দেলোয়ার কবীর, ঝিনাইদহ: ধান রোপণের মৌসুমের শুরুতে প্রচণ্ড খরার কারণে এবং সেচের তীব্র সংকটে ঝিনাইদহের আমনচাষিরা সমস্যা ভোগ করলেও পরবর্তীতে দফায় দফায় বৃষ্টির ফলে দূর হয়েছে সে সমস্যা। সব বাধা পেরিয়ে পাকা ধান ঘরে তুলতে শুরু করেছেন কৃষকরা।
পাকা ধানের খেতের পাশে গেলেই ভরে যাচ্ছে চাষির মন, দুলে উঠছে প্রাণ। তবে এতেও শান্তি নেই তাদের মনে। বাজারে ক্রমাগত চালের দাম বাড়ার ফলে আমনচাষিরা ভেবেছিলেন তারা ধানের দাম ভালোই পাবেন। কিন্তু তা হবার নয়। সপ্তাহ দুয়েক আগে ধানের দাম ভালো থাকলেও তা পড়তির দিকে। ফলে দাম পাচ্ছেন না আমনচাষি।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বিষয়খালি বাজার এলাকার চাষি মতলেব হোসেন জানালেন, ক্ষেতের অধিকাংশ ধানই পেকে গেছে। সার-কীটনাশকের বেড়েছে দাম, সেচের পানি আর ধানকাটা শ্রমিকের মজুরির দামে এবার তাদের মুখ অনেকটাই বিবর্ণ।
একই রকম কথা বললেন শৈলকুপা উপজেলার ভাটইবাজারের ধানচাষি মহিদুল ইসলাম ও শ্রীধর বিশ^াস। তারা জানালেন, প্রতিবিঘায় ধানচাষে খরচ হয় ১৫ থেকে ১৭ হাজার টাকা আর তাতে উৎপাদিত ২০ মণ ধান বিক্রি করে সর্বোচ্চ ২৪ হাজার টাকার মত আসে। এছাড়াও কৃষকের নিজের ও পরিবারের সদস্যদের পরিশ্রম ও মজুরি তো হিসাবেই আসে না।
চাষিরা জানালেন, দু’সপ্তাহ আগেও প্রতিমণ ধান সাড়ে ১১শ টাকা থেকে ১১৭৫ টাকায় বিক্রি হলেও তা কমে ১ হাজার ৫০ টাকা থেকে ১১শ’ টাকায় ঠেকেছে। অথচ বাজারে চালের দাম পড়েনি। গতবারের চেয়ে এবার সবরকম কৃষি উপকরণের দাম ও কৃষি শ্রমিকের মজুরি বাড়লেও উল্টোভাবে কমছে ধানের দাম। এতে হতাশ তার মত সব চাষি।
ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্র মতে, এবার জেলায় ১ লক্ষ ৪ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের আবাদ করে ৩ লক্ষ ৪৩ হাজার ২৯০ টন আমন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হলেও ১ লক্ষ ৪ হাজার ৩৩৩ হেক্টরে আবাদ হয়েছে। হেক্টরপ্রতি চালের উৎপাদন ধরা হয়েছে ৩.২৮ টন। ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের খামারবাড়ির উপপরিচালক আসগর আলি জানান, উন্নত কৃষি প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে চাষিরা বেশি লাভের দিকে ক্রমশ এগিয়ে যাচ্ছে।