেছিলেন। শিক্ষার বিনিময়ে খাদ্য এমন যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে আজ নারীরা শিক্ষা ক্ষেত্রে পুরুষের চেয়ে এগিয়ে গেছে। শহীদ জিয়াউর রহমান এবং বেগম খালেদা জিয়ার যোগ্য উত্তরসূরী তারেক রহমান আগামী দিনে জনগণের ভোটের দেশ পরিচালনার সুযোগ পেলে তিনিও নারীদের উন্নয়নের কাজ করবেন। তিনি নারীদের জন্য ফ্যামিলি কার্ড চালু করবেন, যে কার্ডের টাকা দিয়ে নারীরা সংসারের ব্যয় নির্বাহ করতে পারবেন।
সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাড. সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু ও সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেলা মহিলা দলের সভাপতি রাশিদা রহমান। নারী সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা ফেরদৌসী বেগম, সদর উপজেলা মহিলা দলের সভাপতি হাসিনা ইউসুফ, নগর মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সাবিহা সুলতানা, জেলা মহিলা দলের যুগ্ম-সম্পাদক রাফাত আরা ডলি, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ারা পারভীন আনু, মহিলা দল নেত্রী নুরুন্নাহার, আলেয়া বেগম, পারুল বেগম প্রমুখ।
সমাবেশ পরিচালনা করেন নগর মহিলা দলের সভাপতি শামসুন্নাহার পান্না এবং সদর উপজেলা মহিলা দলের সিনিয়র সহসভাপতি সেলিনা পারভীন শেলী।